সাইফুল আজম: ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি বিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন যে বাংলাদেশি

খবর:

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বিরোধ চলছে কয়েক দশক ধরে। গোটা আরব মিলে ইসরাইলের সঙ্গে এ পর্যন্ত ৩ বার যুদ্ধ হয়েছে। তৃতীয় আরব ইসরাইল যুদ্ধ হয় ১৯৬৭ সালে। তবে এই যুদ্ধে বীরত্ব দেখায় এক বাংলাদেশী। ইসরাইলের বিমান ভূপাতিত করে রেকর্ড করেন তিনি। এমনকি ইসরাইলের ইতিহাসে কোন একক ব্যক্তির হাতে সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ বিমান ধ্বংসের রেকর্ড এই বাংলাদেশীর। বাংলাদেশের এই আকাশ যোদ্ধার নাম সাইফুল আজম সুজা। পৃথিবীর মাত্র ২২ জন “লিভিং ইগল” খেতাব পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি একজন। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রথম ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই সাইফুল আজম একটি অনন্য রেকর্ড তৈরি করেন। ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ভূপাতিত করেছেন সর্বোচ্চ তিনটি ইসরায়েলি বিমান।  (https://www.youtube.com/watch?v=nG34intSig4

মন্তব্য:

মুসলিম ফাইটার পাইলট সাইফুল আজমের এই সাহসী গল্প প্রমাণ করেছে যে, মুসলিম সামরিক বাহিনী শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শারীয়াহ্‌ বাধ্যবাধকতাকে কখনোই সে যুদ্ধের সম্ভাব্য পরিণতি/ফলাফলের (Consequences) দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে না। বরং মুসলিম সেনাবাহিনী দখলকৃত ইসলামী ভূমিকে শত্রুদের কবল থেকে মুক্ত করাকে সর্বদাই শরীয়াহ বাধ্যবাধকতা (ওয়াজিব) হিসেবে বিবেচনা করেছে। যার ফলে ইসলামী উম্মাহ্‌’র এই অকুতোভয় ও সাহসী বীর সন্তান সাইফুল আজম ব্যাকডেটেড সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে উন্নতমানের সামরিক সরঞ্জামে সজ্জিত শত্রুদেরকে ধরাশায়ী এবং পরাস্ত করার রোল মডেল হয়ে উঠেছিলেন। সে সময়ে ইসরাইলি সুপারসনিকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো সমকক্ষ বিমান আরবদের না থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধের সম্ভাব্য ফলাফল/পরিণতির দিকে চিন্তা না করে ইসরাইলিদের ঠেকাতে শুধুমাত্র সাধারণ মানের “হকার হান্টার’ জঙ্গি বিমান দিয়ে ক্ষিপ্রগতির দুটি ইসরাইলি সুপারসনিক ঘায়েল করেন সাইফুল আজম। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের প্রথম ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই সাইফুল আজম সর্বোচ্চ তিনটি ইসরাইলি বিমান ভূপাতিত করার অনন্য রেকর্ড তৈরি করেন।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সাইফুল আজমের মতো অগণিত সাহসী যোদ্ধারা এখনও মুসলিম সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান থাকলেও মুসলিম ভূখন্ডের দালাল শাসকরা ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে সামরিকভাবে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাব্য ফলাফল, সহকর্মী কিংবা উচ্চপদস্থ ও অধীনস্ত অফিসারদের প্রতিক্রিয়া এবং এই পদক্ষেপের সফলতার অনিশ্চয়তার ব্যাপারে তাদেরকে প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। অথচ মুসলিম ভুমিতে কাফিরদের আক্রমণ ও আগ্রাসনের মুখে শারীয়াহ্‌’র স্পষ্ট ফরজ (ওয়াজিব) বিধান হল উপযুক্ত সামরিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে বিতাড়িত করা। এবং এক্ষেত্রে এইকাজে যাদের ‘সক্ষমতা’ আছে তাদের উপর তথা সামরিক বাহিনীর উপর মূল দায়িত্ব বর্তায়। কিন্তু বর্তমান দালাল শাসকগোষ্ঠী তাদেরকে জাতিসংঘের অধীনে পশ্চিমা কাফিরদের কুফর যুদ্ধে অংশ নিতে ও জীবন দিতে প্রেরণ করছে আর মুসলিমদের সাহায্যের বেলায় তাদেরকে ব্যারাকে বন্দি করে রেখেছে। তাই এরাই সামরিক বাহিনীর শারীয়াহ্‌ হুকুমের দায়িত্ব পালনের পথে প্রধান বাধা।

তাই সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের মধ্যে যারা মসজিদুল আকসা ও ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিকে অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের কবল মুক্ত করার চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও ব্যাকুল হয়ে আছেন তাদেরকে অবশ্যই অনতিবিলম্বে দালাল শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুসলিম জাহানের খলিফার নেতৃত্বে আসতে হবে। যিনি দ্রুততার সহিত আমাদের এই সুসংগঠিত ও প্রশিক্ষিত বাহিনীকে অভিযানে পাঠাবেন যাতে অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রটি দুনিয়া থেকে স্থায়ীভাবে বিলিন হয় এবং মাসজিদুল আক্বসা ও ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি মুক্ত হয়। আমাদের সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের তাদের পূর্বসুরী সাইফুল আজম, সালাউদ্দিন আইয়্যুবী, সাইফুদ্দিন কুতুজ এর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে। দখলদার ইহুদী সত্ত্বার তথাকথিত অজেয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কল্পকথা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ইতিপূর্বে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার বীর সেনানায়ক সালাহউদ্দিন আইয়ুবিও জেরুজালেম অভিযানের সময় এর ফলাফলের চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হননি যাকে ক্রুসেডাররা সতর্ক করে বলেছিল, “জেরুজালেমের দিকে অগ্রসর হলে আপনার একটি চোখ নষ্ট হতে পারে। উত্তরে সালাহউদ্দিন বললেন: “আমি আল্লাহ্‌’র নামে শপথ করে বলছি, আমি জেরুজালেমের দিকে অগ্রসর হবোই, এমনকি যদি আমাকে জেরুজালেমে অন্ধ হয়েও প্রবেশ করতে হয়!” এমনকি যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, “আপনি মিশর, সিরিয়া এবং অন্যান্য ভূ-খণ্ডের সুলতান তবুও আমরা আপনাকে হাসতে দেখি না, তিনি উত্তর দিয়েছিলেন: যখন বায়তুল মাকদিস, জেরুজালেম ক্রুসেডারদের হাতে বন্দি তখন কীভাবে আমি হাসতে পারি?” 

–    সিফাত নেওয়াজ 

ইসরায়েল কি অজেয়?

Leave a Reply