হাসিনার ভারত সফর, বাংলাদেশের ভারত দাসত্বের সেকাল-একাল

কয়েকদফা স্থগিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশেষে এপ্রিলে ভারত সফর করতে সম্মত হয়েছেন। এ সফরটি নিয়ে অনেক দিন ধরেই নানা জল্পনা কল্পনা ভাসছে। তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি,গংগা ব্যারেজ এগুলোই খুব বেশি আলোচনায় এসেছে কিন্তু এখন বুঝা যাচ্ছে এগুলো স্রেফ হিমবাহের শৃঙ্গ।

পানির নিচে থাকা গুরুত্বপূর্ণ অংশটি আড়ালেই থেকে গিয়েছিল, আর সেটি হল বাংলাদেশকে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তির দিকে নিয়ে যেতে চাইছে ভারত যার মেয়াদ হবে ২৫ বছর।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘২৫ বছরের চুক্তি’ টার্মটি নতুন কিছু নয়, বরং ১৯৭৪ সালের ‘ইন্দিরা-মুজীব’র চুক্তির সাথেও বাংলাদেশের জনগণ পরিচিত। ২৫ বছরের দাসত্বের চুক্তি হলেও আজ অবধি বাংলাদেশ ভারতের দাসত্বের ঘানি টেনে যাচ্ছে। আজ পর্যন্ত মরণবাধ ফারাক্কা বাংলাদেশের একাংশ মরুভূমি করে রেখেছে। স্থল সীমান্ত চুক্তিতে ভারতই বাংলাদেশ থেকে বেশি সুবিধা ভোগ করেছে। সীমান্তে হত্যাকান্ড চলছে নির্বিচারে। মাদকদ্রব্য চোরাচালান, পতিতাবৃত্তি মানবপাচার ইত্যাদিতে ভারতের নিকট বাংলাদেশ যেন দাসত্বমনা ধারণ করছে।

অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে রাজনৈতিক গোষ্ঠী ভারতের নিকট সমর্পন করেছে। পিলখানা হত্যাকান্ডে ভারত আমেরিকার সরাসরি সংযুক্ত চক্রান্ত বাস্তবায়নে এদেশের আওয়ামী বি.এন.পি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ভূমিকা অপরিসীম। নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয় যেমন, বিদ্যুৎ, সার, ভোগ্যপণ্য দ্রব্য ইত্যাদিতে ভারতের উপরই বাংলাদেশকে নির্ভরশীল করে তোলা হচ্ছে। 

বাংলাদেশে আজকে ভারতেরই সংস্কৃতি পালিত হয়। তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক চেতনার আড়ালে মূলত মুশরিকদের নস্ট সংস্কৃতি বাংলাদেশের মুসলিম তরুন সমাজের মাঝে অনুপ্রবেশ ঘটানো হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে আমাদের তরুনেরা নিজস্ব পরিচয় হারিয়ে অবিশ্বাসী কাফের সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিকে অনুসরণ করছে। ভারতের অনুকরণে হোলী খেলার নামে আজ বাংলাদেশের তরুনীরাও নির্যাতিত হয়।

বাংলাদেশের জনগন ইসলামী আকীদায় বিশ্বাসী। এই আকীদার ইতিহাস কখনো মুশরকদের নিকট সমর্পনের সাক্ষ্য দেয় না। ১৪০০শ বছরের ইসলামী শাসন ব্যবস্থা খিলাফতের শাসনে আমরা কোন মুশরিক রাষ্ট্র কর্তৃক উপরে বর্ণিত জুলুমের ছিটেফোঁটাও দেখি না। এটা এই কারণেই যে, খিলাফত পুঁজিবাদী গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মত নয়। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় দূর্নীতি গ্রস্থ শাসক গোষ্ঠী একে অপরকে ভারত-আমেরিকার দালাল বলে আক্ষায়িত করে, অথচ মানবরচিত শাসনব্যবস্থার বাস্তবায়ন ঘটিয়ে উভয়ে (আওয়ামী, বি.এন.পি) ভারত আমেরিকার দালালী করে চলেছে।

ইসলামী রাষ্ট্র খিলাফত আল্লাহ মনোনীত জীবনব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়। রাসূল (স) যখন মদীনায় প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেন তখন থেকে খিলাফত ধ্বংসের আগ অবধি মুসলিমরা পৃথিবীর বুকে শুধুমাত্র আল্লাহ’র ই দাসত্ব করেছে, কিন্তু যখন খিলাফত ধ্বংস হল মুসলিমরা ইসলাম ছেড়ে কুফর চিন্তাকে আকড়ে ধরল তখন থেকেই মুসলিমদের অধঃপতন শুরু হল। তখন থেকেই মুসলিম উম্মাহ’র উপর কুফর শক্তি প্রভাব নিতে শুরু করে।

আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) বলেন,

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ

“যে আমার স্বরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব”

ভারত আমেরিকার প্রভাব দূরিকরণে বাংলাদেশের মুসলিম উম্মাহ’র নিকট একমাত্র সমাধান খিলাফত শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। যা বাংলাদেশকে ভারত আমেরিকার দাসত্ব থেকে মুক্ত করবে এবং মুসলিমদের হারিয়ে যাওয়া সোনালী ইতিহাস ফিরিয়ে দিবে, এটাই রাসূলের(সা) ভবিষ্যৎবাণী

“এরপর আবার আসবে নবুয়তের আদলে খিলাফত” (মুসনাদে আহমদ)

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply