এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাবার পূর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব শরীয়ার হুকুম সমূহ বাস্তবায়নের দায়িত্ব কাদের উপর বর্তায়। উম্মাহর মধ্যে রয়েছে ব্যক্তি, দল ও শাসকবৃন্দ। প্রত্যেক অংশের উপরে রয়েছে শরীয়াহ প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব। তারা যে বিষয়ে নিবেদিত সে বিষয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে তাদেরকে উপদেশ, জবাবদিহিতা এবং সংশোধনের আওতায় আনতে হবে। যদি এ বিষয়টি বুঝবার বাস্তবতা আমাদের কাছে পরিষ্কার না হয় তাহলে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের ফরয দায়িত্ব পালনে জটিলতার সৃষ্টি হবে। একারণে আমরা নীচের কথাগুলো বলতে পারি।
শরীয়ার কিছু কিছু দায়িত্ব কেবলমাত্র খলিফার উপরে বর্তায়- এছাড়া অন্য কারও উপর নয়। আরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে যা ব্যক্তির জন্য সুনির্দিষ্ট এবং ব্যক্তি পালনে অপারগ হলে খলিফা সেগুলো পালন করবে। আবার খলিফার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব রয়েছে যা ক্ষেত্র বিশেষে ব্যক্তি সেগুলো পালন করতে পারে। দলের জন্য রয়েছে কিছু নিয়মনীতি।
ব্যক্তির উপর অর্পিত দায়িত্ব সমূহের মধ্যে রয়েছে: নামাজ পড়া, সাওম পালন করা, হজ্জ পালন করা, যাকাত প্রদান করা এবং নিষিদ্ধ জিনিষ থেকে বিরত থাকা, যেমন: মদ্যপান করা, জুয়া খেলা, সুদ, চুরি, হত্যা, ব্যভিচার, ধর্মত্যাগ, মিথ্যা, প্রতারণা, গীবত করা ইত্যাদি। মুসলিমগন দারুল কুফর ও দারুল ইসলাম বা ইসলামী এবং কাফের রাষ্ট্র যেখানেই বসবাস করুক না কেন তাদের এগুলো মানতেই হবে। এক্ষেত্রে একজন মুসলিম কেবলমাত্র মক্কা বা কেবলমাত্র মদীনাতে রাসূলুল্লাহ (সা) ও তার সাহাবীগন কী কাজ করেছে সে ব্যাপারে চিন্তা করবে না। ইবাদত (উপাসনা), মুয়ামালাত (লেনদেন), মা’তুমাত (খাদ্যদ্রব্য), মালবুসাত (পোষাকপরিচ্ছদ), আখলাক (চরিত্র) এবং অন্যান্য ইসলামী বিশ্বাসসমূহ-এ সব সর্ম্পকিত শরীয়া নীতিমালা ব্যক্তিপর্যায়ের। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার পরিবার সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করা হবে-যেখানে তিনি একজন ওয়ালী (অভিভাবক)। দারুল কুফরের শাসক যদি কোন মুসলিমকে তার ব্যক্তি পর্যায়ের শরীয় হুকুম পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে তাহলে রায় হচ্ছে তাকে অবশ্যই অন্য কোন দারুল কুফর বা দারুল ইসলামে হিজরত করতে হবে। এ সর্ম্পকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,
‘যারা নিজের অনিষ্ট করে, ফেরেশতারা তাদের প্রাণ হরণ করে বলে, তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা বলে: এ ভূখন্ডে আমরা অসহায় ছিলাম। ফেরেশতারা বলে: আল্লাহর পৃথিবী কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা দেশত্যাগ করে সেখানে চলে যেতে? অতএব, এদের বাসস্থান হল জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত মন্দ স্থান। কিন্তূ পুরুষ, নারী ও শিশুদের মধ্যে যারা অসহায়, তারা কোন উপায় করতে পারে না এবং পথও জানে না।’ (সূরা নিসা: ৯৭-৯৮)
একজন ব্যক্তির জন্য দারুল কুফর থেকে দারুল ইসলামে হিজরত করা মুস্তাহাব (প্রাধিকারযোগ্য) হবে যদিও বা সে শরীয়া দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয় অন্যথায় সে দারুল কুফরকে দারুল ইসলামে পরিণত করবার জন্য সেখানে থাকবে। এটা সর্বজনবিদিত যে, দারুল ইসলাম হল সে রাষ্ট্র যা ইসলাম দিয়ে শাসিত হয় ও এর নিরাপত্তা মুসলিমদের দ্বারা সুনিশ্চিত করা হয়েছে।
ব্যক্তির উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে খলিফা সে দায়িত্ব পালন করবে এমন দায়িত্বের উদাহরণ হল: একজনের ভরণপোষণ ও দেখভালের দায়িত্ব যখন অপর আরেকজন ব্যক্তির উপর অর্পিত হয় এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি অপারগ হন তখন খলিফা সে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কিংবা অধিবাসীরা অপারগ হলে গ্রামে মসজিদ নির্মাণ করা বা শহরে বসতি গড়ে দেয়া….ইত্যাদি।
কিছু দায়িত্ব রয়েছে যা কেবলমাত্র আমীর বা খলিফার উপর বর্তায় এবং এর জন্য ব্যক্তি কোনভাবেই দায়িত্বশীল নয়। এগুলো হল হুদুদ বাস্তবায়ন করা, জিহাদ ঘোষণা করা, চুক্তি সম্পাদন করা বা আইন গ্রহণ করা এবং অন্যান্য বাধ্যতামূলক কাজসমূহ সম্পাদন করা। উল্লেখিত শরীয়া কর্তব্যসমূহ ও আর কিছু বিষয়ে শাসকগন দায়িত্বশীল।
খলিফার উপর অর্পিত কিছু দায়িত্ব ব্যক্তিও পালন করতে পারেন; তা কিছু কিছু ক্ষেত্রে, যেমন: জিহাদ। যদি কাফেরদের দ্বারা মুসলিমগন অকস্মাৎ আক্রান্ত হয়, তখন খলিফার অনুমতির অপেক্ষা না করে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়া মুসলিমদের জন্য ফরয। এমনও হতে পারে সেসময় তাদের কোন খলিফা নেই। শাসক যদি ফাযীরও হন এবং লোকবল সংখ্যায় কম থাকে তারপরেও জিহাদে অংশগ্রহণ করতে হবে। যা হোক মূলকথা হল, মুসলিমরা সর্বশেষ এ বিষয়টি মেনে নেবার সুযোগ নেই, অর্থাৎ খিলাফত থাকবে না এবং তারা ফাযীর নেতার অধীনে থাকবে।
দলের উপর অর্পিত শরীয়া দায়িত্ব হল খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা, শাসকদের জবাবদিহীতার আওতায় নিয়ে আসা, তাদের সত্যবিমুখতা থেকে ফিরিয়ে হক্বের পথে নিয়ে আসা ইত্যাদি। কোন ইসলামী দল, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর কর্তব্য এর আওতায় পড়ে।
কাকে কী ধরনের শরীয়া দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে তা পরিষ্কার করা জরুরী। কেননা এ জ্ঞান সর্ম্পকে অজ্ঞতা ও অবহেলা ব্যক্তি বা একটি আন্দোলনকে শরীয়া বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্ধভাবে অনুকরণ করতে প্ররোচিত করতে পারে। এভাবে মুসলিমগন সঠিক দ্বীনের সঠক জ্ঞান ও এর কার্যকর প্রয়োগের ব্যাপারে বিভ্রান্ত হতে পারে। ফলস্বরুপ, মুসলিমরা দায়িত্বের বাধ্যবাধকতাকে অবহেলা করবে এবং মানদুবাত (অনুমোদনযোগ্য কর্মগুলো) নিজের মত করে করবে। কর্তব্যের বিভিন্ন ভাগসমূহ সর্ম্পকে না জানবার কারণে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব ও দলের সদস্য হিসেবে অর্পিত শরীয়া দায়িত্বের বদলে দলটি ব্যক্তিপর্যায়ের দায়িত্ব নিয়ে অধিকতর সচেতন হবে। ইসলামী পন্ডিতগন তখন লোকদের সাথে ব্যক্তিপর্যায়ের শরীয়া দায়িত্ব নিয়েই বেশী আলোচনা করবে, যেমন: সালাত, যাকাত, রোজা অথবা গীবত থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক বাধ্যবাধকতা নিয়ে তারা আলোচনা করবে না, যেমন: ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তিনি একজন ধার্মিক বা ভৎসনাকারী ব্যক্তি হতে পারেন। তবে তিনি এমন কোন রাজনৈতিক প্রজ্ঞাসম্পন্ন ইসলামী পন্ডিত হবে না যিনি উম্মাহের সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন এবং এ ব্যাপারে সমাধানে উপনীত হয়েছেন ও এর জন্য কাজে নেমে পড়েছেন।
প্রত্যেক ভাগের জন্য নির্ধারিত শরীয়া দায়িত্ব অবশ্যই পালিত হতে হবে। দায়িত্বে অবহেলা দেখা দিলে অবশ্যই সৎ কাজের আদেশ দিতে হবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করতে হবে। যে দায়িত্ব কাউকে দেয়া হয়নি তার জন্য সে জবাবদিহীতার সম্মুখীনও হবে না। সে কারণে শরীয়ার বাস্তবায়নও কেবলমাত্র একটি অংশের উপর বর্তায় না। পুরো উম্মাহকে পূর্ণাঙ্গ শরীয়াহ বাস্তবায়নের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। ব্যক্তি ব্যক্তিপর্যায়ের, দল সামষ্টিক ও খলিফা তার উপর অর্পিত শরীয়া দায়িত্ব যখন সুসম্পন্ন করবে তখন ইসলামের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হবে।
এখানে আমরা একটি বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই যে, প্রত্যেকটি মুসলিমকে পূর্ণাঙ্গ ও সার্বজনীনভাবে ইসলামের উপর আস্থা স্থাপন করতে হবে। তবে সে তার প্রয়োজন অনুসারে প্রত্যেকটি বিষয় বিস্তারিতভাবে গ্রহণ করবে। ব্যক্তি তার প্রয়োজন অনুসারে এবং দলের সদস্যগন তার কাজের জন্য সামষ্টিকভাবে। এ দায়িত্বসমূহের কোনটির ব্যাপারে তার অবহেলার জন্য সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে জবাবদিহি করবে। তাকে ব্যক্তিগতভাবে শরীয়া দায়িত্ব পালন করতে হবে। একই কথা খলিফার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থাৎ তিনি নিজে সালাত আদায় করেন, সাওম ও হজ্জ পালন করেন, পিতামাতার দেখভাল করেন এবং সুদ ও যিনা থেকে নিবৃত থাকেন। শরীয়া খলিফা হিসেবে তার উপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন তাও তিনি পালন করেন। অর্থাৎ তিনি আইন পাশ করবেন, জিহাদের ঘোষণা দেবেন, মুসলিমদের ভূমি রক্ষা করবেন, আল্লাহর কালাম দিয়ে শাসন করবেন ও হুদুদ বাস্তবায়ন করবেন। এ ব্যাপারে যে কোন অবহেলার জন্য তিনি আখেরাতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে জবাবদিহীতার সম্মুখীন হবেন এবং দুনিয়াতে উম্মাহ তাকে জবাবদিহি করবে।
এই বাস্তবতা মুসলিমদের কাছে পরিষ্কার করতে হবে যাতে তারা বুঝতে পারে কখন মুহাসাবা (জবাবদিহিতা) করতে হয়। এতে করে ব্যক্তি, দল ও খলিফা এমন কোন কিছুর জন্য জবাবদিহিতা সম্মুখীন হবে না যা তার জন্য নয়।
শরীয়া প্রত্যেক মুসলিমকে তার সক্ষমতা ও জ্ঞান অনুসারে সৎ কাজের আদেশ প্রদান ও অসৎ কাজের নিষেধের ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করেছে। মুসলিমকে ব্যক্তি, দল ও শাসক হিসেবে এসব শরীয়া বাধ্যবাধকতা যে কোন পরিস্থিতিতে সম্পন্ন করবার জন্য শরীয়া নির্দেশ প্রদান করেছে। তখন ইসলামী রাষ্ট্র থাকুক বা না থাকুক, শাসক ইসলাম দিয়ে অথবা কুফর দিয়ে শাসন করুন না কেন কিংবা শাসকগন ইসলামি আইনের সঠিক প্রয়োগ করুক বা অপপ্রয়োগ করুক না কেন। সৎ কাজের আদেশ প্রদান ও অসৎ কাজের নিষেধ রাসূলুল্লাহ (সা), সাহাবীগন, তাবেয়ীন ও তাদের অনুসারীদের সময়ে বলবৎ ছিল। ক্বিয়ামতের আগ পর্যন্ত এটা বলবৎ থাকবে।
নিম্নোাক্ত ব্যাখ্যানুযায়ী, যদি রাষ্ট্রে, ব্যক্তি, দলে এমন কিছু ঘটে যেখানে সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নির্দেশ দেবার বাধ্যবাধকতা দেখা দেয় তবে রাষ্ট্রকে, ব্যক্তিকে এবং দলকে অবশ্যই তা সম্পন্ন করতে হবে।
ব্যক্তি পর্যায়ে, মুসলিমদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে সব হুকুমগুলোর আদেশ করার এবং নিষেধাজ্ঞাসমূহ নিষেধ করার – যদি তাদের সামনে এমন কিছু ঘটে যা এ প্রয়োজনীয়তাকে নির্দেশ করে – বিষয়টি নিজেদের জ্ঞানানুযায়ী করবে। ফলে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান ফরযে আইন হয়ে যায় এবং না পালন করলে সে গোনাহগার হবে এবং এর জন্য কোন অজুহাত দাঁড় করাতে পারবে না। সেকারণে একজন মুসলিমকে তার প্রতিদিনকার জীবনে নিজের স্ত্রী, সন্তান, আত্বীয়স্বজন, প্রতিবেশী, খরিদ্দার, পরিচিত ব্যক্তি কিংবা যার সাথেই সাক্ষাৎ হোক না কেন প্রত্যেককেই নসীহা বা সদুপদেশ দিতে হবে যদি সে কোন শরীয়াগত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় বা যথার্থভাবে আনুগত্যশীল না হয়। এরূপ না হলে কী উপায় আছে, যেহেতু এমন হতে পারে যে কোন একটি পাপকার্য সংঘটিত হবার বিষয়ে হয়তো সে-ই কেবল জানে। যেমন, এই রকম পরিস্থিতি হতে পারে যখন অপরাধ সংঘটনের সময় সে ও অপরাধী ব্যক্তি ব্যতীত ঐ স্থানে আর কেউ ছিলনা। যদি সে মুসলিম দর্শক ঐ অপরাধীকে সে সময় সদুপদেশ প্রদান না করে, তাহলে সে অপরাধী হবে। কিন্তু এর জন্য অন্য কেউ পাপী হবে না, কারণ সে সময় তারা অপরাধের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না ও এ ব্যাপারে তারা জ্ঞাতও ছিলেন না। ঐ দর্শকের পরিমন্ডলে যত অপরাধ বা মুনকার সংঘটিত হবে, এর কোনটির জন্য তিনি ব্যতিরেকে আরও কেউ গোনাহগার হবেন না।
যখন একজন মুসলিম তার নিজের সাথে সংশ্লিষ্ট আল্লাহ নির্দেশিত হুকুমসমূহ মেনে চলবে অর্থাৎ তার সাথে সম্পৃক্ত সৎ কাজ বা মারুফ সম্পন্ন করবে ও মুনকার বা অসৎ কাজ বর্জন করবে, তখন সে অন্যদেরকে সে হুকুমসমূহ সর্ম্পকে জানাতে পারবে। যদি তিনি এসব হুকুম জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সাথে গ্রহণ করেন তাহলে তিনি সেভাবে অন্যদের কাছে বহন করতে পারবেন। তিনি যদি একজন মুত্তাকী (যিনি দলিলসহ মতামত প্রদান করেন) হিসেবে এসব গ্রহণ করেন, তখন তিনি সেরকম উচ্চমানসহকারে তা অন্যদের কাছে পৌঁছে দিবেন। আবার তিনি যদি ত্বাকলীদ বা অনুকরণ করে ’আম্মি (সাধারন ব্যক্তি) হিসেবে হুকুম গ্রহণ করেন তাহলে ’আম্মি (সাধারন ব্যক্তি) এর মতই তা বহন করবেন। যদি কোন ব্যক্তি অন্যদের বুঝানোর ব্যাপারে অপারগ ভাবেন তাহলে তাকে এমন কোন ব্যক্তির শরণাপন্ন হতে হবে যার বুঝানোর সক্ষমতা রয়েছে যেমন: কোন ইসলামী চিন্তাবিদ, মুফতী বা এমন কোন দাওয়াত বহনকারী যার এ বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান ও উপলদ্ধি রয়েছে। এ ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন:
‘আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার আদেশ দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে।’ (সূরা আত তাওবা : ৭১)
এবং তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) আরও বলেন:
‘সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্খনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।’
(সূরা মায়েদাহ: ৫)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন:
‘পৌছে দাও যদিও বা তা একটি আয়াত হয়।’ (আল বুখারী)
তিনি (সা) আরও বলেন,
‘আল্লাহ তার সে বান্দার মুখকে উজ্জল করুন, যিনি আমার কথা শুনেছেন, উপলদ্ধি করেছেন এবং এমনভাবে পৌছে দিয়েছেন যে রকম আমি বলেছি। হয়ত যিনি বহন করছেন তিনি একজন ফকীহ নাও হতে পারেন, কিন্তু যার কাছে বহন করা হচ্ছে তিনি বহনকারীর চেয়ে বুঝার ক্ষেত্রে শ্রেয়তর হতে পারেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিযী, আহমাদ)
এভাবে একজন ব্যক্তি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন অর্থাৎ নিজে মারুফ সম্পন্ন করবেন ও মুনকার থেকে বিরত থাকবেন ও অন্যকে এ বিষয়ে উপদেশ প্রদান করবেন।