পুঁজিবাদি গণতান্ত্রিক আদর্শের উনুনে ঝলসানো এক দেশ আজ বাংলাদেশ

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের ডাকা হরতালের কারণে গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারীর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। এর আগে গত রোববারের (২রা ফেব্রুয়ারী) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও একই কারণে পেছানো হয়েছিল।

পরীক্ষা পেছানোর কথা জানিয়ে গত রোববারই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পরীক্ষার দিন হরতাল থাকলে তা পরিবর্তন করা হবে। হরতালের কারণে পরীক্ষা পেছানো নতুন কোনো ঘটনা নয়। আমরা ১৯৯৬ সালেও দেখেছি আওয়ামীলীগের ডাকা হরতালের কারণে ৩ মাস এস. এস. সি পরীক্ষা পেছানো হয়েছিল। সরকারের হরতাল পেছানোর উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নয়, বরং ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার নিমিত্তে বিরোধী দলের প্রতি জনগণের আক্রোশ বৃদ্ধিই তার লক্ষ্য। সরকার যদি জনগণের নিরাপত্তার কথাই চিন্তা করতো তবে অফিস আদালত বন্ধ রাখতো, গার্মেন্টস আর মিল কারখানাগুলো বন্ধ রাখতো।

আজ দিনের আলোর মতো পরিস্কার যে, বিএনপির আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আর আওয়ামীলীগের আন্দোলন প্রতিরোধ শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। একদিকে বিএনপি জনগণের জান মালের নিরাপত্তার কথা তোয়াক্কা করছে না অন্যদিকে আওয়ামীলীগ তাদের দলীয় স্বার্থে জনগণের পরিশ্রমের টাকা পুরস্কার স্বরূপ দান করছে।

এ অবস্থার জন্য শুধুমাত্র বি এন পি বা আওয়ামীলীগ দায়ী নয়, বরং এই শাসন ব্যবস্থাই দায়ী যা শাসকবর্গকে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী করে দেয়। আজকের এই অবস্থার জন্য একমাত্র গণতন্ত্রই দায়ী যেখানে শাসকবর্গকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন করার কোনো ব্যবস্থা নাই। এই দুরাবস্থার জন্য শুধুমাত্র এই শাসন ব্যবস্থাই দায়ী যে শাসন ব্যবস্থা ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য কয়েকশ ক্ষমতাপিপাসু ও দূর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের হাতে ছেড়ে দেয়।

এই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আজ সময়ের দাবী, এই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আজ পুড়ে মরে যাওয়া মানুষদের স্বজনদের দাবী, এই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আজ বার্ণ ইউনিটে ঝলসে যাওয়া রোগীদের দাবী, এই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আজ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের যাতাকলে পিষ্ট প্রতিটি জনগনের দাবী, এই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আমাদের আক্বীদাহ ও ঈমানের দাবী। তাই এখনই আমাদের এই পুঁজিবাদী গণতন্ত্রকে উপড়ে ফেলে দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা প্রদত্ত জীবনব্যবস্থা তথা খিলাফত পূনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যোগ দিতে হবে। তা না হলে আমাদের উপর শুধু জালিমের জুলুমই নেমে আসবে না বরং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার আযাব ছেয়ে পড়বে।

আবু দাউদ শরীফে রাসূল (সা) বলেন,

“যারা কোনো অত্যাচার হতে দেখেও অত্যাচারকারীর হাত ধরে তাকে বিরত না রাখবে, তখন আল্লাহ তাদের সকলকে শাস্তি দিয়ে ছেয়ে ফেলবেন।”

মিরাজুল হক

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply