তা-গূত কী?

ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারের জন্য আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারও নিকট শরণাপন্ন হওয়াকে তাগুতের নিকট শরণাপন্ন হওয়া বুঝায়।

তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,

“আপনি কি তাদেরকে প্রত্যক্ষ করেননি যারা দাবী করে যা আপনার উপর নাযিল হয়েছে, এবং যা আপনার পূর্বে নাযিল হয়েছে, তার উপর তারা ঈমান এনেছে, এবং তারা বিবাদমান বিষয়গুলোর মিমাংসার জন্য তাগুতের শরণাপন্ন হতে চায় অথচ তা প্রত্যাখ্যানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।”
(সূরা আন নিসা: ৬০)

তাগুতের শাসন মানেই জাহেলিয়াতের শাসন। এর প্রতিটি আইন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এবং রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে সাংঘর্ষিক। ইবনে আল-কাইয়্যিম তার রচিত গ্রন্থ আ’লাম আল-মুয়াক্কি’ন এ বলেন, “বান্দা যখন কোনকিছুর ইবাদত, কাউকে অনুসরণ কিংবা মান্য করার ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রম করে তখন এইরকম প্রতিটি কর্মকান্ডই তাগুতের মধ্যে পড়ে। সুতরাং প্রত্যেকের জন্য তাগুত সেটাই যার নিকট সে আল্লাহ্ ও রাসূলকে বাদ দিয়ে বিচারের শরণাপন্ন হয়, অথবা আল্লাহ্ বাদ দিয়ে যার উপাসনা করা হয়, অথবা আল্লাহ্’র কাছ থেকে প্রাপ্ত সুস্পষ্ট প্রমাণ ব্যতিরেকে যার অনুসরণ করা হয়, অথবা এমন কিছুকে মান্য করা যা আল্লাহ্’র প্রতি আনুগত্য থেকে উৎপত্তি হয়নি।”

যে তাগুতের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছে পবিত্র কুর’আনের দৃষ্টিতে তার ঈমান কোনো বাস্তবতা নয় বরং নিছক দাবী বা ভন্ডামী মাত্র। এছাড়াও কুর’আন তাগুতকে ঈমানের শত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়েছে যখন তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) বলেন,

“যে তাগুতকে অবিশ্বাস করলো এবং আল্লাহ্ প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলো, সে এমন সুদৃঢ় হাতলকে ধারণ করলো যা ভাঙবার নয়।”
[সূরা বাক্বারা: ২৫৬]

সুতরাং রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর মৃত্যুর পর, ক্বিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ্’কে অবশ্যই মানবজাতির স্বাক্ষী হয়ে থাকতে হবে। সে কারণে কুর’আন যা বলেছে, ঠিক তাই এ উম্মাহ্’র মানবতাকে বলা উচিত,

“একমাত্র আল্লাহ্’র ইবাদত করো এবং তাগুত থেকে দূরে থাকো।”
[সূরা নাহল: ৩৬]

সুতরাং জীবন থেকে দ্বীনকে পৃথকীকরণের চিন্তা, এবং তা থেকে উৎসারিত সকল চিন্তা, যেমন গণতন্ত্র তাগুতের চিন্তা। ইসলাম আমাদেরকে তা প্রত্যাখান ও পরিত্যাগ করার আদেশ দিয়েছে।

এটাই হলো গণতন্ত্র এবং তা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গী। আর এগুলো পৃথিবীতে বাস্তবায়নের ফলে যে ফলাফল তৈরি হবে তা কী এমন সম্মানজনক ও সুন্দর ব্যবস্থা হবে যার ছায়াতলে মানুষ বসবাস করতে পছন্দ করবে নাকি এমন মন্দ ব্যবস্থা হবে যার প্রয়োগে মানুষ অন্তঃসারশূন্য ও ক্ষতিকারক জীবনে পতিত হবে এবং তার আগুন দ্বারা নিয়ে দগ্ধ হবে।

Print Friendly, PDF & Email

গণতন্ত্র

Leave a Reply