জনমতের গুরুত্ব

প্রকাশ্য সামাজিক পর্যায়ে জনগণ যে বিষয়টাকে সম্মান বা অসম্মান করে তার ভিত্তিতেইএকটা জাতি পরিচালিত হয়। ব্যক্তিগত মতামতের ভূমিকা এক্ষেত্রে অত্যন্ত গৌণ। মানুষের সংগঠিত মতামত বা কাজ যা সামাজিক সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে করা হয় কেবল তার দ্বারাই জনমত প্রভাবিত হয়। আলাদা আলাদা ভাবে ব্যক্তিরা কী মনে করে বা বিশ্বাস করে তার দ্বারা সমাজ পরিচালিত হয় না। সমাজের সম্মিলিত নীতিবোধই সবসময় জনমত তৈরী করে ও ব্যক্তির মতামতকে প্রভাবিত করে। এর একটা উদাহরণ হচ্ছে কুরাইশদের দ্বারা বয়কট চুক্তির বিলোপ সাধন। আবু জেহেল ও কুরাইশ নেতারা একে পবিত্র ও অলঙ্ঘনীয় বললেও জনমতের চাপের কারণে কুরাইশরা এই বয়কটের সমাপ্তি টানতে বাধ্য হয়েছিল।

সমাজ পরিবর্তন করতে হলে সমাজের প্রত্যেককেই পরিবর্তন করতে হবে এমন কোনও আবশ্যকতা নেই। যা আবশ্যক তা হল সম্মিলিত মতামত বা জনমতের পরিবর্তন সাধন। তাই কুফর সমাজকে ইসলামিক সমাজে পরিণত হতে হলে সম্মিলিত চিন্তা ভাবনা ও জনমতগুলোকে অবশ্যই ইসলামিক হতে হবে। মুসাব (রা) যখন মদীনা থেকে প্রত্যাবর্তন করে রাসূল (সা) কে তাঁর কাজের ফলাফল সম্পর্কে বিবরণ দিচ্ছিলেন তখন তিনি (রা) জানালেন যে ইসলাম মদীনার ঘরে ঘরে প্রবেশ করেছে, তার মানে এই নয় যে সবাই ইসলাম গ্রহণ করেছে, বরং তার মানে হচ্ছে ইসলাম জনগণের সম্মিলিত মতামতের উপর প্রাধান্য বিস্তার করেছে। এই ভিত্তির উপরই রাসূল (সা) মদীনায় প্রথম ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply