রমজান ও বিশ্বকাপ

এসেছে মুসলিমদের ইবাদতের জন্য হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম মাস রমজান। এ মহিমান্বিত মাসে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা পবিত্র কুরআনকে মানব জাতির মুক্তির জন্য একমাত্র বিধান হিসেবে পৃথিবীর বুকে নাযিল করেছিলেন। অপরদিকে এসেছে ক্রীড়া জগতের সর্ববৃহৎ আসর বিশ্বকাপ ফুটবল-২০১৪, যা বিশ্বজুড়ে ফুটবল প্রেমীদের বহু প্রতিক্ষিত বিনোদনের একটি আসর। এই ২০ তম বিশ্বকাপ আসরে শুধুমাত্র প্রাইজমানি প্রাদানে ব্যয় হবে ৫৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর স্বাগতিক দেশ ব্রাজিল এই আসরের আয়োজনে আনুমানিক খরচ নির্ধারন করেছে ১৪ বিলয়ন মার্কিন ডলার যার, সম্পূর্ণটা শুধু মাত্র ক্রীড়া বিনোদনের উদ্দেশ্যে ব্যয় হবে।

বছরের প্রতিটি মাসের মতো এ মাসেও আমাদের এই সমাজ শুধুমাত্র আমোদ-ফুর্তি করে এক মহা ব্যস্ত সময় কাটানোর জন্য তৎপর। ইতোমধ্যে অনেকেই ডায়াবোলিকা এবং জার্সি নিয়ে এই সর্বোবৃহৎ আসর উপভোগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছেন। আজ এই সমাজের অধিকাংশ মানুষই বিশেষত তরুনরা ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, স্পেন, জার্মানীর লোগো পতাকা নিয়ে ব্যস্ত, এবং কার পতাকা কত বড় তা নিয়ে এক মহান প্রতিযোগীতায় লিপ্ত। পকেটে টাকা-পয়সা যা আছে তা খরচ করে অথবা চাঁদা তুলে হলেও এলাকা বা ক্লাবের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ছবি সংবলিত একটি বড় ব্যানার অথবা ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার বড় একটি পতাকা ঝুলাতেই হবে এমন একটি আমেজ বিরাজ করছে চারদিকে। কোন দল কাপ নেবে, কার গোল কয়টা, কার পয়েন্ট কত তা নিয়ে চলছে তুমুল তর্ক-বিতর্ক আর গবেষনা। ইতোমধ্যে জুয়াড়িরা বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে অপেক্ষা করছে এ আসরের জন্য। অপরদিকে নেইমার-মেসি-রোনালদোর ভক্তরা তো আছেই। প্রিয় খেলোয়াড়ের জার্সি পরে নাকি খেলা দেখার মজাই আলাদা। অথচ ১৪০০ বছর আগে এমনি এক রমজান মাসে মুসলিমদের হাতে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, স্পেন, জার্মনীর পতাকার পরিবর্তে ছিল কালেমায় তাউহীদ এর পতাকা। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, স্পেন, জার্মনির জয়ের পরিবর্তে মুসলিমরা চিন্তা করেছিলেন দ্বীন ইসলামের বিজয় নিয়ে।

প্রিয় ভাইয়েরা, এই ছিল ১৪০০ বছর আগে বদর প্রান্তরে মুসলিমদের চিত্র। এই সেই বদর প্রান্তর যেখানে মুসলিমদের সর্বপ্রম যুদ্ধ হয়েছিল দ্বীন ইসলামের সর্বপ্রম রাষ্ট্র, মদিনা রাষ্ট্রকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে। সেই যুদ্ধে মুসলিমদেও বিজয় উলাস ছিল অভাবনীয়। কিন্তু অপ্রিয় হলেও বর্তমান বাস্তবতা হলো ১৪০০ বছর পর আজ মুসলিমরা বিজয় উলাস করে স্পেন, ব্রাজিল, জার্মনী, আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ লড়াই দেখে। অথচ প্রতিবছর রম্জান আসলেও বদরের সেই বিজয় উলাস আজ রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, ব্যক্তিগত কোন ক্ষেত্রেই পালিত হয় না। যে স্পেনের খেলা দেখে আজ মুসলিমরা অভিভূত হয় সে স্পেন ১৭ বছর বয়সে জয় করেন তারিক-বিন-জিয়াদ। অথচ আজকের এই কুফর গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার কুফর সংস্কৃতির প্রভাবে সাম্প্রতিক টি-২০ বিশ্বকাপের ফ্ল্যাশমবে মুসলিম তরুন ভাইয়েরা নাটকীয় ভঙ্গিমায় নেচেছে। সেই সাথে আমাদের মুসলিম বোনেরা ও নৃত্য পরিবেশন করেছে। ফেসবুক আর ইউটিউব এর সেই ভিডিওগুলোতে পড়েছে শত শত লাইক। গত টি-২০ ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকাপের থিম সং অনুযায়ী বলতে হয়,

“চার ছক্কা হই হই,
আমাদের দ্বীনি ভাইবোনদের ঈমান গড়াইয়া গেল কই?’’

গত বিশ্বকাপ ফুটবলে ছিল ওয়াকা-ওয়াকা এর উন্মাদনা। আর এ সঙ্গিতের সামনে ভাইবোনেরা হয়ে পড়েছিল দিশেহারা। এর পর এবারে এসেছে ‘‘ওলে ওলা ’’। এই গানের তালে তালে নাঁচার জন্য ব্রাজিলে যৌন কর্মী গেছে ১৫,০০,০০০ (পঁনের লক্ষ)।

আসুন আমরা একটু চিন্তা করে দেখি আল্লাহর এই আয়াত নিয়ে,

“হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহামহিম পালনকর্তা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল?”
[ইনফিতার: ৬]

আজ পশ্চিমাদের দেয়া গণতান্ত্রিক চিন্তা কি আমদের আল্লাহ সম্পর্কে বিভ্রান্ত করে ফেলেনি! আজকের এই কুফর গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার কারণে সমগ্র বিশ্বের এবং আমাদের চারপাশের অসংখ্য মানুষ ও প্রতিনিয়ত অভুক্ত অবস্থায় থাকে। দৈনিক পত্রিকাগুলোর পৃষ্টা উল্টালে প্রতিদিন চোখে পড়ে কোন না কোন দ্বীনি বোনের ধর্ষনের খবর। এখন আমরা এমন এক সমাজে বসবাস করছি যেখানে সকল প্রকার বিজ্ঞাপনে নারীদের বেপরোয়া অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন সাবানের বিজ্ঞাপনে একজন নারীর গোসল করার দৃশ্য, টু পেস্টের বিজ্ঞাপনে নারী পুরুষের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের দৃশ্য এমন কি পুরুষের প্রসাধনী সামগ্রীর বিজ্ঞাপনেও নারী পুরুষের অবাধ ও অশ্লীল আচরন প্রদর্শিত হয়। রমজান মাসে টিভি চ্যানেল গুলোর আরো একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হল যে সংবাদপাঠিকারা রম্জানের প্রম দিন থেকে মাথায় কাপড় দিয়ে নিজেদের রক্ষনশীলতা এবং আলাহ্ সুবহানাহুতায়ালার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলে ও ঠিক ঈদের পরদিন থেকে মাথায় কাপড় সরিয়ে তথাকথিত সমাজের উগ্রতার পরিচয় দিয়ে থাকে। প্রতি বছরই আমাদের চারপাশে এই নগড়ব বাস্তবতাগুলো ফুটে ওঠে। অপরদিকে সীমান্তে প্রতিবছর আমাদের দ্বীনি ভাইবোনেরা নির্বিচারে প্রাণ হারাচ্ছে। ফেলানী ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমানদের মতো আরও নাম না জানা নিহত দ্বীনি ভাই ও বোনদের জন্য সামান্য দুঃখ প্রকাশ করেই কি আপনারা আবার আমোদ ফূর্তিতে লিপ্ত হবেন? আপনাদের এই নিশ্চুপ থাকার কারণে বৈদেশিক শত্রুদের চক্রান্তে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তা সহ ৭৪ জন নির্মমভাবে নিহত হয়। কিন্তু হাসিনা এবং খালেদার জোট এই ব্যপারে নিশ্চুপ থেকে ক্ষমতার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। মসজিদে একজন মুসলির সেন্ডেল থেকে শুরু করে একজন মানুষের জানের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এই কুফর গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এর পরেও রম্জান এবং অন্যান্য মাসে রান্নার চুলায় গ্যাস না পেয়ে পানি ও বিদ্যুৎ সংকটের মত সমস্যাগুলোকেও উপেক্ষা করে মেসি- নেইমার – রোনালদোর মতো খেলোয়াড়দের চুলের স্টাইল নিয়ে উলাস করবেন ? এই বিনোদন, এই উলাস, এই ব্যস্ততা কখনো আপনাদের ঘরে মাসের শেষে চাউলের বস্তা এনে দিবে না। এই পূঁজিবাদী কুফ্রী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে এই পবিত্র রমজান মাসেও নিত্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কিছু সংখ্যক বিত্তবানদের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকলেও অধিকাংশ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যায়। এরপরও আপনারা নিজেদেরকে হাসিনা খালেদার শাড়ীর আচলে বেঁধে রেখেছেন । তারা শুধূ কাফেরদের দেয়া মানুষের তন্ত্র, তথা জনগনের মন্ত্র, তথা গনতন্ত্রের বস্তাই বহন করবে ,কারো ঘরের চাউলের বস্তা নয় !

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা বলেছেন,

‘‘আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তা অনুযায়ী যারা বিচার ফয়সালা করে না, তারাই তো কাফের।”

‘‘আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তা অনুযায়ী যারা বিচার ফয়সালা করে না, তারাই তো জালেম।”

‘‘আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তা অনুযায়ী যারা বিচার ফয়সালা করে না, তারাই তো ফাসেক।”
[সুরা-আল মায়েদা-৪৪, ৪৫, ৪৭]

রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন –

‘‘যে ব্যক্তি কোন জালিমের সাথে চলে তার শক্তি বৃদ্ধি করে, অথচ সে জানে ঐ ব্যক্তি জালিম, তাহলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেল।” (বায়হাকী)

কিন্তু আজ থেকে ১৩০০ বছর পূর্বে মুসলিমদের খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) আ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়লার বিচার ব্যবস্থা দ্বারা বিচার ফয়সালা করেছিলেন বলে রাষ্ট্রের এক অভূক্তের ক্ষিদে মিটানোর জন্য নিজের পিঠে করে আটার বস্তা বহন করে ঘরে পৌছে দিয়েছিলেন। প্রতিদিন আপনাদের আশে পাশে অসংখ্য মানুষ যখন না-খেয়ে ঘুমায় তখন কি আপনাদের উল্লাস করবার সময় ? যখন বিশ্বকাপের গোল হতে থাকবে তখন ও কি পৃথিবীর কোন না কোন প্রান্তে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ পোষনকারীদের গুলিতে ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, বার্মা অথবা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তীদের মাঝে কোন মুসলিম পাখির মতো ছটফট করতে করতে মৃত্যু বরন করবে ? আপনারা কি রাসূলুল্লাহ (সা) এর সেই হাদীস ভুলে গেছেন ? যেখানে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন

‘‘একজন মুসলিমকে হত্যা করার চেয়ে কাবার অপমান আল্লাহর কাছে কম গুরুতর।”

তবে কি একজন মুসলিমের রক্তের চেয়ে সামান্য এই দুনিয়ার বিনোদন আর ভোগ-বিলাস আপনাদের কাছে অনেক বেশী পবিত্র ?

যে উম্মত নিজেদেরকে রাসুলালাহ (সা) এর অনুসারী দাবী করেন তাদেরকে প্রশড়ব করছি শেষ বিচারের দিন কোন চেহারা নিয়ে আলাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার সামনে দাড়াবেন ? যখন হাশরের ময়দানে আপনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে একজন মুসলিম। সে বলবে ‘‘আমি কুরআনের উম্মতের কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম, কিন্তু উম্মত কোন জবাব দেয়নি। রমজান পার হয়ে গেছে অথছ উম্মত একটু ও নড়ে নি”। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন,

‘‘সকালে জেগে উঠে যে মুসলিমদের নিয়ে চিন্তিত হয় না, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”
(কানজুল উম্মাল)

রাসূলুল্লাহ (সা) আরও বলেছেন,

“যদি তোমরা দেখ যে আমার উম্মত কোন জালেম কে এ কথা বলতে ভয় পাচ্ছে যে, ‘‘নিশ্চয় তুমি একজন জালেম” তাহলে (সেই উম্মতকে) তাদের হতে বিদায় (অর্থাৎ সেই উম্মতের জন্য বিদায় বা পতন সংকেত)” [আহমদ, তাবারানী, হাকিম, বায়হাকী]

পবিত্র কুরআন এর দিকে ফিরে যাওয়া ছাড়া আপনাদের কোন পদ নেই বা আশ্রয় ও নেই, যাতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার জমিনে তার শাসন কর্তৃত্ব প্রতিষ্টিত হয়। কারণ,

‘‘আল্লাহ শাসন কর্তৃত্বের মাধ্যমে যা রক্ষা করেন কুরআন দিয়েও তা রক্ষা করেন না’’

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা কুরআন এই জন্য নাযিল করেন নি যে এই কিতাব মৃত মানুষের জন্য পড়া হবে, অথবা তাবিজ হিসেবে বিক্রি হবে বা এ জন্য নয় যে দেয়াল ও বসার ঘর এই কিতাব দিয়ে সাজানো হবে। বরং এই কিতাব নাযিল করা হয়েছে যাতে মানব জাতি এ কিতাব থেকে জীবন বিধান পেতে পারে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা বলেছেন –

‘‘তোমাকে পাঠিয়েছি সত্য সম্বলিত গ্রন্থ দিয়ে যাতে করে আল্লাহ্ তোমাকে যেভাবে দেখিয়েছেন সেভাবে তুমি মানব জাতিকে শাসন করতে পার” (সুরা নিসা-১০৫)

হে ঈমানদারগণ, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর” (সুরা বাকারাহ্-২০৮)

আমরা আপনাদের আহবান জানাই, শত বছরের ধুলো-ময়লা ঝেড়ে ফেলে উঠে দাঁড়ান, যাতে আমানত ও দায়িত্বের সাথে রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক গৃহীত মদিনা রাষ্ট্র প্রতিষ্টার পদ্ধতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে ইসলামি রাষ্ট্র তথা খিলাফত রাষ্ট্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করুন। দুনিয়ার বুকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার আইন পুনঃ প্রতিষ্টা তথা খিলাফত পুনঃ প্রতিষ্টা করার কাজের চেয়ে সামান্য ৯০ মিনিটের উত্তেজনা একজন মুমিনের নিকট অনেক বেশী প্রিয় ও পবিত্র হতে পারে না। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন

‘‘আর যে (ব্যক্তি) এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল যে তার কাঁধে (কোন খলীফার) বায়’আত (আনুগত্যের শপথ) তবে তার মৃত্যু হচ্ছে জাহেলী (যুগের) মৃত্যু।’’ (মুসলিম)

সেই ইসলামি রাষ্ট্র তথা খিলাফত রাষ্ট্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান করছি, যেখানে জনগণ তথা মানুষের সার্বভৌমত্ব নয়, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে এবং কেয়ামত পর্যন্ত কায়েম থাকবে ইনশাআল্লাহ। রাসূলুল্লাহ (সা) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন ‘

……এরপর আবার ফিরে আসবে নবুয়্যুতের আদলের খিলাফত”। (আহমদ)

তন্ময়

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply