আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যেই দাবি করে, তারা ধর্মনিরপেক্ষ। তাদের ভারতমাতাও প্রকাশ্যেই বলে, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার চায় ভারত।
আবার এই আওয়ামী লীগনেত্রী শেখ হাসিনাই দাবি করেন, তারা বাংলাদেশে ইসলামের সেবক! নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান তো বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পক্ষেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব!
ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ পরে মুখে নিজেদের ইসলামের সেবক দাবিকারী এই শ্রেণির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কতটুকু ধর্মনিরপেক্ষতা বোঝেন, আর কতটুকুই বা ইসলাম বোঝেন, সেটা একটু খতিয়ে দেখা দরকার।
Secularism বা ধর্মনিরপেক্ষতা মতবাদটিকে “সকল ধর্মের সমান স্বাধীনতা” বা “সবাই নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে” – এই মুখোশে বোঝাতে চান কেউ কেউ। প্রকৃতপক্ষে সেকুলারিজম মানে হলো, ধর্মীয় আইন-কানুন থেকে রাষ্ট্র আলাদা থাকবে।
Oxford Dictionary-তে সেকুলারিজমকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবে: The belief that religion should not be involved in the organisation of society, education, etc. [সমাজের গঠন/সংগঠন, শিক্ষা ইত্যাদিতে ধর্ম যুক্ত হবে না – এই বিশ্বাসের নাম সেকুলারিজম।]
Wikipedia-তে সেকুলারিজমের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে: Secularism is the principle of separation of government institutions, and the persons mandated to represent the State, from religious institutions and religious dignitaries.
অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতার পরিষ্কার মানে হচ্ছে রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি থেকে ধর্মকে বিচ্ছিন্ন করা। তাই ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ কখনোই “সবাই সবার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে”- এটা নয়। বরং বলা যেতে পারে, ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হলো রাষ্ট্রের দেয়া সীমার মধ্যে ধর্মপালন অর্থাৎ ‘পরাধীনভাবে’ সবাই সবার ধর্ম খণ্ডিত আকারে পালন করবে।
১৮৫১ সালে ব্রিটিশ নাস্তিক লেখক George Jacob Holyoake (১৩ এপ্রিল ১৮১৭ – ২২ জানুয়ারি ১৯০৬) “Secularism” শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন।
ব্রিটিশ নাস্তিক লেখক George Jacob Holyoake (১৩ এপ্রিল ১৮১৭ – ২২ জানুয়ারি ১৯০৬)
উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের আগে ধর্মরাষ্ট্রই ছিল – রাষ্ট্র থেকে ধর্ম বিচ্ছিন্ন ছিল না। ব্রিটিশরা উপমহাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা চালু করে। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ স্বাধীনের পর এই তিন দেশে অফিসিয়ালি ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশদের খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে পড়া তিন কৃতি ছাত্র:
১. মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (ভারত): রাজকোট ইংলিশ স্কুল (পরবর্তীতে আলফ্রেড হাই স্কুল)
২. মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ (পাকিস্তান): The Cathedral & John Connon School, বোম্বে; খ্রিস্টান মিশনারি সোসাইটি হাই স্কুল, করাচি। [জিন্নাহ সেকুলার ছিলেন; তিনি সেকুলার পাকিস্তানই চেয়েছেন – কোনো ধর্মরাষ্ট্র নয়।]
৩. শেখ মুজিবুর রহমান (বাংলাদেশ): খ্রিস্টান মিশনারি হাই স্কুল, গোপালগঞ্জ। এখান থেকেই এন্ট্রান্স পাশ, রাজনীতির হাতেখড়িও এই স্কুলে থাকতেই।
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা আমদানি:
সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারেও জন্ম নিলেও (কলকাতার চন্ডিদাস, গৌরীবালা, অরণ্য কুমারের গল্প সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন) খ্রিস্টান মিশনারীদের সংস্পর্শে শেখ মুজিব আদর্শিকভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন। ধর্মকর্মে তাঁর মতি ছিল না – হজ করেননি জীবনে কখনোই। টুপি পরে ফটোও তোলেননি তেমন একটা। তাঁর টুপি পরা একটি ছবি নিচে দিলাম। [নাতি জয় খুব খুশি হবে হয়ত!]
ইউপিএল থেকে প্রকাশিত শেখ মুজিবের “অসমাপ্ত আত্মজীবনী”-তে ১৪৮ পৃষ্ঠায় গান্ধী ও সোহরাওয়ার্দীর সাথে ১৯৪৭ সালে তরুণ মুজিবের সাদা-কালো ছবিটিতেও অস্পষ্টভাবে মাথায় টুপি দেখা যায়। পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিব কখনোই প্রকাশ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেননি – ওটা ভারতীয়দের আদর্শ বলেই হয়ত।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে তাঁর বিরুদ্ধে ইসলামবিরোধিতার অভিযোগ উঠলে তিনি নিজেকে “ইনসাফের ইসলামে বিশ্বাসী” বলে পরিচয় দেন – ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে নয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা শোনা যায়নি। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে কোথাও এই মতবাদের কথা ছিল না।
কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীনের পর ১০ জানুয়ারি ১৯৭২-এ লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরার পথে দিল্লিতে নেমে শেখ মুজিব বলে বসলেন, বাংলাদেশের এই জয় “ধর্মনিরপেক্ষতার বিজয়”!
এর পর ১৯৭২ সালের সংবিধানে গান্ধী-নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশে অফিসিয়ালি আমদানি করেন শেখ মুজিব।
সেই ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম থেকে “রাব্বি জিদনি ইলমা” তুলে দেয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান আর্মিকে সমর্থনের অজুহাতে ১৯৫৯-৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত “ইসলামিক একাডেমি” ১৯৭২ সালে বন্ধ করে দেয়া হয়। [লিংক: http://en.wikipedia.org/wiki/Islamic_Foundation_Bangladesh]
“ইসলামিক একাডেমি”-র বিরুদ্ধে রাজনীতিতে ইসলাম ব্যবহার [ধর্মনিরপেক্ষতা পরিপন্থী] করার অভিযোগও করা হয়।
পরে মুসলিম বিশ্বে ইমেজ পুনরুদ্ধারের জন্য ১৯৭৫ সালের মার্চে “ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ” নামে ওই প্রতিষ্ঠান আবার চালু করেন মুজিব। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত “সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ” ১ম খণ্ডেও এই তথ্যগুলো আছে। [মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে জোরেশোরে দাবি করা হচ্ছে, মুজিব এদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা! শেখ হাসিনাও গত বৃহস্পতিবার ফটিকছড়িতে এটা দাবি করেছেন। সেক্ষেত্রে তাঁর এটাও দাবি করা উচিত যে, তিনিই ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাতা! কেননা হাসিনাই তো ওটার নামবদলের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন :-P]
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে রক্তাক্ত পটপরিবর্তনের পর মুজিবের ভাইস-প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে প্রথম রেডিও ভাষণে বাংলাদেশের নাম “ইসলামী প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ” উল্লেখ করেন। মূলত আনঅফিসিয়ালি “ধর্মনিরপেক্ষতা” তখনই বাংলাদেশ থেকে উঠে যায়।
১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সংবিধানের “ধর্মনিরপেক্ষতা” তুলে দিয়ে “আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস” যোগ করেন। ১৯৭৯ সালে তা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর অন্তর্ভুক্ত হয়।
২০১০ সালে মহাজোট আমলে সুপ্রীম কোর্ট সেই ৫ম সংশোধনী অনেকাংশে বাতিল করে দেয়। ২০১১ সালে ১৫শ সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ হাসিনা তাঁর পিতার অনুসৃত “ধর্মনিরপেক্ষতা” আবার সংবিধানে নিয়ে আসেন।
ধর্মনিরপেক্ষতা ও শেখ হাসিনা:
১৯৯৬ সালে ৭ম সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা মাথায় পুরোদস্তুর স্কার্ফ বেঁধে, নিজের মুনাজাতরত ছবি দিয়ে পোস্টার বানিয়ে ক্ষমতায় আসেন। তবুও তিনি ধর্মনিরপেক্ষই থেকে যান, আর তাঁর প্রতিপক্ষ হয় ধর্মব্যবসায়ী!
গত ২৯ আগস্ট ২০১৩, বৃহস্পতিবার ফটিকছড়িতে শেখ হাসিনা বলেন, “সেই নূহ নবীর আমল থেকে নৌকায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে মানুষদের। দুর্যোগ দুর্বিপাকে নৌকাই মানুষকে রক্ষা করেছে। নৌকায় ভোট দিয়ে আর্থিকভাবে মানুষ সচ্ছল হয়েছে।”
হযরত নূহ (আ.)-এর মহাপ্লাবনের নৌকার সাথে নিজের নৌকা প্রতীকের তুলনার পরও তিনি ধর্মনিরপেক্ষ! সেই তিনিই আবার বলেন, “ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। আগামীতে দেশের ক্ষমতায় কে যাবে- না যাবে, তা আল্লাহ নির্ধারণ করবেন। …ইসলাম প্রচারে আওয়ামী লীগই কাজ করেছে, অতীতেও করেছে এবং এখনো করছে।”
এর পর তিনি আবার কুরআন-হাদিস থেকেও ধর্মনিরপেক্ষতার সবক দেন: “পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে, লাকুম দিনুকুম অলিইয়াদিন। যার ধর্ম সে পালন করবে। বিদায় হজের ভাষণ ও মদিনার সনদেও মহানবী (স.) তা উল্লেখ করেছেন।”
ধর্মনিরপেক্ষতা ও ইসলাম:
প্রধানমন্ত্রী যখন আমাদেরকে কুরআন-হাদিস থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা শেখান, তাহলে আমরাও একটু দেখি কুরআন-হাদিস কি আসলেই নাস্তিক George Jacob Holyoake-কের ধর্মনিরপেক্ষতা শেখায় কিনা!
আগেই বলা হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি থেকে ধর্মকে বিচ্ছিন্ন করা। রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মের বিচ্ছিন্নতার কোনো বিধান কুরআন-হাদিসে নেই। বরং আল্লাহ বলছেন,
يٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُواْ ٱدْخُلُواْ فِى ٱلسِّلْمِ كَآفَّةً
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর।” [সূরা বাকারা: ২০৮]
ইবন কাসীর (রহ.) এ-আয়াতের তাফসীরে বর্ণনা করেন, ইবন আব্বাস (রা.) এ-আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেছেন, এ-আয়াতে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন,
ادخلوا في شرائع دين محمد صلى الله عليه وسلم ولا تَدَعوا منها شيئًا
“তোমরা পরিপূর্ণভাবে মুহাম্মদ (সা.)-এর দ্বীনের সমস্ত আইনের আনুগত্য কর এবং সেখান থেকে কোনো কিছুই পরিত্যাগ করো না।”
এই আয়াতের তাফসীরে মুফতি শাফী (রহ.) বলেন, কুরআন ও সুন্নাহতে বর্ণিত পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধানের নামই হচ্ছে ইসলাম। কাজেই এর সম্পর্ক বিশ্বাস ও এবাদতের সঙ্গেই হোক কিংবা আচার-অনুষ্ঠান, সামাজিকতা অথবা রাষ্ট্রের সঙ্গেই হোক অথবা রাজনীতির সঙ্গেই হোক, এর সম্পর্ক বাণিজ্যের সঙ্গেই হোক কিংবা শিল্পের সঙ্গে – ইসলাম যে পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা দিয়েছে তোমরা সবাই তারই অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। [মা’আরেফুল কুরআন]
ফটিকছড়িতে ধর্মনিরপেক্ষতার সমর্থনে শেখ হাসিনা কুরআনের আয়াতকে ভুলভাবে প্রয়োগ করেছেন। তিনি বলেছেন, পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে, লাকুম দিনুকুম অলিইয়াদিন। যার ধর্ম সে পালন করবে।
আসলে সূরা কাফিরূনের শেষ আয়াত “লাকুম দিনুকুম অলিইয়াদিন”-এর অর্থ হলো, “তোমাদের দ্বীন তোমাদের, আমার দ্বীন আমার।” অর্থটি শেখ হাসিনারই উদ্বোধনকৃত কুরআনের একেবারে বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত ওয়েব সাইট থেকে নেয়া!
সব তাফসীর গ্রন্থে আছে, মক্কার মূর্তিপূজারীরা মহানবী (সা.)-কে এই শর্তে সমঝোতার প্রস্তাব দেন যে, মহানবী (সা.) একবছর কাফেরদের ধর্মপালন করবেন, কাফেররাও একবছর ইসলাম পালন করবে। এ-ধরনের আরো কিছু শর্তের মাধ্যমে তারা মহানবী (সা.)-র সাথে সমঝোতা করতে চায়। ওই সময় অবতীর্ণ সূরা কাফিরূনের মাধ্যমে আল্লাহ পরিষ্কার জানিয়ে দেন, মহানবী (সা.) কোনোভাবেই তাদের ধর্মের কোনো কিছু গ্রহণ করতে পারেন না:
“বলুন, হে কাফেররা, আমি ইবাদত করি না তার তোমরা যার ইবাদত কর। এবং তোমরাও ইবাদতকারী তার নও, যার ইবাদত আমি করি এবং আমি তার ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা কর। তোমরাও তার ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের দ্বীন তোমাদের, আমার দ্বীন আমার।”
সীরাতে ইবনে হিশাম গ্রন্থে [ইসলামিক ফাউন্ডেশন অনূদিত] আছে, মক্কার কাফেররা রাসূলুল্লাহ (সা)-কে তাদের সাথে সমঝোতার প্রস্তাব দিলে রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর চাচা আবু তালিবকে বলেন:
يَا عَمّ، وَاَللّهِ لَوْ وَضَعُوا الشّمْسَ فِي يَمِينِي ، وَالْقَمَرَ فِي يَسَارِي عَلَى أَنْ أَتْرُكَ هَذَا الْأَمْرَ حَتّى يُظْهِرَهُ اللّهُ أَوْ أَهْلِكَ فِيهِ مَا تَرَكْتُهُ
“হে চাচা, আল্লাহর শপথ, তারা যদি আমার ডান হাতে সূর্য ও বাম হাতে চাঁদও এনে দেয় এই শর্তে যে আমি আমার কাজ পরিত্যাগ করবো, তাহলেও আমি কখনো আমার কাজ বন্ধ করবো না, যতক্ষণ না আল্লাহ এটিকে বিজয়ী করেন অথবা আমি ধ্বংস হয়ে যাই।”
তাই কুরআন-হাদিসে শেখ হাসিনার আবদারকৃত “যার ধর্ম সে পালন করবে” এ-রকম কোনো অর্থ “লাকুম দিনুকুম অলিইয়াদিন”-এর পাওয়া যায় না – বরং পাওয়া যায়, কাফেরদের ধর্মকে মেনে না নেয়ার কঠোরতম দৃঢ় সিদ্ধান্ত।
…… ……. ……. ……. ……..
ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশে যারা নিজের খেয়ালখুশি মতো ইসলামের বিধি-বিধানসমূহকে আংশিকভাবে পালন করতে চায়, যারা নিজের খেয়ালখুশি মতো কুরআনের কিছু বিধান মানবে আর কিছু বিধান মানার দাবি তুললে হত্যা-নির্যাতন করবে, তাদেরকে আল্লাহ কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন এই বলে যে,
أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ ٱلْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَآءُ مَن يَفْعَلُ ذٰلِكَ مِنكُمْ إِلاَّ خِزْيٌ فِى ٱلْحَيَاةِ ٱلدُّنْيَا وَيَوْمَ ٱلْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ ٱلّعَذَابِ
“তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান কর? অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা আর কিয়ামতের দিন এরা কঠিন শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে।” [সূরা বাকারা : ৮৫]
মুখে যতই ইসলামের সেবক দাবি করুক, এসব আংশিক ইসলাম বিশ্বাসকারী ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি পৃথিবীতে লাঞ্ছিত হবেই, আর কিয়ামতে পাবে কঠোর শাস্তি। এটাই মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট ঘোষণা।]
দূরের যাত্রী
৩১ আগস্ট ২০১৩