রাসূলুল্লাহ (সা) এর প্রতি ভালোবাসা ও নাস্তিকতার মূল উৎপাটন

আল্লাহ্ তা’আলা রাসূল (সা) সম্পর্কে বলেন,

হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি। (আহজাব: ৪৫)

রাসূল (সা) এর প্রতি ভালবাসা বলতে বোঝায় তাকে মান্য করা এবং তাকে সৃষ্টি কূলের মাঝে সর্বশ্রেষ্ট মনে করা। আল বাইদাওয়ী বলেন “ভালবাসা হচ্ছে মান্য করার ইচ্ছা করা”। আরবি ভাষায় ভালবাসা মানে কাউকে সু-উচ্চে তুলে ধরার ইচ্ছা করা।

ভালোবাসা হচ্ছে কোন কিছুর প্রতি তাড়না যা মানুষের সেই বিষয়ের প্রতি আচরণ নির্ধারণ করে। এই তাড়না হতে পারে প্রবৃত্তিগত যার সাথে কোন দৃষ্টিভঙ্গীর সম্পর্ক নেই, যেমন: মানুষের তাড়না মালিকানার প্রতি, বেঁচে থাকার জন্য, ন্যায়ের জন্য, পরিবার-সন্তানের জন্য ইত্যাদি।

আবার তাড়না হতে পারে কোন নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গীর ভিত্তিতে যা তার আচরণকে সুগঠিত করবে। তাই ইসলাম রাসূল (সা) এর প্রতি ভালবাসাকে ফরয করেছে। এবং এই ব্যপারে দলীল হল:

আল্লাহ্ বলেন,

বল, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের পরিবার, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান- যাকে তোমরা পছন্দ কর – আল্লাহ্, তার রাসূল ও তার রাহে জেহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত, আর আল্লাহ্ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। (তাওবা: ২৪)

ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে তার সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

“শপথ ঐ সত্ত্বার যার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের কেউই ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তান হতে অধিকতর প্রিয় হব”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৩]

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“তোমাদের কেউই ঈমানদার হবে না যতক্ষণ আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা, সন্তান ও সকল মানুষ হতে প্রিয় না হই”।
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৮]

হযরত ওমর (রা) একবার বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি আমার নিকট আমার জীবন ব্যতীত অন্য সমস্ত বস্তু হতে অধিক প্রিয়।” হুযুর (সা) বললেন, “কোন ব্যাক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত আমার মহব্বত তার নিকট তার জীবনের চাইতেও বেশী না হইবে । হযরত উমর (রা) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! এখন আপনি আমার নিকট আমার জীবনের চাইতেও বেশী প্রিয়”। (বুখারী)

রাসূল (সা) বলেছেন, মানুষের হাশর হবে তার সাথে যার সাথে তার মহব্বত রয়েছে । (মুসনাদে আহমাদ)

উপরোক্ত আয়াত ও হাদীস থেকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি মহব্বত ও ভালোবাসা পোষণ না করলে ঈমানদার বলে কেউ বিবেচিত হবে না। অতএব ঈমানের অনিবার্য দাবী হল- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবাসা।

আমরা যদি সাহাবাদের (রা) রাসূলের প্রতি ভালবাসার দিকে তাকাই তাহলে দেখব তারা কতটা উৎসাহী ছিলেন রাসূল (সা)-এর প্রতি ভালবাসা দেখাতে, তার (সা) আদেশ মানতে, তারা একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতেন ভালবাসার এই দায়িত্ব পালন করতে।

উহুদের যুদ্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে আনাস (রা) বর্ণনা করেন, “যখন সকলে রাসুল (সা) কে রেখে চলে যাচ্ছিল, আবু তালহা (রা) তখন বর্মের মত রাসুল (সা) এর সামনে দাড়িয়ে ছিল। আবু তালহা ছিলেন একজন অভিজ্ঞ এবং শক্তিশালী তীরন্দাজ যার ধনুক ছিল শক্ত ও প্রসারিত। সেদিন তিনি দু থকে তিনটি ধনুক ভেঙে ফেলেন। যখন কেউ রাসুল (সা) এর সামনে দিয়ে পাত্র ভর্তি তীর নিয়ে যেত রাসুল (সা) তা আবু তালহার জন্য দিয়ে যেতে বলছিলেন। যখন রাসুল (সা) শত্রুদের দেখার জন্য মাথা তুলছিলেন আবু তালহা বলেন “আমার পিতা মাতা আপনার উপর কুরবান হোক, আপনার মাথা শত্রুদের দেখতে দিবেন না, আমার গলা এবং বুক আহাত হোক তার পরও যেন আপনার গায়ে একটি তীরও না লাগে।” (বুখারী ও মুসলিম)

সাহাবারা রাসূলকে (সা) এত ভালবাসতেন এবং তার রক্ষা করার জন্য জীবন দিয়ে দিতেন এমনকি তাদের শিশুদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে বলতেন যাতে রাসুলের (সা) গায়ে যেন নুন্যতম আঘাত না লাগে। মুসলিমরা রাসুল (সা) কে সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন কারন তিনিই হচ্ছেন হাশরের ময়দানে শাফায়েত কারী।

আবূ হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন: “আমি রোজ কিয়ামতে মানুষের সরদার-নেতা হব। যে দিন মানব মণ্ডলী আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে এবং সূর্য থাকবে মাথার খুব কাছে। মানুষের দুশ্চিন্তা ও বিপদের চরম পর্যায়ে পৌঁছবে। এমন বিপদ যা তাদের শক্তির বাহিরে এবং সহ্য করাও বড় কঠিন হয়ে পড়বে। ওরা একে অপরকে বলবে: তোমরা একজনকে পাওনা যিনি তোমাদের প্রতিপালকের নিকট তোমাদের জন্য সুপারিশ করবেন? তারা একে অপরকে বলবে: চল আদম (আ) এর নিকট। সকলে আদম (আ) এর নিকটে গিয়ে বলবে: হে আদম (আ) আপনি মানুষের পিতা। আল্লাহ আপনাকে তাঁর নিজ হাতে সৃষ্টি করে আপনার মাঝে তাঁর রুহ ফুঁকেছেন। ফেরেশতাগণকে নির্দেশ করেছেন আর তাঁরা আপনাকে সেজদা করেছেন। আপনার রবের নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। আমরা কি অবস্থায় আপনি দেখেন না!? আমরা কী চরম পর্যায় পৌঁছেছি দেখেন না? বাবা আদম (আ) বলবেন: নিশ্চয়ই আমার রব-প্রতিপালক আজ এমন রাগ হয়েছেন যা ইতিপূর্বে কখনো রাগ হননি। আর এর পরেও কখনও এরূপ রাগ হবেন না। আল্লাহ তা‘য়ালা আমাকে গাছের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন আর আমি তার নাফরমানি করেছিলাম। নাফসী নাফসী (আমি নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত আছি) তোমরা অন্য কারো নিকটে যাও। তারা যথাক্রমে: নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও ঈসা (আ)- এর নিকটে যাবে। কিন্তু সকলে ওজর পেশ করবেন। তাঁরা সকলে বলবেন: নিশ্চয়ই আমার রব আজ এমন রাগ হয়েছেন যা ইতিপূর্বে কখনো রাগ হন নাই এবং এরপরেও কখনো এরূপ রাগ হবেন না। নাফসী নাফসী (আমি নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত আছি)। অত:পর ঈসা (আ) বলবেন: তোমরা মুহাম্মাদ (সা)-এর নিকটে যাও। তারা সকলে আমার নিকটে আসবে। অত:পর বলবে: হে মুহাম্মাদ (সা) আপনি আল্লাহর রাসূল, শেষ নবী, আল্লাহ আপনার আগের-পরের সকল পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আপনি আমাদের জন্য আপনার রবের কাছে সুপারিশ করুন। তখন আমি অগ্রসর হয়ে আরশের নীচে যেয়ে আমার রবের জন্যে দীর্ঘ সেজদায় পড়ে যাব। অত:পর আল্লাহ আমার প্রতি তাঁর প্রশংসা ও শুকরিয়া করার জন্য অন্তর খুলে দিবেন ও এমন ইলহাম (আল্লাহ কর্তৃক অন্তরে প্রদত্ত জ্ঞান) দান করবেন যা আমার পূর্বে আর কারো জন্য খুলে দেননি। অত:পর বলা হবে: হে মুহাম্মাদ (সা)! তোমার মাথা উঠাও। চাও দেয়া হবে। সুপারিশ কর গ্রহণ করা হবে। তখন আমি মাথা উঠাব এবং বলব: হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মত! আমার উম্মত! বলা হবে: হে মুহাম্মাদ (সা)! তোমার উম্মতের যাদের কোন হিসাব নেই তাদেরকে জান্নাতের ডান দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তারা মানুষের সঙ্গে অন্য সকল দরজায় অংশীদার। যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন! নিশ্চই জান্নাতের দরজার দূ পাল্লার মধ্যের দূরত্ব মক্কা ও হাজার বা মক্কা ও বুছরার দূরত্বের সমান।” (বূখারী হাদীস নং ৪৭১২; মুসলিম হাদীস নং ১৯৪ শব্দ তারই)

যে রাসূল তার উম্মতকে ছাড়া জান্নাতে যাবেন না মুসলিমরা তাকে (সা) প্রাণের চেয়ে বেশি ভালবাসবে না তো কাকে ভালবাসবে। তাই প্রত্যেক মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক হল রাসূল (সা) নাম শুনলে তার উপর সালাম নিবেদন করা কারণ, তিরমিযীর একটি বর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

“ঐ ব্যক্তির নাক ধুলি ধুসরিত হোক যার কাছে আমার উল্লেখ করা হয় কিন্তু সে আমার উপর সালাত পাঠ করেনি”।

কিন্তু বর্তমানে বাংলার মাটিতে কী জঘন্য ভাবে দশকের পর দশক কিছু কুলাঙ্গার আমাদের প্রাণ প্রিয় রাসুল (সা) কে নিয়ে, তার পরিবার কে নিয়ে, সাহাবা (রা) কে নিয়ে, ইসলামের বিধি বিধান ও মুসলিমদের নিয়ে একের পর এক কুৎসা রটাচ্ছে।

(সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে অবশ্যই সবচেয়ে নীচ সৃষ্টি হচ্ছে যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারন করে)
[সূরা আল-মুজাদিলাহ্: ২০]

এবং এটা পানির মত পরিষ্কার যে আমাদের শাসকরা প্রতিনিয়ত এদের রক্ষা করার কলাকৌশল ব্যবহার করছে এবং নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহার করছে। বস্তুত এই শাসকরাই আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের সুস্পষ্ট মদদে তাদের মতাদর্শে মোহিত হয়ে এই কুলাঙ্গারদের তৈরি করছে আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্তার মাধ্যমে। যেখানে ইসলামকে শুধু মাত্র ধর্মীয় রীতিনীতি বানিয়ে ইসলামকে সমাজের, রাষ্ট্রের সমস্যা সমাধানের জন্য অক্ষম হিসেবে দেখান হচ্ছে এবং সকল নাস্তিক কুলাঙ্গারদের এর জন্য লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। আর তাদের একের পর এক আক্রমণে মুসলিম উম্মাহর ভালবাসার হৃদয় একের পর এক ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে। আজ আবারও আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের সুস্পষ্ট মদদে এই নাস্তিকরা আস্ফালন দেখাচ্ছিল।

মুলতঃ তাদের মুখ থেকে যা বাহির হয় তাই ঘৃণ্য; তারা যাই বলে তাই মিথ্যা।
(সূরা আল-কাহ্ফ)

আজ মুসলিম উম্মাহর তরুণ-বৃদ্ধ সকলে যখন আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের সুস্পষ্ট মদদপুষ্ট এই নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ঠিক তখনই হাসিনা-খালেদারা আবার ইসলামের এই আন্দোলনকে নিজেদের পকেটে ভরে গণতন্ত্রের নষ্ট নির্বাচনের রাজনীতির মাধ্যমে রাসুল (সা) এর প্রতি আমাদের ভালবাসাকে কলুষিত করতে চেষ্টা করছে।

হে মুসলিম উম্মাহ,

এই হাসিনা-খালেদারা কখনই ইসলামের ভাল চায়নি তারা সবসময় বাক-স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ইত্যাদি কুফরি মতবাদের নামে আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের সুস্পষ্ট মদদপুষ্ট এই সব নাস্তিকদের লালন করেছে। তাই আজ আপনাদের এই আন্দোলনকে তাদের স্বার্থে ব্যবহৃত হতে দিবেন না। বরং এরাই হচ্ছে আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের সুস্পষ্ট মদদপুষ্ট নাস্তিকদের রক্ষক বা নাস্তিকদের মাওলা। তাই আজ আপনাদের আন্দোলন হতে হবে আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের সুস্পষ্ট মদদপুষ্ট হাসিনা-খালেদার বিরুদ্ধে এবং খিলাফত প্রতিষ্টার পক্ষে যাতে বাংলার মাটিতে আর কেউ যেন রাসুল (সা)-এর অপমান করতে না পারে।

হযরত উমর (রা) বলেন, “আল্লাহর শপথ! কুরআন দিয়ে আল্লাহ যতটুকু রক্ষা ও প্রতিহত করেন, রাষ্ট্রশক্তির (খিলাফতের) মাধ্যমে আল্লাহ তার চেয়েও বেশি রক্ষা ও প্রতিহত করেন।” [কানজুল উম্মাল, হাদীস নং: ১৪২৮৪, তারিখে ইমাম আল-খাত্তাবি]

যদি আজ বাংলাদেশে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকতো তাহলে মুসলিমদের এমন অপমানজনক ও দুর্দশাগ্রস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না, নাস্তিকরা উম্মাহর রাসূল (সা) এর বিরুদ্ধে এমন ঘৃণ্য কর্মকান্ড করার দুঃসাহস দেখাতে পারতো না এবং হুঙ্কার দিয়ে শাহবাগে তাদের উপস্থিতি দেখাতে পারতনা, কারণ খিলাফত, ইসলাম ও মুসলিমদের রক্ষাকারী নয় বরং এটা হচ্ছে ঢালস্বরুপ ও দূর্ভেধ্য নিরাপদ এক দূর্গ। প্রিয় মুসলিমগণ! উনিশ শতকের শেষদিকে, ১৮৯০ সালে, ফরাসী লেখক “মারসী ডি বোরেজ” একটি নাটক তৈরি করে ফ্রেঞ্চ কমেডি থিয়েটারে প্রচারের জন্য, যার সমস্ত কাহিনীই রচনা করা হয়েছিল আল্লাহ্ রাসূল (সা) কে অবমাননা করে। বিষয়টি যখন খলীফা সুলতান ২য় আব্দুল হামিদ (রহ) এর কানে গেল, তখন তিনি সাথে সাথে ফরাসী সরকারকে সাবধান করে দিলেন যাতে এ নাটকটি নিষিদ্ধ করা হয় এবং কোন থিয়েটারে যেন মঞ্চস্থ না হয়। সুতরাং, ফরাসী সরকার তা করতে বাধ্য হয় এবং খলীফার কথামত নাটকটি প্রচার নিষিদ্ধ করে এবং খলীফার নিকট চিঠিতে উত্তর পাঠায়: “মহামান্য সুলতানের ইচ্ছামত আমরা যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, তাতে বিশ্বাস আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও উন্নত হবে”, এবং যখন নাটকটির নির্মাতা ফ্রান্সে সুযোগ না পেয়ে ইংল্যান্ডের অ্যালসিওম থিয়েটারে মঞ্চস্থ করার প্রস্তুতি নেয়, এবং যখন বিষয়টি সুলতান আব্দুল হামিদের কানে পৌঁছায়, তিনি সাথে সাথে নাটকটি নিষিদ্ধ করার হুমকি দেন এবং তা নিষিদ্ধ করা হয়। শুধু তাই নয় তৎকালীন পরাশক্তি বৃটেন এ ঘটনার জন্য খলীফার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে।

দেখুন যেখানে বিশ্বের পরাশক্তিরা খলীফার ভয়ে থাকত সেখানে নাস্তিকরাতো চুনোপুটি।

তাই আমি আপনাদের সজাগ করছি যে,

হাসিনা-খালেদার দলীয় স্বার্থে ইসলামের এই আবেগকে ব্যবহার করবেন না, হাসিনা বা খালেদার বিজয় কখনই ইসলামের বিজয় নয় বরং তাদের বিজয় আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের বিজয়। কারণ তারা উভয়ে একই মুদ্রার দুই পিঠ এবং তারা উভয়েই বাংলাদেশে আমেরিকা-ব্রিটেন-ভারতের স্বার্থের রক্ষক এবং মুসলিমদের শত্রুদের বন্ধু। আল্লাহ্‌ বলেন,

হে মুমিনগণ, তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। (মায়েদা: ৫১)

তাই মুসলিমদের এই জাগরণ হতে হবে খিলাফতের উত্থান। পশ্চিমারা ক্রসেড ঘোষণা করেছে এবং এই ক্রসেড ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে; সুতরাং দ্বীন ইসলাম, রাসূল (সা) এবং উম্মাহ্’র পক্ষে অবস্থান নিন এবং জেনে রাখুন এ অবস্থার পরিবর্তন ততক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব নয় যতক্ষণ পর্যন্ত না পূর্বে যেভাবে সমাধান হয়েছিল ঠিক একইভাবে সমাধান না করা হয় অর্থাৎ নবুয়্যতের আদলে খিলাফায়ে রাশেদাহ্ প্রতিষ্ঠিত না হয়। সুতরাং খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগকারীদের সাথে যোগ দিন, তাদের সমর্থন করুন, একমাত্র খিলাফত উম্মাহ্ ও তার সম্মান রক্ষা করবে এবং যালিমদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ্ ও তার রাসূলের ডাকে সাড়া দাও, যখন তোমাদের সে কাজের প্রতি আহবান করা হয়, যা তোমাদের মাঝে জীবনের সঞ্চার করে। (আনফাল: ২৪)

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply