চট্টগ্রামে ইসলামের বিজয়: আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ তার এক জ্বলন্ত নিদর্শন

আজকাল ইসলাম ও রাজনীতি এ দুটিকে এক করে দেখতে চান না। এটি সম্ভবত কয়েক শতকের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার শাসন তারপর তাদের ষড়যন্ত্রে ভারত পাকিস্তান নামে অখণ্ড ভারতের বিভক্তি, পাকিস্তানের জালেম শাসকদের দ্বারা শোষণ, পরবর্তী বাংলাদেশের একের পর এক ব্রিটিশ আমেরিকার দালাল শাসকদের দ্বারা জুলুম অত্যাচারের শিকার হেতু তারা ইসলামকে স্বরূপে দেখতে না পাওয়ার কারণে হয়েছে। তায় এটি অনেক ধর্ম প্রাণ মুসলিমো আজকাল ইসলামকে রাজনীতিতে দেখতে চান না। তায় বাংলাদেশের শহর গ্রাম মফস্বল সর্বস্তরের জনগণ অসচেতনতার সহিত Secularism ধারণ করে যাচ্ছে। ইসলামকে ব্যক্তিগত ইবাদত বন্দেগির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই। যদি এমনই হত ইসলামের Approach তবে আপনি মুসলিম হিসাবে যে গর্ববোধ করেন তার ছিটেফোটাও আপনি পেতেন না যদি আপনার কাছে ইসলাম রাজনৈতিকভাবে Approach না করত। আপনি হয়ত ‘জীব হত্যা মহাপাপ’ বলে মুসলিম হত্যা করার ধর্মে দীক্ষিত হতেন, অথবা মুসলিম থাকলে মগদের শোষণের শিকার হতেন। তায় আপনার Root সম্পর্কে জানাটা অত্যাবশ্যক। কিভাবে আপনাকে ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্র মোগল শাসকদের দ্বারা মগদের অত্যাচার হতে রক্ষা করেছিল। আপনারা আজ অনেকে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে জুমার নামায বা ওয়াক্তিয়া নামায পড়তে আসেন। কিন্তু জানেন কি এই মসজিদের প্রতিটা ইট কিসের ইতিহাস ধারণ করে।

এই কিল্লা বা কেল্লায় মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আস্তানা ছিলো। বর্তমানে যেখানে জেনারেল হাসপাতাল অবস্তিত ঔ পাহাড়ে মগদের দুর্গ ছিল। মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব আলমগীর এর শাসনামলে তাঁর নির্দেশে চট্টগ্রামের জনসাধারণকে বিশেষ করে নির্যাতিত, নিপীড়িত মুসলমানদের পর্তূগীজ জলদস্যূ ও আরাকানী মগদের নিষ্ঠুর লুন্ঠন ও অত্যাচার থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন বাংলার শাসনকর্তা নওয়াব শায়েস্তা খাঁন তাঁর ছেলে উমেদ খানকে মগ লুটেরা ও পর্তূগীজ জলদস্যূদের কবল হতে চট্টগ্রামকে পুনরূদ্ধারের আদেশ দেন। এ আদেশের প্রেক্ষিতে উমেদ খাঁন ১৩ হাজার সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে ফেনী নদী পার হয়ে বীর বিক্রম হুসেন বেগের সহায়তায় চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় প্রবেশ করেন এবং শত্রু সৈন্যদের পরাজিত ও বিতাড়িত করেন। সম্রাট আওরঙ্গজেব এই মহান বিজয়ের সংবাদ পেয়ে খুবই খুশী হন। ঐ সময় (২৭-০১-১৬৬৭ খ্রি: তারিখ) হতে চট্টগ্রামে মুসলমান রাজত্বের সূচনা হয় এবং এক শাহী ফরমানে চট্টগ্রামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘‘ইসলামাবাদ’’। সম্রাটের নির্দেশে এই মহান বিজয়ের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য উমেদ খাঁন হিজরী ১০৭৮ সালে (১৬৬৭ খ্রি:) ‘আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদ’ প্রতিষ্ঠা করেন। নিরাপত্তা পায় মুসলিমরা, সুরক্ষিত হয় ইসলাম।

ইসলাম যদি রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষা না পায় তাহলে মুসলিমদের অবস্থা হবে আজ আপনার আমার মত কোটি মুসলিমদের মতই, যারা কিনা নিজ ভূখন্ডেই নির্বাসিত। একমাত্র রাষ্ট্রই পারে ইসলামকে সুরক্ষা দিতে। উমর ফারুক (রা) বলেন


“আল্লাহ কুরআন দিয়ে ইসলামকে যতটা সুরক্ষা দেন, রাষ্ট্র দ্বারা তার চেয়ে বেশী দেন” [কানযুল উম্মাল]


তাই ২০১৩ সালে এসে যে মুসলিমরা বলে ইসলামে কিসের রাজনীতি তাকে ধরেই নিতে হবে সে তার অস্তিত্বকে অস্বীকারকারী।

আসিফ রহমান আতিক

Print Friendly, PDF & Email

শাহবাগে রাজনীতি

Leave a Reply