[নিম্নোক্ত প্রবন্ধটি প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক শাইখ তাকী উদ্দীন আন-নাবহানি (রাহিমাহুল্লাহ) কর্তৃক লিখিত ‘আদ-দাওলাতুল ইসলামীয়্যাহ’ (ইসলামী রাষ্ট্র) বইটির খসড়া অনুবাদ-এর একাংশ হতে নেয়া হয়েছে]
মুহাম্মদ (সা) বনু সাকিফ এবং তায়েফ গোত্র কর্তৃক নির্মম আঘাতে ক্ষতবিক্ষত এবং হজ্জের মৌসুমে কিন্দা, কালব, বনু ’আ-মির ও বনু হানিফা কর্তৃক সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাখ্যাত হবার পর থেকেই মূলতঃ আল্লাহর রাসূল (সা) এবং তাঁর সাহাবীদের প্রতি কুরাইশদের সহিংসতা চুড়ান্ত আকার ধারন করে। এ অবস্থা কুরাইশদের মুহাম্মদ (সা) এবং তাঁর দলকে সমাজ ও বর্হিজগৎ থেকে আরো বিচ্ছিন্ন করার সুযোগ তৈরী করে দেয়। কিন্তু এ সমস্ত ঘটনা আল্লাহর রাসূল (সা) ও তাঁর সাহাবীদের দৃঢ় ঈমানে না কোন ফাটল ধরাতে পারে, না তারা আল্লাহর প্রতিশ্রুত বিজয়ের ব্যাপারে কখনো সন্দেহ প্রকাশ করেন। বরং, তারা শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত সত্য পথের উপর অবিচল ভাবে দন্ডায়মান থাকে।
এভাবে, মুহাম্মদ (সা) তাঁর দাওয়াতী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন এবং পরিণাম নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত না হয়ে যখনই সম্ভব বিভিন্ন গোত্রের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে থাকেন। কুরাইশ সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে কেউ কেউ চেষ্টা করেছে তাঁর আনীত দ্বীনের ভবিষ্যত নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও ঠাট্টা তামাশা করতে, কিন্তু তিনি এসব কটুক্তি বা হীন মন্তব্যে কখনো কান দেননি বা ইসলামের বিজয়ের ব্যাপারে এতোটুকু সন্দেহ প্রকাশ করেননি। তিনি জানতেন আল্লাহতায়ালা তাকে তাঁর রাসূল হিসাবে পাঠিয়েছেন। তাই, তাঁকে (সা) সবরকম ক্ষতি থেকে রক্ষা করা এবং তাঁর মনোনীত দ্বীনকে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করা তাঁরই দায়িত্ব। তাই তিনি দাওয়াতী কার্যক্রম সন্তুষ্ট চিত্তে আল্লাহর সাহায্যের অপেক্ষা করেছেন।
সৌভাগ্যবশত ইসলামের বিজয়ের জন্য মুহাম্মদ (সা)-কে খুব বেশীদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। হজ্জ্বের মৌসুমে ইয়াসরিব (মদীনা) থেকে আগত আল-খাযরাজ গোত্রের একদল মানুষ যখন আল্লাহর রাসূল (সা) এর আহবানে ইসলাম গ্রহণ করলো তখনই তাঁর আনিত দ্বীনের বিজয়ের লক্ষণগুলো সুস্পষ্ট ভাবে প্রকাশিত হতে থাকলো।
আল্লাহর রাসুলের (সা) আহবান শোনার পর তারা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে বলে, “আল্লাহর কসম, এই হচ্ছে সেই নবী যার কথা আমরা ইহুদীদের কাছে শুনেছি এবং আমরা তাঁকে (আল্লাহর রাসূল (সা)-কে) কোন অবস্থাতেই আমাদের পূর্বে তাদের স্বীকৃতি দেবার সুযোগ দেবো না।”এরপর তারা রাসূল (সা)-এর আহবানে সাড়া দেয় এবং ইসলাম গ্রহণ করে। They said to him, “we have left our people (Aws & Khazraj), for no tribes are so divided by hatred and rancor as they. Perhaps Allah will unite them through you, if so, then no man will be mightier than you.”
ইয়াসরিবে ফিরে যাবার পর তারা নিজ গোত্রের লোকদের মুহাম্মদ (সা) এর কথা জানায় এবং ইসলাম এর দিকে আহবান করে। তারা সেখানকার মানুষের হৃদয় ও অন্তরকে সত্য দ্বীন গ্রহন করার জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হয় এবং আউস ও খাযরাজ গোত্রের প্রতিটি ঘরে ঘরে মুহাম্মদ (সা) আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়।