چین و عرب ہمارا، ہندوستان ہمارا
مسلم ہیں ہم، وطن ہے سارا جہاں ہمارا
“চীন ও আরাব হামারা, হিন্দুস্তান হামারা,
মুসলিম হ্যায় হাম, ওয়াতান হ্যায় সারা জাহাঁ হামারা…”
– ১৯১০ সালে মুসলিম উম্মাহকে নিয়ে লেখা আল্লামা ইকবাল [১৮৭৭-১৯৩৮]-এর বিখ্যাত গান “তারানা-ই-মিল্লি” [জাতীয় সঙ্গীত] এভাবেই শুরু। ইকবাল যখন বলছিলেন: “চীন ও আরব আমাদের, ভারতবর্ষ আমাদের / মুসলিম আমরা, সারা পৃথিবীই আমাদের দেশ…” – তখন ইকবাল কি “চীন” বলতে আমরা এখন যে “চীন” রাষ্ট্রকে চিনি, সেটাকে বুঝিয়েছিলেন? এই “চীন” তো কখনোই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল না! তাহলে?
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, এই প্রশ্নের উত্তরেই লুকিয়ে আছে “উইগুর” নামে বিশ্বের এক নিপীড়িত জাতির পরাধীনতার শৃঙ্খল।
আসলে ইকবালের সময়কালে “চীন” বলতে বর্তমান মধ্য এশিয়াকে বোঝাত – কোনো একক রাষ্ট্র বা রাজত্বকে বোঝাত না।
সেই মধ্য এশিয়ার আরেকটি প্রাচীন পরিচয় “তুর্কিস্তান” নামে। এই নামে অবশ্য কখনো কোনো স্বাধীন দেশ তৈরি হয়নি। “তুর্কিস্তান” শব্দের আক্ষরিক অর্থ “তুর্কিদের দেশ”। পারস্যের ভূগোলবিদরা প্রাচীন তুর্কি জাতিসমূহের আবাসস্থল বোঝাতে সর্বপ্রথম “তুর্কিস্তান” শব্দের ব্যবহার করেন। বর্তমান ইরান থেকে চীন পর্যন্ত মধ্য এশিয়ার বিশাল এলাকাটিকেই “তুর্কিস্তান” হিসেবে অভিহিত করা হতো। ইরানের উত্তরে তুর্কিস্তান ও দক্ষিণে মক্কার অবস্থান ছিল বলেই ইরানের বিখ্যাত কবি শেখ সাদী মানবজীবনের লক্ষ্য ও পথের বৈপরীত্য বোঝাতে লেখেন:
ترسم نرسی به کعبه ای اعرابی
این ره که تو میروی به ترکستان
[তারসাম না রসি বা-কাবা এ্যায় আরাবী
ই রাহকে তু মিরোবি বা-তুর্কিস্তানাস্ত]
“আমার ভয় হচ্ছে তুমি কাবায় পৌঁছাবে না, হে যাযাবর!
কারণ তুমি যেদিকে যাচ্ছ, তা তুর্কিস্তানের পথ।”
[“গুলিস্তাঁ“, দ্বিতীয় অধ্যায়, ষষ্ঠ কাহিনী থেকে উদ্ধৃত]
আসলে গত শতাব্দীতে জাতিরাষ্ট্রগুলোর সীমানা নির্ধারিত হওয়ার আগে আরব, চীন, ভারত, পারস্য বা তুর্কিস্তান বলতে কোনো নির্দিষ্ট দেশকে বোঝাত না, বরং একেকটি বিস্তৃত এলাকাকে বোঝাত। এসব এলাকার রাজনৈতিক সীমানা বা রাষ্ট্রীয় আকার একেক সময় একেক রকম হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সীমানার এসব ভাঙাগড়ার মাঝেই কোনো কোনো জনগোষ্ঠী আটকে গেছে জাতিরাষ্ট্রের সীমান্তের কাঁটাতারে। রোহিঙ্গারা যেমন আটকে গেছে উগ্র বার্মিজ জাতীয়তাবাদের কাছে, তেমনিভাবে চীনের উগ্র জাতীয়তাবাদী আগ্রাসনে আটকে গেছে উইগুর জনগোষ্ঠী। দ্বন্দ্বের নেপথ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের মতোই জাতিরাষ্ট্রের সীমানা, ভাষা ও ধর্মের পার্থক্য।
তুর্কিস্তানের পূর্ব অংশে উইগুর জনগোষ্ঠীসহ মধ্য এশিয়ার আরো আরো কিছু তুর্কি জনগোষ্ঠী [যেমন, উজবেক, কিরগিজ, কাজাখ, তাজিক ইত্যাদি] বাস করে। এই পূর্ব তুর্কিস্তানের অবস্থান চীনের সীমানা নির্দেশক বিখ্যাত মহাপ্রাচীরের বাইরে। তাই পূর্ব তুর্কিস্তান ঐতিহাসিকভাবে চীনের অংশ নয়, বরং মধ্য এশিয়ার অংশ। তবে বর্তমানে ওই অঞ্চলটি শিনচিয়াং (Xinjian) নামে চীনের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রদেশ।
উইগুররা পূর্ব তুর্কিস্তানে কবে থেকে বসবাস করে – সেটা নিয়ে উইগুরদের ও চীনা সরকারের পরস্পরবিরোধী মতামত আছে। উইগুর স্কলার মুহাম্মদ আমিন বুগরা দাবি করেন, উইগুররা ওই অঞ্চলে অন্তত ৯০০০ বছর আগে থেকে বসবাস করছে। আরেক উইগুর স্কলার তুরগুন আলমাসের মতে, তুর্কিস্তানে উইগুরদের বসবাস ৬৪০০ বছরের বেশি সময় ধরে। ওয়ার্ল্ড উইগুর কংগ্রেসের মতে, ৪০০০ বছরের বেশি সময় ধরে উইগুরদের পূর্ব তুর্কিস্তানে বসবাসের তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
অন্যদিকে চীনা সরকারের দাবি, নবম শতাব্দীতে উইগুররা মঙ্গোলিয়া থেকে ওই অঞ্চলে বসবাসের জন্য আসে।
তবে পূর্ব তুর্কিস্তান/শিনচিয়াং (Xinjian) অঞ্চলে প্রাপ্ত প্রাচীন মমি বিশ্লেষণ করে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, উইগুরদের তুর্কি পূর্বপুরুষরা অন্তত খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ সাল থেকে সেখানে বসবাস করত।
আসলে ইউরোপের বিভিন্ন যাযাবর গোত্র আজ থেকে ৬ হাজার বছর আগে থেকেই মধ্য এশিয়া ও চীনের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ি জমায়।
চীনের প্রাচীন ইতিহাসেও উল্লেখ আছে, চীনের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের বাইরে “লম্বা চুলবিশিষ্ট সাদা দেহের” [ইউরোপিয়ান] মানুষরা বসবাস করতো। [“The Tarim Mummies”, J. P. Mallory and Victor H. Mair, p. 55]
পূর্ব তুর্কিস্তান/শিনচিয়াং (Xinjian) অঞ্চলে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকেই বিভিন্ন যাযাবর গোত্রের স্বাধীন কনফেডারেশন শিয়োগনু (Xiongnu) শাসন চলছিল।
প্রাচীন বাণিজ্য পথ Silk Route এই অঞ্চল দিয়েই চীন থেকে ইউরোপের দিকে গেছে। ফলে এই অঞ্চলটির স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব ছিল ব্যাপক।
খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে চীনের হান সম্রাট উ (Wu) প্রথমবারের মতো পূর্ব তুর্কিস্তান অঞ্চলটি চীনের দখলে নেয়। তখন এই অঞ্চলটির চীনা নাম ছিল শিয়ু (Xiyu) যার অর্থ পশ্চিম অঞ্চল।
ইসলামের আবির্ভাবের আগে উইগুররা মূলত বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী ছিল। উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবন আবদুল মালিকের শাসনামলে (৭০৫-৭১৫) খোরাসানের গভর্নর কুতায়বা ইবন মুসলিম মধ্য এশিয়া/তুর্কিস্তানের বিশাল ভূখণ্ডকে উমাইয়া খিলাফতের অধীনে আনেন। কুতায়বা ৭১৫ সালে চীনের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে পূর্ব তুর্কিস্তানের তৎকালীন রাজধানী কাশগর জয় করেন। চীনে তখন তাং রাজবংশের শাসন চলছিল এবং সেটা ছিল চীনা সভ্যতার স্বর্ণযুগ। কাশগর জয়ের পর কুতায়বা চীনের মাটিতে পা রাখার শপথ নেন এবং তাঁর নিয়ে সেনাবাহিনী চীনের প্রাচীরের দিকে অগ্রসর হন। চীনের তৎকালীন রাজা শুয়ানজং (Xuanzong) আরব সৈন্যদের আগমনের সংবাদে এতটাই ভীত হয়ে পড়েন যে, তিনি একটি প্রতিনিধি দলকে চীনের মাটিসহ কুতায়বার কাছে পাঠান এবং বলেন যে, তিনি উমাইয়া খিলাফতকে জিজিয়া কর দিতে রাজি আছেন এবং কুতায়বা আর না এগিয়ে রাজার পাঠানো চীনের মাটিতে পা রেখে তাঁর শপথ পূরণ করুক!
তবে উমাইয়া খিলাফতের অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে কুতায়বাকে ফিরে আসতে হয় এবং পূর্ব তুর্কিস্তান আবারও চীনাদের দখলে চলে যায়।
পরবর্তীতে মধ্য এশিয়ার তুর্কি সেনাপতি সুলতান সাতুক বুগরা খান গাজী [মৃত্যু: ৯৫৫ সাল] দশম শতাব্দীর মাঝামাঝিতেতে কাশগর পুনরায় জয় করেন এবং পূর্ব তুর্কিস্তানে ইসলামী শাসন চালু করেন।
তখন থেকে উইগুররা ইসলাম গ্রহণ করা শুরু করে। তুর্কি Kara-Khanid Khanate-দের শাসনামলে পূর্ব তুর্কিস্তান ও রাজধানী কাশগর ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়। এ-সময়ে শত শত উইগুর মুসলিম স্কলার পুরো দুনিয়ায় খ্যাতিমান হন, হাজার হাজার গ্রন্থ এ-সময়ে রচিত হয়। বিখ্যাত উইগুর স্কলার আল্লামা আবদুর রহমান কাশগরী (১৯১২-১৯৭১) ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসায় ১৯৬০-এর দশকে “হেড মাওলানা” ছিলেন। তাঁর নামে আলিয়া মাদ্রাসায় একটি হল আছে। তাঁর কবর আজিমপুর গোরস্তানে।
১৮৭৬ সাল পর্যন্ত পূর্ব তুর্কিস্তানে সমৃদ্ধ ইসলামী রাজত্ব চালু থাকে। চীনের মাঞ্চু সাম্রাজ্য ওই বছর থেকে পূর্ব তুর্কিস্তানে ব্যাপক আক্রমণ চালায়। ১৮৭৬ সালের আগস্টে চীনা জেনারেল Zuo Zongtang-এর নেতৃত্বে পূর্ব তুর্কিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ উরুমচি (Ürümqi) শহর দখল করে নেয় চীনারা। পরের বছর রাজধানী কাশগরের পতন ঘটে। এভাবে ধাপে ধাপে পুরো পূর্ব তুর্কিস্তান মুসলিমদের হাত থেকে চীনাদের হাতে চলে যায় এবং ১৮৮৪ সালের ৪ নভেম্বর চীনের মাঞ্চুরা পূর্ব তুর্কিস্তানকে “শিনচিয়াং” (Xinjian অর্থ নতুন সীমান্ত) নামে চীনের নতুন প্রদেশে পরিণত করে। তখন থেকেই উইগুর মুসলিমদের পরাধীনতা ও জাতিগত দুর্দশার সূচনা হয়। এই সময়কালেই আল্লামা ইকবাল তাঁর “তারানা-ই-মিল্লি”-তে লেখেন: “চীন ও আরাব হামারা” অর্থাৎ তুর্কিস্তান মুসলিমদেরই। কিন্তু মধ্য এশিয়ার ওই প্রান্তটি কি উইগুরদের দাবিকৃত পূর্ব তুর্কিস্তান, নাকি চীনাদের দাবিকৃত Xinjian (নতুন সীমান্ত) – সেই প্রশ্নের মীমাংসাতেই এখনো আটকে আছে ওই এলাকাতে বসবাসরত দেড় কোটি উইগুরের জাতিগত আত্মপরিচয়।
১৯১১ সালে চীনের বিপ্লবী জাতীয়তাবাদীরা চীনের মাঞ্চু রাজবংশকে উৎখাত করে এবং সান ইয়াত-সেনের নেতৃত্বে চীন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। চীনাদের পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেতে উইগুররা লড়াই চালিয়ে যায়। বিশেষত ১৯৩৩ সালে ও ১৯৪৯ সালে দু’টি স্বল্পমেয়াদী স্বাধীন “পূর্ব তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্র” গঠিত হয়েছিল।
১৯৪৯ সালে চীনে মাও সেতুং-এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৯ সালে গঠিত স্বাধীন “পূর্ব তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্র”-কে মাও বন্দুকের জোরে তাঁর নবঘোষিত গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। মাওয়ের নিজেরই বিখ্যাত উক্তি: “Political power grows out of the barrel of a gun”. [বন্দুকের নলই সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস]
মাও বলতেন, “Politics is war without bloodshed while war is politics with bloodshed”. মাও তাঁর নিষ্ঠুর সেনা অফিসার Wang Zhen-কে স্বাধীনতাকামী উইগুরদের উপর লেলিয়ে দেন। জেনারেল Wang Zhen-এর নেতৃত্বাধীন সেনা অভিযানে ১০ লক্ষাধিক উইগুর নিহত হয়, প্রায় ২৫ হাজার মসজিদ ধ্বংস করা হয়। Wang Zhen ছিলেন শিনচিয়াংয়ে মাওয়ের নিয়োগকৃত সামরিক সরকারের প্রধান। তিনি ভয়াবহ নৃশংসতার জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। তিনি Xinjian থেকে মাও-কে লিখতেন যে, উইগুররা হচ্ছে “গোলযোগ সৃষ্টিকারী সংখ্যালঘু” (a troublemaking minority) এবং পরামর্শ দিতেন যে, ভবিষ্যৎ সমস্যা এড়ানোর জন্য উইগুরদেরকে “সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন” (thoroughly wiped out) করে দিতে হবে!
বোঝাই যাচ্ছে কেন উইগুর মায়েরা তাদের শিশুদের ভয় দেখায় যে, “ভালো হয়ে যাও, নয়তো Wang Zhen এসে তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে!” ১৯৯৩ সালে চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে Wang Zhen-এর মৃত্যু ঘটলে তাঁর মৃত্যুসংবাদে The New York Times লিখেছিল:
After the Communist victory in 1949, Wang Zhen was assigned to tame the northwest Xinjiang region, home to Muslims of Turkish extraction. He subdued the area with efficiency and brutality, and it is said that some mothers in Xinjiang still warn their children to be good “or else Wang Zhen will come and get you.”
উইগুরদের প্রতি চীনা কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ এখনো একই রকম আছে। ব্যাপক নির্যাতন, গ্রেফতার, গুম ইত্যাদি উইগুরদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ! উইগুর মুসলিমদের রোজা, হিজাব, দাড়ি সবকিছুতেই চীনা সরকার বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তেলসহ অন্যান্য খনিজ সম্পদে ভরপুর Xinjian প্রদেশটিতে চীনারা নিয়মিতই বিভিন্ন পারমাণবিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সামরিক প্রশিক্ষণ চালাতে থাকে। The Economist-এর ভাষায়, চীনের অধীনে Xinjian প্রদেশটি “বিশ্বের নজিরবিহীন পুলিশি রাষ্ট্র”-তে পরিণত হয়েছে।
দশ লক্ষাধিক উইগুরকে চীনারা বন্দি রেখেছে বলে জাতিসংঘের একটি কমিটির সাম্প্রতিক তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষ খবরটি পুরোপুরি অস্বীকার করেনি, তবে তাদের ভাষায় ওই ১০ লক্ষাধিক উইগুর কোনো বন্দিশিবিরে নয়, বরং Re-education ক্যাম্পে আছে!
চীনের এসব তথাকথিত Re-education ক্যাম্প যে কেমন, সেটা বোঝা যায় সেখান থেকে পালিয়ে অন্য দেশে চলে যেতে সক্ষম হয়েছেন এমন উইগুর নাগরিকদের বক্তব্যে। এরকম কয়েকজনের সাথে কথা বলেছে বিবিসি। ওমির নামে একজন উইগুর বলেছেন, “তারা আমাদের ঘুমাতে দেয়নি। কয়েক ঘণ্টা ধরে আমাকে ঝুলিয়ে রেখে পেটানো হতো। কাঠ ও রবারের লাঠি দিয়ে পেটাতো। তার দিয়ে বানানো হতো চাবুক। সুই দিয়ে শরীরে ফুটানো হতো। প্লাইয়ার দিয়ে তুলে নেয়া হতো নখ। আমার সামনে টেবিলের ওপর এসব যন্ত্রপাতি রাখা হতো। এসময় অন্যরা যে ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করত সেটাও আমি শুনতে পেতাম।”
চীনের দেড় কোটি উইগুর মুসলিম কেন এমন ভয়াবহ পরিবেশে আছেন, সেটার উত্তর হয়ত আল্লামা ইকবাল ও শেখ সাদী তাঁদের উপরে উদ্ধৃত লেখাতেই দিয়ে গেছেন: বৈশ্বিক ভ্রাতৃত্ব ভুলে মুসলিম উম্মাহ এখন কাবার পথ ছেড়ে উল্টো পথে চলতে শুরু করেছে। তাই এখন আর খলিফা ওয়ালিদের মতো কোনো রাষ্ট্রপ্রধান নেই, তাই এখন আর কুতায়বা কিংবা সুলতান বুগরা খানের মতো কোনো সামরিক কমান্ডার নেই!
লিখেছেনঃ Sk Omar Rasel
মূল লেখাঃ উইগুর: দশ লক্ষাধিক বন্দির মুসলিম জনগোষ্ঠী