ভাবতে খুব আশ্চর্যজনক লাগে যখন লোকজন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ না করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আরও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মুসলিমদের মধ্যে কেউ কেউ ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজটিকে সাধারণ শরীয়া দায়িত্ব মনে করে এবং এটিকে অন্য হুকুমের উপর অগ্রাধিকার প্রদান করে না।
এমনকি আরও বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করা যায় যে, অনেক মুসলিমগন শরীয়া বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বশীল খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ না করে বর্তমান শাসনব্যবস্থার মধ্যে শরীয়া হুকুম বাস্তবায়ন করতে চায়।
সুতরাং আমরা অবশেষে বলতে পারি যে, সামষ্টিক দায়িত্বসমূহের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অনিবার্য বাধ্যবাধকতা হল ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা-যা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী পরিচালিত হয়। আজকে মুসলিমদের একটি অংশ এ দায়িত্ব পালন করছে। তবে তারা অপরিহার্যতা পূরণে সক্ষম নয়। কেননা ইসলামী রাষ্ট্র এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। একারণে পুর্বের আলোচনার মত এ সামষ্টিক বাধ্যবাধকতাটি ব্যক্তিপর্যায়ের বাধ্যবাধকতা হিসেবে পরিগণিত হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক মুসলিমকে তার সামর্থ অনুযায়ী ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে।
সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সা) সঠিক ও সুনির্ধারিত পদ্ধতি হল যে, মুসলিমগন আল্লাহ নির্দেশিত ফরযে আইনসমূহ সর্ম্পকে শিক্ষা নিবে। সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কতৃক নির্দেশিত নিষেধসমূহ সর্ম্পকেও জ্ঞান অর্জন করবে। তারপর তাকে সামষ্টিক বাধ্যবাধকতা বা ফরযে ক্বিফায়ার দিকে যেতে হবে এবং তার সামর্থ অনুযায়ী সেগুলো সম্পাদনের অংশগ্রহণ করতে হবে। জ্ঞানার্জনের পর আমাদেরকে সবচেয়ে বড় সামষ্টিক বাধ্যবাধকতা খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে-যা ইসলামের অধিকাংশ সামষ্টিক ও ব্যক্তিপর্যায়ের হুকুম বাস্তবায়নের পদ্ধতি।
এইভাবে একজন মুসলিম নিজেকে বিচার দিবসের জন্য প্রস্তুত করে যেখানে সে তার কৃতকর্মের জন্য আল্লাহসুবহানাহু ওয়া তা’আলার সামনে জিজ্ঞাসিত হবে। কারণ সে ব্যক্তি পর্যায়ের সকল বাধ্যবাধকতা পালন করেছে ও নিষিদ্ধ কর্মকান্ড থেকে বিরত থেকেছে। তিনি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক বাধ্যবাধকতা পালন করেছেন-যা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অনেক বাধ্যবাধকতা পালন না করার গোনাহ থেকে মুক্ত হয়েছেন। এ উপায়ে মুসলিমগন সব দিক দিয়ে সত্যকে ধারণ করতে সক্ষম হবে। অর্থাৎ সে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে যাতে করে তার ব্যক্তিগত জীবনে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয। তিনি এমন ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছেন যাতে সমাজের মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়। যদি অন্যকিছু যা এখন পর্যন্ত গ্রহন করা হয়নি তা হয়ত হবে সামষ্টিক বাধ্যবাধকতার খুবই সামান্য অংশ। এই ধরনের বাধ্যবাধকতার প্রকৃতি সামষ্টিক নয় (যেমন, হাঁচি দিলে কারও জন্য দোয়া করা বা কারও জানাযার নামাজ আদায় করা) বরং ব্যক্তিপর্যায়ের।