আল কুরআন এর সংজ্ঞা

কুরআনের সংজ্ঞা নিম্নরূপ,

এটি আল্লাহর কালাম যা তাঁর বান্দা মুহাম্মদ (সা) এর উপর আরবী ভাষায় নাযিল হয়েছে। এটি একটি মু’জিযা এর সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সূরার ক্ষেত্রেও। এটি লিপিবদ্ধ আছে এবং আমাদের কাছে এটি মুতাওয়াতির বর্ণনায় এসে পৌছেছে। এর পঠন এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর ইবাদত করি এবং সূরা ফাতেহা দিয়ে এর শুরু এবং সূরা নাস দিয়ে এর সমাপ্তি।

উপরোক্ত সংজ্ঞা থেকে বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। প্রথমত এটি আল্লাহ-র কালাম। এবং সেই কালাম যা হচ্ছে অলৌকিক (এ’জাজ)। কোরআনের এ’জাজ হচ্ছে এর অতি উচ্চমাত্রার বাগ্মীতা বা বাকশৈলিতা। এবং আল্লাহর অন্য কোনো কথা এ কোরআনের অংশ হবে না, উদাহরনসরূপ: হাদিসে কুদসী।

দ্বিতীয়ত সম্পূর্ণ কোরআনই আরবী ভাষায় নাযিলকৃত। এটি সম্পূর্ন আরবী এবং এতে কোনো বিদেশী শব্দ নেই। ইমাম শাফী’ তার আর-রিসালাহ গ্রন্থে বলেন: ‘‌আল কোরআন এই দিক নির্দেশনা দেয় যে আল্লাহর কিতাবের কোনো অংশই আরবী ভাষার বাইরে নয়…।’ যারা এ ধরনের মতামত ব্যক্ত করেন যে কোরআনে অনারব শব্দ বিদ্যমান, তারা হয়তো কিছু শব্দ পেয়েছেন যা কিছু আরবের কাছে অপরিচিত। কিন্তু যেহেতু শব্দগুলো কোরআনে এসেছে, তাই সেসব শব্দ আরবী শব্দ হিসেবেই বিবেচিত হবে। অসংখ্য আয়াত এ নির্দেশনা দেয় যে কোরআন সম্পূর্ন আরবী ভাষায় নাযিলকৃত। যেমন:

نَزَلَ بِهِ الرُّوحُ الأمِينُ ~ عَلَى قَلْبِكَ لِتَكُونَ مِنَ الْمُنْذِرِينَ ~ بِلِسَانٍ عَرَبِيٍّ مُبِينٍ

“বিশ্বস্ত রুহ একে নিয়ে অবতরন করেছে। আপনার হৃদয়ে, যাতে আপনি ভীতি প্রদর্শনকারীদের অন্তর্ভূক্ত হন। সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়”। [সূরা শু’আরা: ১৯৩-১৯৫]

وَكَذَلِكَ أَنْزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا

“এমনিভাবে আমি এ কোরআনকে আরবী ভাষায় নির্দেশরুপে নাযিল করেছি”। [সূরা রাদ: ৩৭]

وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا

“এমনিভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি”। [সূরা শুরা: ৭]

قُرْآنًا عَرَبِيًّا غَيْرَ ذِي عِوَجٍ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ

“আরবী ভাষায় এ কোরআন বক্রতামুক্ত, যাতে তারা সাবধান হয়ে চলে”। [সূরা যুমার: ২৮]

وَلَقَدْ نَعْلَمُ أَنَّهُمْ يَقُولُونَ إِنَّمَا يُعَلِّمُهُ بَشَرٌ لِسَانُ الَّذِي يُلْحِدُونَ إِلَيْهِ أَعْجَمِيٌّ وَهَذَا لِسَانٌ عَرَبِيٌّ مُبِينٌ

“আমরা তো ভালোভাবেই জানি যে, তারা বলে: তাকে জনৈক ব্যাক্তি শিক্ষা দেয়। যার দিকে তারা ইঙ্গিত দেয় তার ভাষাতো আরবী নয়, এবং এ কোরআন পরিষ্কার আরবী ভাষায়।” [সূরা নাহল: ১০৩]

কোরআনের অনুবাদও কোরআন বলে গন্য হবে না তা যতই বিশুদ্ধ হোক না কেন। এ কারণেই আমরা অনুবাদ হতে আহকাম আহরন করতে পারি না, অনুবাদ দিয়ে নামাযও পড়া যায়না এবং অনুবাদ পঠনে ইবাদতও হয়না।

তৃতীয়ত, কোরআন আমাদের মাঝে মুতাওয়াতির বর্ণনার মাধ্যমে এছে পৌছেছে যা একে নিশ্চিত বিশুদ্ধতা দান করে। এটি আমাদের কাছে রাসূলুল্লাহ (সা) এর সময় হতে মুখস্থ ও লিখিতরূপে আজকের দিন পর্যন্ত এসে পৌছেছে।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply