হাদীসে উল্লিখিত “আল-বাইয়াহ” শব্দের অর্থ ‘খলীফাহ ও উম্মাহর মধ্যে চুক্তি’। “আল-বাইআহ” শব্দটি কি একটি ভাষাগত (হাকীকি) অর্থ নাকি আইনগত (শরঈ) অর্থ?
“বাইয়াহ” শব্দটি একটি আইনগত (শরঈ) অর্থ, এটি প্রথাগত (শাব্দিক) অর্থ বা একটি নির্দিষ্ট প্রথাগত (ইসতিলাহি) অর্থ নয়। কারণ এর সংজ্ঞা আইনপ্রণেতা (আল্লাহ) দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, ঐতিহ্য (উরফ) দ্বারা নয়।
এর ব্যাখ্যা হচ্ছে, আরবি ভাষায় “বাইয়াহ” বিক্রি (আল-বাই’) এবং ক্রয় (আল-শিরা’) থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
ب ي ع (অক্ষর): Ba ya ‘Aa: একটি জিনিস “সে বিক্রি করেছে”; “সে এটি বিক্রি করে” “এটি বিক্রি করছে” … [মুখতার আল-সিহাহ]
বা’আহু: বিক্রি করা, ক্রয় করা…[আল-কামুস আল-মুহীত, অভিধান]
বাই’য়: বিক্রি করা: ক্রয়ের বিপরীত। বিক্রয়: এছাড়াও বিক্রি, যে এছাড়াও বিপরীত শব্দ; জিনিস বিক্রি, ক্রয় ইত্যাদি… [সাধারণ ভাষা]
ইসলামী আইন (শর’ঈ) বাই’আহ শব্দের একটি ভিন্ন অর্থ নির্দেশ করে যা হল: খলীফা নিয়োগের পদ্ধতি (তারীকা) এবং এই পদ্ধতিটি কুরআন, সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যমতে স্থির করা হয়েছে, যা বাইয়াতের মাধ্যমে করা হয়েছে। সুতরাং খলীফা সেই মুসলমানদের দ্বারা নিযুক্ত হন যারা আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাহ দ্বারা শাসন করার জন্য তাঁর প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করেন। মুসলমান বলতে যা বোঝায় তা হল পূর্ববর্তী খলীফার অধীনস্থ মুসলিম নাগরিকরা যদি খিলাফাহ বিদ্যমান থাকে, অথবা যে অঞ্চলে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠিত হয় (যদি তা অস্তিত্বহীন হয়) সেই অঞ্চলের মুসলমানরা। কুরআন, সুন্নাহ ও সাহাবাদের ঐক্যমতের দলীল দ্বারা বা’ইয়াহ শব্দের একটি শর’ঈ অর্থ দেওয়া হয়েছে:
আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّهَ يَدُ اللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ
“যারা আপনার কাছে আনুগত্যের শপথ করে, তারা তো আল্লাহর কাছে আনুগত্যের শপথ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর রয়েছে।” (আল-ফাতহ: ১০)
উবাদা ইবনুস সামিত থেকে বুখারি বর্ণনা করেন,
«بايعْنا رسولَ الله على السمع والطاعة، في المنشط والمكره، وأن لا ننازع الأمر أهله، وأن نقوم أو نقول بالحق حيثما كنا، لا نخاف في الله لومة لائم».
“আমরা আল্লাহর রসূলকে বা’ইয়াত দিয়েছিলাম যে আমরা যখন সক্রিয় ছিলাম এবং যখন আমরা ক্লান্ত ছিলাম উভয় সময়েই আমরা তাঁর কথা শুনব এবং মানব এবং শাসকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না বা তাঁর অবাধ্য হব না। আমরা যেখানেই থাকি না কেন সত্য বলবো বা সত্যের জন্য দাড়াবো এবং আল্লাহর পথে আমরা দোষারোপকারীদের দোষে ভয় পাই না।”
কুরআন ও সুন্নাহর টেক্সট থেকে স্পষ্ট যে একজন খলীফা নিয়োগের পদ্ধতি বাই’য়াহর মাধ্যমে। এটা সমগ্র সাহাবায়ে কেরাম বুঝতে পেরেছিলেন যেমনটি খুলাফায়ে রাশেদীনের বাই’আতে স্পষ্ট।
অতএব, ‘বাই’য়াহ’ শব্দটির একটি শর’ঈ অর্থ রয়েছে।
০১ শা’বান ১৪৩৩ হিজরি
২০/০৬/২০১২
শায়খ আতা ইবনু খলীল আবু আল-রাশতা
আরবী থেকে ইংরেজি খসড়া অনুবাদের উপর ভিত্তি করে লেখা