জুলুমের শাসন আমাদের কন্ঠ পুরোপুরি রোধ করার আগেই খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পরুন, যা রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা করবে।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার অপরাধ ছিল সে ফেসবুকে ভারতের সাথে পানিবন্টন চুক্তি নিয়ে ঐতিহাসিক কিছু ঘটনা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দিয়েছিল। ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এই ঘটনা আজ নতুন ঘটছে না, অতীতেও আমরা অসংখ্যবার এই একই ধরণের ঘটনা ঘটতে দেখেছি। দেশবাসী দেখেছে কীভাবে বিশ্বজিতকে প্রকাশ্যে দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকরেরও পরিণতি হয়েছিল একইরকম।
এরকম এক একটা ঘটনা ঘটে আর আমরা প্রচন্ড ক্রোধে মাঠে রাস্তায় নেমে আসি খুনীর বিচার চাওয়ার জন্যে, তাকে ফাঁসিতে ঝুলানোর জন্য পুরো দেশ যেন বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তাদের বিক্ষোভের মুখে সরকার চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য কয়েকজনকে গ্রেফতার করে, তারপর সব ঠান্ডা হয়ে যায়। লোকজন ভুলে যায় কী ঘটেছিল।
আবার নতুন করে আরেকটা ঘটনা ঘটে এবং আমরা ক্ষোভে ফেটে পড়ি আর জোর দাবি তুলি হত্যাকারীদের বিচার করার জন্য।
এভাবেই ঘটে আসছে আজ দিনের পর দিন। আমরা কেউ সমস্যার উৎপত্তিস্থল নিয়ে ভাবি না, শুধু শাখা-প্রশাখা নিয়েই ব্যস্ত থাকি। আমরা যদি একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখি, তাহলে দেখব; এই সমস্যার মূলে রয়েছে এই মানবরচিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার জুলুমের শাসন, যা মানুষকে বিশেষ করে ক্ষমতাসীন সরকারকে যা ইচ্ছা তাই করার অধিকার দিয়ে দিয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে, তার টুঁটি চেপে ধরা হয়। তাকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়, নয়ত গ্রেফতার করা হয়।
সুতরাং, যতক্ষণ পর্যন্ত না এই জুলুমের শাসনের অবসান ঘটানো হচ্ছে, একে পুরোপুরি উপড়ে ফেলা হচ্ছে – ততক্ষণ পর্যন্ত এসব ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে এবং আমরাও আমাদের শক্তি খরচ করে মাঠে-ঘাটে চেঁচিয়ে যাব, কিন্তু সমাধান হবে না। কারণ এই জুলুমের শাসন এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।
এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে একমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী বাস্তবায়িত সেই খিলাফত রাষ্ট্র যেখানে খলীফা সকল জনগণের কাছে জবাবদিহিতার জন্য দায়বদ্ধ থাকেন। এই খিলাফত রাষ্ট্রের ২য় খলীফা হযরত ওমর(রা) যখন বলেছিলেন, “আমি যদি কুর’আন সুন্নাহ’র বাইরে অন্যকিছু দিয়ে শাসন করি তবে তোমরা কি করবে? জবাবে তাকে বলা হয়েছিল, এই তরবারী দিয়ে আপনাকে সোজা করে দেওয়া হবে।“
একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে সাধারণ এক নাগরিক এইভাবে জবাবদিহিতা করতে পারে বা তার মত পরিষ্কার ভাষায় বলতে পারে শুধুমাত্র খিলাফত রাষ্ট্রেই। এই গণতান্ত্রিক জুলুমের রাষ্ট্রে নয়।
সুতরাং আসুন, আমরা সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি, যা আমাদেরকে আমাদের মতামত পরিষ্কারভাবে তুলে ধরার মতো সুযোগ করে দেবে।