উইঘুরের মুসলিমদের ভোগান্তি শেষ হওয়ার এটাই কি সঠিক সময় নয়?

উইঘুরের মুসলিমদের ভোগান্তি শেষ হওয়ার এটাই কি সঠিক সময় নয়?

চীনকে মনে রাখার মতো শিক্ষা দেয়ার এটি কি উপযুক্ত সময় নয়?

সাম্প্রতিক মাসগুলিতে আমরা মুসলিম ভুমির পূর্বপ্রান্তের দেশ পূর্ব তুর্কিস্তানের বসবাসকারী উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীনের আগ্রাসী নীতির নৃশংস বৃদ্ধির খবর শুনেছি। ১৯৪৯ সালে মাও সেতুং তথা চীনা কমিউনিস্ট শাসন কর্তৃক ১ লাখেরও বেশি উইঘুর মুসলমানদের হত্যা ও ২৫ হাজার মসজিদ ধ্বংস করার পর চীনের সীমানার সাথে একে যুক্ত করা হয়েছিল। আটলান্টিক ম্যাগাজিন, বিবিসি ও আল-জাজিরার মতো অন্যান্য মিডিয়া দ্বারা প্রকাশিত তদন্তের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, চীন পূর্ব তুর্কিস্তান প্রদেশের প্রায় দশ লক্ষ মুসলিম বন্দী শিবিরে আটক! তদন্তে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতিতে বলা হয়, শিবিরের লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামকে ত্যাগ করার জন্য এই অঞ্চলের উইঘুর মুসলিমদের মগজধোলাই করা, এবং এটি সুপরিচিত যে চীন অন্যতম প্রকাশ্য এক ইসলাম বিরোধী দেশ। ইন্টিলিজেন্স পত্রিকা চীনের ঘোষণাটি প্রকাশ করেছে যে, ইসলাম সংক্রামক রোগ এবং যেকোনো ভাবেই হোক, এমনকি নির্যাতন ও হত্যার মাধ্যমেও চিকিত্সা করা উচিত।

পূর্ব তুর্কিস্তানে ঘটিত অপরাধগুলো ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। আমাদের ভাইদের সেখানে বন্দী করে ফাঁসি দেওয়া হয়, সিমেন্ট এবং কংক্রিট তাদের মুখের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হয়, আমদের বোনদের গর্ভধারণ ও জন্ম দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়, পুরুষদের খোজা করা হয়। কাফির চীনা শাসন গোয়েন্দাগিরির জন্য প্রতিটি গৃহে কাফির চীনা নাগরিককে তাদের প্রতিবেশী রাখে এবং চীনা সংস্কৃতির শিক্ষার অযুহাতে তাদের গোপনীয়তা ও পবিত্রতা উপেক্ষা করে। মুসলিমদের বরকতময় রমজানের রোযা রাখতে বাঁধা দেওয়া হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, মুসলিমদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের হুমকির মুখে ইসলাম ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। বিবিসি জানায়, চীনা কর্তৃপক্ষ দাবি করে যে তারা ত্রি-অশুভ বিষয় মোকাবেলা করতে বাধ্য হচ্ছে, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থী মতাদর্শ এবং বিচ্ছিন্নতার জন্য আহ্বান। এসব মিথ্যা স্লোগানগুলির অযুহাতে সরকার বিভিন্ন দমনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।

পূর্ব তুর্কিস্তানে উইঘুর মুসলিমদের সাথে এসব ঘটছে এবং কেউই আঙ্গুল তুলছে না, এমনকি মুসলিম বিশ্বের শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে নিন্দাও জানানো হচ্ছে না, যেন উইঘুরের জনগণ মুসলিম উম্মাহর অংশ নয়! তারা কি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার সেই বাণী শুনেনি, যখন তিনি বলেন,

وَمَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيرًا

“আর তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও”। [নিসা: ৭৫]

পূর্ব তুর্কীস্তান ইসলামী রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। উসমানী খিলাফত ধ্বংস হয়ে মুসলিম বিশ্ব ৫০টি ক্ষুদ্র জাতিরাষ্ট্রে পরিনত হওয়ার আগ পর্যন্ত চীন এটিকে তাদের সীমান্তের সাথে সংযুক্ত করার সাহসও পায়নি। সুতরাং একমাত্র খিলাফত ব্যবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই উইঘুরের নিপীরিত মুসলিমদের মুক্ত করা সম্ভব।

Leave a Reply