উমাইর ইবন আবী ওয়াককাস (রা)

নাম উমাইর, পিতা আবু ওয়াককাস, মাতা হামনা বিনতু সুফইয়ান। ইরান বিজয়ী হযরত সা’দ ইবন আবী ওয়াককাসের সহোদর।

হযরত উমাইরের বড় ভাই সা’দ ইবন আবী ওয়াককাস ইসলামের সূচনা পর্বেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তখন হযরত উমাইরের বয়স যদিও কম তথাপি তিনি বড় ভাই এর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে হিজরাত করে মদীনায় পৌঁছেন। রাসূল সা: মদীনার আবদুল আশহাল গোত্রের সরদার হযরত সা’দ ইবন মুয়াজের ছোট ভাই হযরত আমর ইবন মুয়াজের সাথে তার দ্বীনী ভাতৃ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে দেন। তারা দুজনই প্রায় সমবয়সী ছিলেন।

হিজরী ২য় সনে বদর যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে। হযরত রাসূলে কারীম সা: সৈনিক নির্বাচন করছেন। হযরত উমাইরও সমাবেশে হাজির হয়েছেন। তার ভাই সা’দ ইবন আবী ওয়াক্কাস দেখলেন, উমাইর তার দৃষ্টি এড়িয়ে অস্থির হয়ে এদিক ওদিক যাচ্ছে। তিনি যেকে জিজ্ঞেস করলেন: উমাইর, কি হয়েছে তোমার? তিনি জবাব দিলেন: ভাই, আমিও যুদ্ধে শরীক হতে চাই। হতে পারে, আল্লাহ আমাকে শাহাদাত দান করবেন। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে, আমাকে ছোট মনে করে রাসূল সা: ফিরিয়ে না দেন।

রাসূল সা: সামনে যখন সকলে একের পর এক হাজির হলেন তখন উমাইরের আশংকা সত্যে পরিণত হলো। তিনি উমাইরের বয়সের দিক লক্ষ্য করে বললেন: তুমি ফিরে যাও। এ কথা শুনে হযরত উমাইর কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। তার এ কান্না জিহাদের আগ্রহ ও শাহাদাতের তীব্র বাসনা দেখে রাসূলুল্লাহ সা: মুগ্ধ হন। উমাইর যুদ্ধে শরীক হওয়ার অনুমতি লাভ করেন। রাসূল সা: নিজে হাতে তার তরবারিটি ঝুলিয়ে দেন।

হযরত উমাইর (রা) তখন ষোল বছরের এক কিশোর। ভালোমত অস্ত্রশস্ত্রও ধরতে জানেন না। তার বড় ভাই তরবারী ধরা শিখিয়ে দিলেন। শাহাদাতের প্রবল আবেগ উতসাহে তিনি কাফিরদের ব্যুহ ভেদ করে ভেতরে ঢুকে গেলেন এবং দীর্ঘক্ষণ চরম বীরত্বের সাথে লড়লেন। এ অবস্থায় আমর ইবন আবদে উদ্দের অসির প্রচণ্ড আঘাত তার শাহাদাতের ‍বাসনা পূর্ণ করে দেয়। ইন্না লিল্লাহি….রাজিউন। মাত্র ষোল বছর বয়সে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। (হায়াতুস সাহাবা-১/৫৯৯) খন্দকের যুদ্ধে হযরত আলী (রা) ঘাতক ‘আমর ইবন আবদে উদ্দকে হত্যা করেন। (আল ইসাবা-৩/৭০)।

শুকরান সালেহ (রা)

আবু সুফইয়ান ইবন হারেস (রা)

Leave a Reply