গত ১১ই মে ২০১৫ তারিখে মালয়েশিয়া সমুদ্র উপকূলে চারটি নৌযান থেকে ১ হাজার ৪০০ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে এরা সবাই মিয়ানমার ও বাংলাদেশের নাগরিক। গত কয়েকদিন ধরেই থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার উপকূলের জঙ্গল থেকে এমন কয়েকশত রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি থাই নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাচারকারীরা অভিবাসীবাসীদের জঙ্গলে গোপন ঘাঁটিতে না এনে সাগরে রাখছে। (সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১২ই মে ২০১৫)
একাধিক বার্তা সংস্থার খবর অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় মালাক্কা প্রণালীতে ৭-৮ হাজার অভিবাসী ভাসমান অবস্থায় আটকে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ইলেকট্রনিক-প্রিন্ট মিডিয়ায় অভিবাসীদের এই জীবন-মৃত্যুর খবর ব্যাপক হারে কভারেজ পাচ্ছে। বাংলাদেশের কক্সবাজার-টেকনাফের উপকূলীয় অঞ্চলে পুলিশের অভিযান, পাচারকারী গ্রেফতারের খবরও পত্রিকায় আসছে। সরকারের ভাষায় দেশের জিডিপি বাড়ছে, দারিদ্র্যের হার কমছে আর দেশ ভাসছে উন্নয়নের জোয়ারে।
তাহলে দেশের প্রান্তিক গ্রামীণ মানুষগুলো কেন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আশায় জীবন বাজি রাখছে? কেন গভীর সমুদ্রে ভাসছে?
বাংলাদেশের এই হতদরিদ্র মানুষগুলোর অবৈধ অভিবাসনের একটি অন্যতম কারণ তাদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট। বাংলাদেশের পুঁজিবাদী শাসকগোষ্ঠী দেশের বিশাল কর্মক্ষম জনগণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে, ব্যর্থ হয়েছে তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে। থাইল্যান্ডের গণকবর এই ব্যর্থতারই একটি ফলাফল। পুঁজিবাদে উৎপাদন বৃদ্ধি, জিডিপি বৃদ্ধি মুখ্য বিষয়। দেশের হতদরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এখানে অপ্রয়োজনীয় বিষয়। দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকলে এইসকল মানুষ নিজেদের জীবন বাজি রেখে সমুদ্র পাড়ি দিত না। যে মানবরচিত জীবনব্যবস্থা এইসকল সমস্যার মূল কারণ, সেই ব্যবস্থা থেকেই আমরা সমাধান খুঁজতে পারিনা।
রাসূল (সা) বলেছেন, “ইমাম (খলীফা) হচ্ছেন অভিভাবক এবং তিনি তার জনগণের ব্যাপারে দায়িত্বশীল”।
খিলাফত রাষ্ট্র দেশের সকল নাগরিকের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করবে। রাষ্ট্র যেসকল বাস্তব পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে:
১. ম্যানুফাকচারিং বা শিল্প উৎপাদন কেন্দ্রিক অর্থনীতি গড়ে তোলা।
২. প্রতিরক্ষা শিল্পে কর্মসংস্থান
৩. কৃষি এবং কৃষি ভিত্তিক শিল্পে কর্মসংস্থান।
৪. খাস জমি ভূমিহীন কৃষকের মাঝে বন্টন।
৫. অব্যবহৃত জমি পুনর্বন্টন
৬. সেনাবাহিনীতে কর্মসংস্থান ইত্যাদি।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশের মানুষ অর্থনৈতিক সচ্ছলতার আশায় অবৈধ অভিবাসী হচ্ছে। ইন-শা-আল্লাহ, খিলাফত রাষ্ট্রের অধীনে মুসলিম নৌবাহিনী থাইল্যান্ডের জনগণকে মুক্ত করতে অগ্রসর হবে। ইসলাম পূর্ব যুগে যে আরবরা সিরিয়ায় ব্যবসা করতে যেত, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর সেই আরবরা-ই সিরিয়া বিজয় করে এবং সেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে। তাই একমাত্র খিলাফত রাষ্ট্রই বাংলাদেশের জনগণকে সত্যিকার উন্নয়ন এবং মর্যাদার পথ দেখাতে পারে। রুটি-রুজির জন্য নয়, বরং মুসলিম উম্মাহ ইসলামের দা’ওয়াহ নিয়ে থাইল্যান্ডের উপকূলে পৌঁছাবে, ইন-শা-আল্লাহ!
ইফতেখার উদ্দিন