বাংলাদেশে এই মুহুর্তে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ২০১৫ সালের প্রথম থেকেই দুইটি বিবাদমান পক্ষের ক্ষমতার চেয়ারে যাওয়ার দ্বন্দের মাঝখানে পরে অবরোধ – হরতালে, পেট্রোল বোমায়, সংঘর্ষে, পুলিশী নির্যাতনে অসংখ্য মানুষ আহত-নিহত হয়েছে, অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গেছে, সর্বোপরি পুরো দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পরেছে। এ যেন এক অঘোষিত যুদ্ধের মাঝে পরে গেছে বাংলাদেশ।
চলমান বাস্তবতার দিকে কেউ এক পলক তাকালে যে কারো কাছেই একটি বিষয় প্রকট ভাবে চোখে পরবে, তা হলো, এই যে মারামারি –হানাহানি, সংঘর্ষ এতে কিন্ত দেশের ঐই সব রাজনীতিবিদ যারা ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য বা মসনদে বসার জন্য বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে উসকানি দিচ্ছে, কিংবা টক শো তে বিভিন্ন মতামত দিয়ে গলা ফাটিয়ে ফেলছে অথবা পত্রিকায় কলাম লিখে পাতা ভরিয়ে ফেলছে ইত্যাদি সহ বুদ্ধিজীবি, সুশীল সমাজ বলে পরিচিত একটি বিশেষ শ্রেনীর মানুষের কোনো সমস্যায় হচ্ছে না, এই দ্বন্দের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শুধুমাত্র সাধারন আমজনতার। এরই ফলে আমরা দেখি, ও লেভেল পরীক্ষা আসলে হরতাল, অবরোধ ইত্যাদিসহ আন্দোলন শিথিল করা হয়, কারন সমাজের এই বিশেষ শ্রেনীর ছেলেমেয়েরা ত ইংলিশ মিডিয়ামেই পরে!!!!! অপরদিকে, এস এস সি বা এইচ এস সি পরীক্ষার মধ্যেও হরতাল চলে, কারন আমজনতার সন্তানরাই ত এই পরীক্ষা দেয়। এথেকে স্পষ্ট হয়ে যায় বাংলাদেশের সমাজ আজ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে যার একদিকে আছে আমজনতা এবং অপর দিকে আছে এই তথাকথিত রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবি সহ সুশীল সমাজ যাদের কাছে আমজনতার প্রাণের কোনো মুল্য নেই।
এই দ্বিধাবিভক্ত সমাজের মুলে আছে মানব-রচিত এই গণতান্ত্রিক শাসন-ব্যবস্থা, যা দাবী করে যে এটা সকল মানুষের সমানাধিকার সংরক্ষন করে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এই গণতন্ত্র, সমাজের বিশেষ কিছু মানুষের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয় যারা একে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমত আইন বানিয়ে এর সুফল ভোগ করে আর ভুক্তভোগী হয় আমজনতা। মানুষ যখন এইভাবে আল্লাহ প্রদত্ত ব্যবস্থাকে পরিত্যাগ করে নিজের খেয়াল খুশীর অনুসরন করে তখন এই ধরনের কষ্টকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন,
“যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হবে, তার জীবনকে আমি কষ্টের জীবনে পরিনত করব।’’ [২০; ১২৪]
কুরআনে বর্ণিত এই কষ্টের জীবনই কি আমরা যাপন করছি না!! আমরা এমন এক শাসক গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছি যারা আল্লাহ প্রদত্ত ব্যবস্থাকে এড়িয়ে গিয়ে নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরন করে আমাদের শাসন করছে এবং যার ফলে সমাজে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
তাই আসুন, আমরা এই মানব-রচিত গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এবং যারা এর মসনদে বসে আছে তাদের ছুড়ে ফেলি এবং সেনাবাহিনীসহ দেশের প্রভাবশালী মানুষের কাছে আহ্বান তুলি তারা যেন এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং এই সব দালাল শাসকদের উচ্ছেদ করে খিলাফত রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য যোগ্য নেতৃত্বের হাতে অতি শীঘ্রই ক্ষমতা হস্তান্তর করে।
মুনতাসির রাজিব