“দেশপ্রেমিক” বিপ্লবী “বাঙালি” জনতা আজ নির্বাক দর্শকে পরিণত হয়েছে। দুই নেত্রীর অন্তর্দাহে যখন জ্বলে যাচ্ছে বাংলাদেশ তখন কোথায় গেল আমাদের দেশপ্রেম, কোথায় গেল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। মূলত এগুলো কিছু ফাকা বুলি ছাড়া আর কিছুই না।
আজ প্রতিবাদী মানুষকে জনগণের অর্থে প্রতিপালিত পুলিশ-বিজিবি দ্বারা পাখির মতো গুলি করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, এবং প্রতিবাদের নামে মানুষকে আগুন এ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, জনগণের সম্পদ জ্বালানো হচ্ছে, ভাংচুর করা হচ্ছে। আজ জনগণের জান নিয়ে পুতুল খেলায় মগ্ন দুই নেত্রী। বিষয়টা যেন এমন পুতুল নাচের সুতো যেন তাদের হাতে, তারাও নাচায় আমরাও নাচি। কখনো সরকার তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্রধারী বাহিনী দিয়ে মানুষ মারছে অন্যদিকে বিএনপি তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে।
আজ আমরা কি সে দিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন আমরা স্বয়ং নিজে অথবা আমাদের পরিবারের কেউ আগুনে পুড়ে মারা পড়ব? অথবা কোন বুলেট এসে আমাদের, শিশুদের, মা-বোন-স্ত্রীদের দের বুকে লাগবে? তবেই কি আমাদের ঘুম ভাঙবে? তাহলে রাসূল(সা) বলেছেন,
“তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ দেবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং লোকদের কল্যাণময় কাজের জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। অন্যথায় আল্লাহ কোন আযাবের মাধ্যমে তোমাদের ধ্বংস করে দেবেন কিংবা তোমাদের মধ্য থেকে সর্বাধিক পাপাচারী, অন্যায়কারী ও জালিম লোকদেরকে তোমাদের উপর শাসনকর্তা নিযুক্ত করে দেবেন। এসময় তোমাদের মধ্যেকার নেককার লোকেরা মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া, প্রার্থনা ও কান্নাকাটি করবে, কিন্তু তা কিছুতেই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।” (মুসনাদে আহমাদ)
পুরো জাতি আজ নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে- না আছে জানের নিরাপত্তা, না আছে মালের নিরাপত্তা, না আছে খাদ্যের নিরাপত্তা, না আছে বাসস্থানের নিরাপত্তা, না আছে চলাচলের নিরাপত্তা, না আছে আয়-রোজগারের নিরাপত্তা- অথচ তাকাই দেখি হাসিনার দিকে, তাকাই দেখি খালেদার দিকে আর তাদের দিকে যারা গণতন্ত্রের কথা বলে “সবাই সোনাই সোহাগা” কারোরই কোনো কিছুর অভাব নাই। এরাই আমাদের নেতৃত্ব, এরাই আমাদের নেত্রী।এরাই আমাদের গণতন্ত্রের নরকে নিয়ে যাওয়া যালিম।
তিনি (সাঃ) বলেন,
“যদি তুমি দেখ যে আমার উম্মত কোন জালেমকে একথা বলতে ভয় পাচ্ছে যে, ‘তুমি একজন জালেম’ তাহলে আমার উম্মতকে বিদায়” [অর্থাৎ এটা উম্মতের জন্য বিদায় বা পতনের সংকেত] (আহমাদ, তাবারানী, হাকিম, রায়হাকী)
আমরা কি হাসিনা/খালেদার দুঃশাসনের অধীনে থাকা কি আমাদের তাকদীর মনে করছি !!! কখনোই এটা আমাদের তাকদীর হতে পারে না কারণ আল্লাহ মুসলমানকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্টার জন্য, বিজয়ের জন্য, দুনিয়া শাসনের জন্য; যুলুম-নির্যাতন সয্য করার জন্য নয়। এটাই আল্লাহ ও তার রাসুলের ওয়াদা। আল্লাহ সুবনাহুতায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন,
“তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে খিলাফত দান করবেন। যেমন তিনি খিলাফত দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের দ্বীনকে, যা তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন। তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরিক করবে না। এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য।” [সুরা আন নুরঃ ৫৫]
ফয়সাল রাহমান
১৭/০১/২০১৫