প্রশ্ন-উত্তর: গণতন্ত্র নামক ভ্রান্ত চিন্তা হতে কিভাবে পরিত্রান পেতে পারি?

নিচের অনুবাদটি সম্মানিত মুজতাহিদ ও মুফাচ্ছির শাইখ আতা ইবন খলীল আবু রাশতা (আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন) কর্তৃক দেয়া এক প্রশ্নের জবাব

প্রশ্ন:

বর্তমান (যুগ)-এ বিপজ্জনক ধারনাসমূহ উম্মাহর অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এবং আমাদের বিশুদ্ধ দ্বীন হতে পৃথক ভ্রান্ত বিশ্বাস আমাদের আক্বীদাকে আহত ও আক্রমন করেছে। এবং এসকল বিপজ্জনক চিন্তাদির মধ্যে একটি চিন্তা হলো গণতন্ত্র। আমাদের জন্য একটি মারাত্মক সমস্যা হলো যে ইন্দোনেশিয়ার মুসলিমগণ দাবী করে গণতন্ত্র ইসলামের একটি অংশ এবং তারা কুরআন ও সুন্নাহ হতে দলীল ব্যবহার করে তাদের এই ভ্রান্ত ধারনাকে ন্যায্যতা প্রদানের জন্য।

১. শাইখ, গণতন্ত্রের ব্যপারে আপনার মতামত কী?
২. আমরা কিভাবে এ সমস্যা হতে পরিত্রান পেতে পারি?
৩. আপনার মতামত কী হে শাইখ? আপনার কাছে এ ব্যপারে নসীহত চাচ্ছি।

জবাব:

ওয়া আলাইকুম আস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

গণতন্ত্রের অর্থ ‘সার্বভৌমত্ব জনগণের’ (السيادة للشعب) যার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ যে আইন প্রণয়ন করেছেন তার বাইরে অন্য কোনো আইন প্রণয়ন করা। অন্য কথায়, এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর বাইরে অন্য কিছু দিয়ে বৈধ (হালাল) ও অবৈধ (হালাল) নিরুপন করা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন:

শাসনকর্তৃত্ব তো কেবল আল্লাহর, তিনিই সত্য প্রকাশ বর্ণনা করেন আর তিনিই শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী

আত-তাবারানির আল-মু’জাম আল-কাবির-এ আদী বিন হাতেম হতে এক সম্মানিত হাদীসে বর্ণিত:

“আমি নবী (সা) এর কাছে স্বর্ণ দ্বারা তৈরি ক্রূশ পরিহিত অবস্থায় আসলে তিনি আমাকে বলেন, হে আদী, তোমার গলা হতে এই মুর্তিকে সরাও! সুতরাং আমি তা সরিয়ে ফেলি। এটি করার পর তিনি (সা) সূরা বারাআত (তওবা)-এর আয়াত তেলাওয়াত করলেন: তারা তাদের ধর্মযাজক ও সাধুদের আল্লাহর পরিবর্তে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম: হে আল্লাহর রাসূল, আমরা তো তাদের উপাসনা করি না। তিনি (সা) বললেন, (কিন্তু) তারা কি যা আল্লাহ হালাল করেছে তাকে হারাম সাব্যস্ত করে না আর আল্লাহ যা হারাম করেছে তা হালাল সাব্যস্ত করে না? আমি উত্তর দিলাম: হ্যা। তিনি (সা) বললেন, সেটাই তাদের উপাসনা (করা)।”

সুতরাং, আল্লাহকে বাদ দিয়ে আইন প্রণয়ন করা একটি মারাত্মক অপরাধ (কবীরা গুনাহ)। সুতরাং, গণতন্ত্র এই দিক হতে একটি কুফরি ব্যবস্থা যেহেতু এটি মানুষকে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দেয়, মানুষের রবকে নয়।

আরেক দিক হতে, গণতন্ত্র চার ধরনের স্বাধীনতার কথা বলে: বিশ্বাসের স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, মালিকানার স্বাধীনতা ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা। এর অর্থ মানুষ যা খুশি তা করতে পারবে। এর অর্থ এটাও যে, যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো সময়ে তার দ্বীন পরিবর্তন করতে পারবে। এর অর্থ এটাও যে, যে কেউ তার খুশি অনুযায়ী যে কোনো দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে পারবে এমনকি যদি তা ধর্মদ্রোহীতাও হয়…হালাল বা হারাম, যেকোনো সম্পদের মালিক হতে পারাটাও এর অর্থ। যার মানে পারস্পরিক সম্মতিতেও কেউ চাইলে ব্যভিচারও করতে পারবে। (অথচ) এগুলো সবই ইসলামে অবৈধ। মুরতাদ হওয়া হারাম, ব্যভিচার হারাম, অবৈধভাবে সম্পদের মালিক হওয়া হারাম এবং দ্বীনকে গালি দেয়া ও এর কুৎসা রটনা করাও হারাম। সুতরাং, গণতন্ত্র এধরনের স্বাধীনতার দিক দিয়ে একটি কুফরী ব্যবস্থা কারণ এটি শরীআহকে পরিত্যাগ করারই শামিল। “গণতন্ত্র – একটি কুফরি ব্যবস্থা” নামক একটি বই আপনার দেশে দলের ওয়েবসাইটটিতে পাবেন যা গণতন্ত্র কেন একটি কুফরি ব্যবস্থা তা বিস্তারিত বর্ণনা করেছে।

সবশেষে, আপনার জন্য রইল সালাম, দুআ করি যাতে আল্লাহ আপনাকে সাহায্য ও তওফীক দান করেন যে ব্যপারে আপনি লিখেছেন, এছাড়াও ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য কল্যাণ কামনা করছি।

আপনাদের ভাই,
আতা ইবনু খলীল আবু আল-রাশতা

Arabic Text:

السؤال:

لقد غزت الأمة الإسلامية في عصرنا الحاضر المفاهيم الخاطئة والمعتقدات الباطلة الدخيلة على ديننا الحنيف والتي تضاد وتصادم العقيدة الإسلامية من كل وجه وجانب، ومنها الديمقراطية الباطلة. المشكلة الخطيرة عندنا، أن بعض المسلمين في إندونيسيا يزعمون أن الديمقراطية من الإسلام، وهم يستدلون عليها بأدلة شرعية من القرآن الكريم والسنة النبوية بالمفاهيم الضالة، بالتكلف في استعمال هذه الأدلة.

فما هو رأيك يا شيخنا في الديمقراطية؟

وكيف يمكن التخلص من هذه المشكلة الخطيرة؟أريد أن أكتب كتابا حول هذا الأمر.

ما رأيك يا شيخنا؟ وأطلب منك النصيحة المتعقلة بهذا الأمر.

الجواب:

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

الديمقراطية تعني السيادة للشعب، فهو يشرع من دون الله، أي يحلل ويحرم من دون الله، والله سبحانه يقول: (إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ يَقُصُّ الْحَقَّ وَهُوَ خَيْرُ الْفَاصِلِينَ)، وفي الحديث الشريف الذي أخرجه الطبراني في الكبير عن عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي عُنُقِي صَلِيبٌ مِنْ ذَهَبٍ، فَقَالَ: «يَا عَدِيُّ اطْرَحْ هَذَا الْوَثَنَ مِنْ عُنُقِكَ»، فَطَرَحْتُهُ فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ وَهُوَ يَقْرَأُ سُورَةَ بَرَاءَةَ فَقَرَأَ هَذِهِ الْآيَةَ (اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللهِ) حَتَّى فَرَغَ مِنْهَا، فَقُلْتُ: إنَّا لَسْنَا نَعْبُدُهُمْ، فَقَالَ: «أَلَيْسَ يُحَرِّمُونَ مَا أَحَلَّ اللهُ فَتُحَرِّمُونُهُ، ويُحِلُّونَ مَا حَرَّمَ اللهُ فَتَسْتَحِلُّونَهُ؟» قُلْتُ: بَلَى، قَالَ: «فَتِلْكَ عِبَادَتُهُمْ»، ولذلك فإن من يشرع من دون الله إثمه كبير كبيرفالديمقراطية من هذا الباب نظام كفر لأنها تجعل التشريع للبشر وليس لرب البشر.

ومن باب آخر فهي تقول بالحريات الأربع: العقيدة، والفكر، والملكية، والشخصية.فتجيز أن يعتقد المرء ما يشاء، فله أن يبدل دينه كما يشاء، وله أن يقول الرأي الذي يريد حتى لو طعن في المقدسات… وله أن يملك بالحلال والحرام، وله أن يعاشر بالزنا ما دام يرضي الطرفين. وهذا أمر محرم في الإسلام، فالردة حرام، والزنا حرام، والتملك

بوسائل غير مشروعة حرام، والقول بالسب والشتم كذلك حرام.وهكذا فإن الديمقراطية بإطلاقها للحريات كذلك هي نظام كفر لأنها تعني التحلل من الأحكام الشرعية.

وهناك كتاب “الديمقراطية نظام كفر” اطلبه من مكتب الحزب في بلدك، ففيه تفصيل مسألة الديمقراطية وكيف أنها نظام كفر .وفي الختام أقرئك السلام، وأدعو لك بالعون والتوفيق فيما تكتبه من خير للإسلام والمسلمين.

أخوكم عطاء بن خليل أبو الرشتة

Leave a Reply