তিটি মানব সন্তানই কোন একটি সত্ত্বার উপাসনা করতে চায় । কিন্তু মানুষ উপাসনা করতে চায় কেন? প্রকৃতিগতভাবে মানুষ দুর্বল । সে দুর্বলতা আমরা আমাদের মাঝে উপলব্ধি করতে পারি এবং কোন কিছুর উপর নির্ভর করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি । ফলে মানুষ যখন তার চেয়ে শক্তিশালী কারও অস্তিত্ব টের পায়,তখন প্রায়শঃ তারা তত্ত্বাবধান, নিরাপত্তা ও আশা পুরণের জন্য ঐ সত্ত্বার উপর নির্ভর করে । প্রাচীনকালে মানুষ সূর্য, চাদঁ, তারা, পর্বত, পশু এমনকি তার নিজ হাতে তৈরি মূর্তির সম্মুখেও মাথা নত করত।
তেমনিভাবে, বর্তমান কালে আমরা দেখতে পাই, অসংখ্য দেবতার অস্তিত্ব- যাদের সামনে মানুষ মাথা নত করে। অনেক দার্শনিক, রাজনীতিবিদ ও চিন্তাবিদকে উপদেবতা জ্ঞানে আরাধনা করা হয় । সমাজের অনেকের জন্যই তারা যাবতীয় সমস্যা সমাধানের উত্সস্বরুপ। অপরদিকে জনপ্রিয় চিত্রাভিনেতা,সংগীতশিল্পী এবং ক্রীড়াবিদরাও কারো কারো উপাস্যের আসন দখল করে নিয়েছে; এদের অনুসরণ ও সমকক্ষ হওয়ার চেষ্টাতেই অনকের পুরো জীবন ব্যপ্ত। আরো কিছু মানুষ আছে যারা নিজের কামনা-বাসনার দাসে পরিণত হয়েছে। তাদের কামনা-বাসনাই তাদের উপাস্য।
ইসলাম এসেছে মানুষকে চিন্তা করাতে যে সে কার দাসত্ব করছে । অনেক সময় মানুষ যাদের দাসত্ব করে তারা তার নিজের চেয়ে ভিন্ন কিছু নয় । তারাও তারই মত সীমাবদ্দ্ব ,দুর্বল ও পরমুখাপেক্ষী । তাহলে মানুষ এসব জিনিসকে কেন উপাসনা করবে ? ইসলাম এসেছে মানুষকে সীমাবদ্ধ, দুর্বল জিনিসের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে মহান স্রষ্টা আল্লাহ’র দাসত্বে নিয়োজিত করতে । আল্লাহ’ই সকল কিছুর স্রষ্টা এবং একমাত্র তিনিই প্রার্থনার যোগ্য । আল্লাহ্ পাক সূরা আয্-যারিয়াতে বলেন ,
“আমি জ্বিন ও মানব জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদতের উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছি।“
মানুষের সকল দিক নির্দেশনার একমাত্র উত্স আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। অর্থাত্ মানুষের সকল ধ্যান ধারনা, জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান ও সমাজ পরিচালনার নীতিমালার একমাত্র উত্স হচ্ছেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা । দুর্ভাগ্যবশতঃ আজকের দিনে আমরা আমরা শুধুমাত্র জায়নামাযেই আল্লাহকে স্বরণ করি ।আমাদের যাবতীয় লক্ষ্য , জীবনের উদ্দেশ্য, সামাজিক রীতিনীতি ও আইন-কানুন আসে অন্যান্য দুর্বল উপাস্যের কাছ থেকে । আসুন আমরা সকলে মিলে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা)” এর প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করি, যাতে করে আমাদের সম্পুর্ণ জীবন ব্যবস্থাটাই আল্লাহ্’র ইবাদত হয়ে যায় ।