উম্মু শুরাইক (রা) মক্কার একজন মহিলা। ইসলামের কথা পৌঁছালো তাঁর কানে। তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন। অতঃপর নেমে পড়লেন দাওয়াতি কাজে। তিনি বিভিন্ন বাড়িতে যেতেন। আলাপ করতেন বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে। সুযোগ বুঝে ইসলামের মর্মকথা তুলে ধরতেন তাদের কাছে।
একসময় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। মুশরিক নেতারা তাঁকে গ্রেফতার করে। তুলে দেয় তাঁর গোত্রের লোকদের হাতে। তাঁকে শাস্তি দিতে বলে। তাঁর গোত্রের লোকেরা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। তাঁকে শুকনো রুটি ও মধু খেতে বাধ্য করে। অতঃপর তাঁকে প্রচণ্ড রোদে গরম বালুর ওপর শুইয়ে দেয়।
প্রচণ্ড রোদ আর গরম বালুর উত্তাপে তিনি ছটফট করতে থাকেন। পিপাসায় কাঁতারাতে থাকেন। একটু পানি দেবার জন্য লোকদেরকে বারবার অনুরোধ করতে থাকেন। কেউ তাঁর অনুরোধে সাড়া দিলো না। কেউ তাঁকে একটু পানি দিলো না। এইভাবে কেটে যায় তিনটি দিন। প্রচণ্ড উত্তাপ ও পিপাসায় তিনি মুমূর্ষ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে এসে তিনি বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেন। জালিমরা তাঁকে ইসলাম ত্যাগ করতে বলতো। কিন্তু বোধশক্তি হারিয়ে ফেলায় তিনি তাদের কথা বুঝে ওঠতে পারতেন না। তৃতীয় দিন একব্যক্তি আসমানের দিকে ইশারা করে তাঁকে এক আল্লাহ্র প্রতি ঈমান ত্যাগ করতে বলে। অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে যে যা বুঝাতে চেয়েছিল তিনি তা বুঝতে সক্ষম হন। চিৎকার দিয়ে তিনি বলে ওঠেন,
“আল্লাহর কসম, আমি তো এখনো সেই ঈমানের ওপরই অটল আছি।”
[আল্লাহর প্রতি তাঁর নিখাদ ঈমান দেখে তাঁর গোত্রের লোকেরা খুবই প্রভাবিত হয়। তারা তাঁকে ছেড়ে দেয়। একসময় তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর গোত্রের বহু লোক ইসলাম গ্রহণ করে।]
মূল: এ কে এম নাজির আহমেদ কর্তৃক লিখিত আসহাবে রাসূলের জীবনধারা
প্রথম প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর ২০১২