দ্বীনকে রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি, অর্থাৎ দুনিয়াবি জীবন থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতা অনেক সহজ হত যদি ব্যক্তি এটিকে জটিল না করত, এবং যদি সে এটিকে অস্পষ্ট না করত, তবে তা আরও পরিষ্কার হত। অতএব, রাষ্ট্র থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতার উৎস সম্পর্কিত ইতিহাসকে স্পর্শ না করেই এবং এর পরিণতির ঐতিহাসিক ও বাস্তব দিক আলোচনা ছাড়াই, আমাদের অধ্যয়নকে বরং সেই চিন্তার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত যা আমাদের সামনে রয়েছে: এই চিন্তা কি কোনো আকিদা গঠন করে? অন্য কথায়, এই চিন্তার বাস্তবতা কি আকিদার মত হয় কিনা? সমস্যাটি হচ্ছে বাস্তবতা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট চিন্তার অধ্যয়ন। এটা কি আকিদা নাকি না?
চিন্তাটির বাস্তবতা অধ্যয়ন করার আগে, আমাদের উচিত প্রথমে আকিদার বাস্তবতা অধ্যয়ন করা, তারপর চিন্তাটির বাস্তবতা অধ্যয়ন করা, তারপর চিন্তার উপর আকিদার বাস্তবতা প্রয়োগ করা। এই বাস্তবতা যদি এর সাথে মানানসই হয়, তাহলে তা আকিদা হবে, অন্যথায় তা হবে না।
আক্বীদার বিষয়টি হলো, যাতে হৃদয় নিজেকে ঘিরে রেখেছে। হৃদয় বলতে আকল বোঝানো যেতে পারে বা হৃদয় বোঝাতে যেমনটি আমরা জানি তেমন, এবং এই ক্ষেত্রে যার অর্থ আবেগ তথা ‘উইজদান’। “হৃদয় কর্তৃক চারপাশে গিঁট দেওয়া” এর অর্থ হল হৃদয় এটিকে ধারণ করেছে এবং স্বাচ্ছন্দ্য এবং স্বস্তির সাথে এটিকে সম্পূর্ণ ও দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করেছে। এর অর্থ এই যে ‘উইজদান’ এই চিন্তাটি গ্রহণ করবে এবং এটিকে এর দিকে টেনে নেবে এবং একই সাথে এর সাথে সে সম্মত হবে, এমনকি তা যদি চুক্তির স্বীকরোক্তিও হয়। অতএব, ‘ই’তিকাদ’ (বিশ্বাস) এর উৎস হচ্ছে মনের সম্মতিতে কোনো চিন্তার চারপাশে হৃদয়ের গিঁট। অন্য কথায় এর উৎস হচ্ছে হৃদয় (উইজদান) কর্তৃক দৃঢ় বিশ্বাস। তবে এই দৃঢ় বিশ্বাসের শর্ত হতে হবে মনের সম্মতি। যদি এই দুটি বিষয় ঘটে থাকে: অর্থাৎ, হৃদয়ের দৃঢ় বিশ্বাস অর্থাৎ উইজদান কর্তৃক এবং এই বিশ্বাসের সাথে মনের সম্মতি, এর অর্থ হবে হৃদয়ের গিঁট হয়ে গেছে অর্থাৎ আক্বীদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, অর্থাৎ বিশ্বাস সংঘটিত হয়েছে।
এটাই আকিদার বাস্তবতা, তা সে যে আকিদাই হোক না কেন, তবে, আংশিক চিন্তার চারপাশে হৃদয়ের গিঁট, যে চিন্তা মৌলিক নয়, তা আকিদার স্তরে উন্নীত হবে না, কারণ কিছুই একটি আংশিক চিন্তার শাখা হবে না, এবং কোনো কিছু হতে তা বের হয়ে আসে না। যদিও শুরুতে এটি দৃঢ় বিশ্বাসের মতো হবে, তবে এটি শীঘ্রই তা দৃঢ়তার (উইজদানের) বৃত্ত থেকে বেরিয়ে যাবে, এবং তা কর্মের দিকে ধাবিত হবে কিংবা প্রত্যাখ্যানের দিকে। অতএব, হৃদয় কর্তৃক শুধুমাত্র মৌলিক চিন্তার চারপাশেই গিঁট দেওয়া যায়, অন্তত এক কিংবা তা থেকে বের হয়ে আসা একাধিক বিষয়ের ক্ষেত্রে। অতএব, ‘আকাইদ’ (মতবাদ) হবে ভিত্তি কিংবা মৌলিক চিন্তা, আর আনুষঙ্গিক চিন্তার ক্ষেত্রে, তা আকায়েদের অংশ হবে না।
মৌলিক চিন্তাগুলি হল সেগুলি যার পূর্বে অন্য কোনও চিন্তা নেই। যদি সেগুলির পূর্বে অন্য চিন্তা থাকে তবে সেগুলি মৌলিক হবে না। অতএব, চিন্তার ভিত্তি হওয়ার জন্য, কোন চিন্তাই এর আগে থাকা উচিত নয়। অতএব, আক্বীদা হবে একটি ভিত্তি চিন্তার চারপাশে হৃদয়ের গিঁট, এই চিন্তাটি হয় মৌলিক হতে পারে, বা মৌলিক চিন্তার অংশ হতে পারে।
এটা হল আকিদা, এটা হল সেই মৌলিক চিন্তা যা হৃদয় তার চারপাশে গেঁথে আছে, অন্য কথায় এটা সেই চিন্তা যা হৃদয়, মানে উইজদান, মনের সম্মতিতে দৃঢ়ভাবে সত্য বলে মেনে নিয়েছে।
মৌলিক চিন্তা যার পূর্বে অন্য কোন চিন্তা নেই তা হবে সেই চিন্তা যা মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যার সমাধান করে, মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে তা করে, তা ভুল বা সঠিকভাবে সমাধান করা হোক না কেন। এই চিন্তা যা ব্যক্তির কাছে সমাধান আকারে দেয়া হয়েছে, একজন মানুষ হিসাবে, অর্থাৎ মানুষের কাছে, এটি হবে মৌলিক চিন্তা, অর্থাৎ এটি সেই চিন্তা যা মনের সম্মতিতে হৃদয় নিজেকে দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এটিই হবে আক্বীদা, যেটি যেকোন সেই চিন্তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যা এর অংশ বলে বিবেচিত হয়, হয় এটি থেকে উদ্ভুত কিংবা এর উপর প্রতিষ্ঠিত।
এটি এই কারণে যে, যেকোনো মানুষ তিনটি প্রশ্ন দ্বারা তাড়িত হয়, যা উত্তর খুঁজতেই থাকে: এই অস্তিত্বের আগে কি কিছু ছিল অর্থাৎ এই অস্তিত্বের পূর্বে অন্য কোনো অস্তিত্ব যা সে উপলব্ধি করতে ও বুঝতে পারে, নাকি এই অস্তিত্ব অনাদি-অনন্ত, এর পূর্বে কিছুই ছিল না? এবং এই অস্তিত্বের পরে কি কিছু থাকবে, যেমন অন্য একটি অস্তিত্ব, কারণ বস্তু হারিয়ে যায়, বিলোপ হয়ে যায়, তাই তা কি আবার ফিরে আসবে নাকি না? আর অন্য কোন স্থানে কি তা যাবে নাকি না? আর বর্তমান অস্তিত্বের কি এর পূর্ববর্তী বাস্তবতার সাথে কোন সম্পর্ক আছে নাকি তা থেকে মুক্ত এবং এর পরে যা আসে তার সাথে কি এর কোন সম্পর্ক আছে নাকি তা থেকে তা বিচ্ছিন্ন?
এই তিনটি প্রশ্ন সকল মানুষের মাঝেই খেলা করে। এর সূচনা হয় যখন থেকে সে তার পারিপার্শ্বিক বাস্তবতাকে বুঝতে শুরু করে।
এভাবে সে নিজেকে এই তিনটি প্রশ্ন করে। এর অর্থ এই নয় যে মানুষ হুবহু এই তিনটি প্রশ্নই জিজ্ঞাসা করবে, তবে সে এই প্রশ্নগুলির সাথে সম্পর্কিত সমস্ত বা আংশিক কিংবা এই প্রশ্নগুলির আশেপাশের বিষয়াদি অনুসন্ধান করবে, তার এই অনুসন্ধানই মোটা দাগে এই তিনটি প্রশ্ন গঠন করে। এবং সময়ের সাথে সাথে, এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর পাবার জন্য একটি অবিরাম তাড়না তৈরি হয়। তাই সে একটি উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে, যদি সে ব্যর্থ হয়; তাহলে সে অন্যের সাহায্য চাওয়ার চেষ্টা করে এবং হয় তার কথা উড়িয়ে দেয়া হয়, অথবা সে সন্তোষজনক উত্তর খুঁজে পায় না, তাই তার মধ্যে এ সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন এড়ানোর প্রবণতা তৈরি হয় এবং সে (অসন্তোষজনক) উত্তরগুলো এড়ানোর চেষ্টা করে এবং তার এই সবচেয়ে বড় সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সে শান্তি পাবে না। সে হয়ত নিজেই এর সমাধান করতে পারে, অথবা সে অন্য লোকেদের সাথে সমাধান খুঁজে পেতে পারে। যদি তার জন্য এটি সমাধান করা হয়, তবে সে শান্ত হবে এবং একটি নির্দিষ্ট পথ অনুসারে তার জীবনযাপন করবে; আর যদি এটি সমাধান না করা হয় তবে সে বিচলিত ও অস্থির থাকবে এবং সে জীবনের একটি নির্দিষ্ট পথে স্থির হবে না।
অতএব, মৌলিক চিন্তাই হবে সেই চিন্তা যা মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যার সমাধান করে এবং তা হচ্ছে আক্বীদা, অর্থাৎ এটি সেই চিন্তা যার চারপাশে হৃদয় গেঁথে আছে। এই কারণেই আক্বীদাকে মানব, জীবন ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিন্তাভাবনা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। কারণ ব্যক্তিটি এমন একজন মানুষ যে মহাবিশ্বে বাস করে, এবং মহাবিশ্বে বসবাস করার কারণে, তিনটি প্রশ্ন তার মনে উদয় হবে এবং সবচেয়ে বড় সমস্যাটি দেখা দেবে। যদি সে এর সমাধান খুঁজে পায়, যেকোন সমাধান, তাহলে সে মৌলিক চিন্তাটি অথবা একটি মৌলিক চিন্তা অর্জন করেছে, অর্থাৎ সে আক্বীদাটি বা একটি আক্বীদা অর্জন করেছে এবং এটি মানব, জীবন ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে একটি চিন্তার উপস্থিতির দ্বারা অর্জন করা হয়েছে, অর্থাৎ মহাবিশ্বে বসবাসকারী একজন মানুষ হিসাবে তার সম্পর্কে।
অতএব, আক্বীদা হবে মহাবিশ্বে বসবাসকারী মানুষ সম্পর্কে একটি মৌলিক চিন্তা, এবং এই মৌলিক চিন্তাটি অবশ্যই সামগ্রিক হতে হবে। তাই আক্বীদা হচ্ছে মানব, জীবন ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে সামগ্রিক চিন্তাভাবনা।
পুঁজিবাদের ক্ষেত্রে, এটি হল রাষ্ট্র থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতা, অর্থাৎ জীবন থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতা, অর্থাৎ জীবন থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতা যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতা; বা রাষ্ট্র থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতা, মানে জীবন থেকে দ্বীনের বিচ্ছিন্নতা। তথাপি, এই চিন্তাই হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যার সমাধান যতদূর পশ্চিমারা উদ্বিগ্ন। অন্য কথায়, এটি তিনটি প্রশ্নের উত্তর হবে। পশ্চিমে, মানুষের মুখোমুখি এই সমস্যাটি সমাধান করা হয়েছে, এবং সে এটিকে জীবনের ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেছে, অর্থাৎ নির্দিষ্ট পথ যা অনুসারে সে জীবনে অগ্রগতি করবে। এটাই চিন্তাটির বাস্তবতা, এবং এটি একটি আক্বীদা হওয়ার বাস্তবতা। এই চিন্তার উৎপত্তির জন্য, কীভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ সংগ্রাম করেছিল এবং হাজারো মানুষ তা অর্জনের জন্য নিহত হয়েছিল এবং কত শতাব্দী ধরে সংগ্রাম চলেছিল, এটি বিবেচ্য বিষয় নয়। যাইহোক, বাস্তবে এটি দ্বীনকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তারপরে এটিকে পৃথক করেছে, এবং এটি যে দ্বীনকে স্বীকৃতি দিয়েছে তার অর্থ এই যে এটি দ্বীন সম্পর্কে একটি মতামত দিয়েছে এবং এটি যে দ্বীনকে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে তা জীবনের একটি মতামতকে নির্ধারণ করে। এসব চিন্তাটির একটি ব্যাখ্যা এবং এটিকে বোঝার কাছাকাছি আনতে সাহায্য করে। এসব কিছু চিন্তাটির বাস্তবতাকে প্রভাবিত করবে না, বরং সহজভাবে তার কিছু দিক ব্যাখ্যা করে। এখানে মূল আলোচনার বিষয় চিন্তাটি নিজেই, অর্থাৎ দ্বীনকে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করার চিন্তা, এটাকে সবচেয়ে বড় সমস্যার সমাধান মনে করা, এটা কি আকিদা নাকি না?
আকিদার বাস্তবতাকে জীবন থেকে দ্বীনকে বিচ্ছিন্ন করার চিন্তার বাস্তবতার সাথে মেলালে, আমরা দেখতে পাব যে এটি ঠিক এটির সাথে খাপে খাপে মিলে যায়, যেমনটি এটি বস্তুবাদের (আল-মাদ্দিয়া) সাথে মিলে যায় এবং যেমনটি এটি মিলে যায় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুন রাসূলুল্লাহ”র সাথে; এবং এখানে ব্যাখ্যাটি নিম্নরূপ:
প্রশ্ন: এই অস্তিত্বের আগে কি কিছু ছিল নাকি না? আক্বীদা এই বলে এর উত্তর দিয়েছে যে এটি জীবনের মুখ্য কোন বিষয় নয়, বরং এটি একটি স্বতন্ত্র বিষয় এবং এটি মানবসমাজের জন্য কোনো বিষয় নয় এবং এটি দুনিয়ার জীবনের জন্য কোনো বিষয় নয়। তাই এটি মানব হিসাবে মানুষের সাথে তার সম্পর্ককে অস্বীকার করেছে, জীবনের সাথে তার সম্পর্ক এবং মহাবিশ্বের সাথে তার সম্পর্ককে অস্বীকার করেছে।
মানব, জীবন ও মহাবিশ্বের সাথে এর সম্পর্ককে অস্বীকার করার মাধ্যমে, এটি আর মুখ্য বিষয় হিসেবে রইল না, এভাবে প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিয়ে, আকিদা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে, এ বিষয়ে যে বাস্তব অনুভূতির বিবেচনায় এই অস্তিত্বের আগে কিছু ছিল কি না। অতএব, যেহেতু এটি পূর্ববর্তী বিষয়াদির সাথে বর্তমান বিষয়াদির সম্পর্ককে অস্বীকার করে থাকে তবে এটি অস্তিত্বে ছিল কি ছিল না এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একটি অর্থহীন বিষয়, কারণ (প্রথম) প্রশ্নটি করার কারণ ছিল সম্পর্ক তৈরির জন্য অনুসন্ধান করা। এটি এই কারণে যে, অস্তিত্ব ছিল কি ছিল না এ প্রশ্নটি অনুভুত এই বাস্তবতা এবং এর আগে যা এসেছিল তার মধ্যে কোনও সম্পর্ক আছে কিনা তা প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেই অবতারনা করা হয়েছিল। অতএব, যদি সম্পর্ক অস্বীকার করা হয়, তাহলে প্রশ্নটি সেখানেই শেষ হয়ে যায় এবং উত্তরও সাথে সাথে পাওয়া যায়। অতএব, অস্তিত্বের আগে ও পরে এবং তাদের মধ্যকার সম্পর্কের অস্বীকার করার মাধ্যমে অন্য দুটো প্রশ্ন বাতিল হয়ে যায় এবং প্রশ্নগুলোকে আলোচনার বিষয়ের সাথে সম্পর্কহীন করে দেয়। এভাবে তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়, যাতে উত্তরটি মানুষের সামনে অবস্থিত সবচেয়ে বড় সমস্যাটির সমাধান করে দেয়। যদি কিছু ব্যক্তি এরপর জীবনের পূর্বে ও পরের বাস্তবতাকে বিশ্বাস কিংবা অস্বীকার করতে চায় তবে তারা তা করার ব্যাপারে স্বাধীন এবং তাদের এই কাজের দরূন কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হবে না, কারণ এটি আলোচনার মুখ্য বিষয় না। একবার জীবনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী কিছুর সাথে জীবনের সম্পর্ক অস্বীকার করা হলে, এই বিষয়গুলি অধ্যয়ন করার কোন অর্থ থাবে না, কারণ এই বিষয়সমূহ অনুসন্ধানের পিছনের উদ্দেশ্য ছিল জীবনে সাথে এদের কী সম্পর্ক তা নির্ধারণ করা। এই সম্পর্কের দিক বিবেচনায়, এবং যেহেতু সম্পর্কটির বাস্তবতা আর নেই, তাই অনুসন্ধানের বাস্তবতাও থাকছে না; তবে মানুষকে অনুসন্ধান না করার ব্যাপারে বাধ্য না করে, বরং তাদের ছেড়ে দেয়া হয়, কারণ অনুসন্ধান তাদের কোনো সমাধানের দিকে নিবে না, কারণ জীবনের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই, অর্থাৎ যেহেতু এর সাথে মানব, জীবন ও মহাবিশ্বের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
সুতরাং, দ্বীনকে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করার চিন্তাই তিনটি প্রশ্নের উত্তর তৈরি করে, অর্থাৎ এটি মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যার সমাধান দেয়। সুতরাং এটি মহাবিশ্বে বসবাসকারী একজন মানুষের সম্পর্কে একটি মৌলিক চিন্তা আকারে দেখা হবে, অর্থাৎ এটি মানব, জীবন ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিন্তাভাবনা হবে, এভাবে এটি একটি আকিদা ও একটি আদর্শ হবে, ঠিক কমিউনিজমের মতো এবং ঠিক ইসলামের মতো।
২২ জুমাদা আল-ঊলা ১৩৯০ হিজরী
২৫ জুলাই ১৯৭০