শুকরান সালেহ (রা)

নাম সালেহ, লকব বা উপাধি ‘শুকরান’। পিতার নাম আদী। হযরত আবদুর রহমান ইবন আউফের (রা) হাবশী বংশজাত দাস। তবে এই দাসত্বের মধ্যেও নেতৃত্বদান তার ভাগ্যে ছিল। হযরত রাসূলে কারীম সা: নিজের কাজের জন্য তাকে নির্বাচন করেন। অর্থের বিনিময়ে তাকে আবদুর রহমানের নিকট থেকে খরীদ করেন। কোন কোন বর্ণনা মতে হযরত আবদুর রহমান কোন রকম অর্থ বিনিময় ছাড়াই তাকে রাসূল সা: এর অনুকূলে হিবা করেন। তার জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় না। তিনি কখন কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন সে সম্পর্কেও তেমন কোন তথ্য সীরাতের গ্রন্থসমূহে পাওয়া যায় না।

অধিকাংশ যুদ্ধে হযরত শুকরান যুদ্ধলদ্ধ সম্পদ ও কয়েদীদের হিফাজতের দায়িত্বে নিয়োজিত হতেন। এ কারণে যুদ্ধে তিনি একদিকে গানীমাতের অংশ পেতেন, আবার অন্যদিকে যাদের কয়েদীদের দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করতেন তাদের নিকট থেকে পারিশ্রমিক পেতেন। আবু মাশার বলেন, তিনি দাস হিসাবে বদর যুদেধ যোগদান করেন। এ কারণে গানীমাতের অংশ তাকে দেওয়া হয়নি। তবে বদরে বন্দীদের দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রত্যেকেই কিছু কিছু অর্থ তাকে দান করে। এতে যারা গানীমাতের অংশ পেয়েছিলেন তাদের থেকেও তিনি বেশি পেয়ে যান। বদর যুদ্ধে তার দায়িত্ব পালনে সতর্কতা ও দক্ষতা দেখে রাসূল সা: এতই মুগ্ধ হন যে, তাকে দাসত্ব থেকে মুক্তিদান করেন।

‘মাররে ইয়াসী’ যুদ্ধে পরাজিত শত্রু বাহিনীর পরিত্যাক্ত অর্থ সম্পদ অস্ত্র-শস্ত্র, ছাগল-বকরী ও তাদের অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রী জমা করার দায়িত্বে তাঁকে নিয়োজিত করা হয়। হযরত রাসূলে কারীম সা: তার প্রতি এত প্রসন্ন ছিলেন যে, ইনতিকালের সময় তার প্রতি সদাচরণের জন্য অসীয়াত করে যান। হযরত শুকরান (রা) আহলে বাইত বা রাসূল সা: এর পরিবার পরিজনদের সাথে দাফন-কাফনে শরীক হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ইবন ইসহাক আলী ইবনুল হুসাইনের সূত্রে বর্ণনা করেন, আলী ইবনু আবী তালিব, ফাদল ইবন আব্বাস, কুসাম ইবন আব্বাস, শুকরান মাওলা রাসুলিল্লাহ ও আউস ইবন খাওলা কবরে নেমে রাসূলুল্লাহকে কবরে শায়িত করেন। (আল ইসাবা-২/৬৬৪)।

হযরত রাসুলুল্লাহর সা: ইনতিকালের পর হযরত শুকরান (রা) মদীনায় থাকেন না বসরায় বসতি স্থাপন করেন- এ ব্যাপারে মতভেদ আছে। কারণ, বসরায় তার একটি বাড়ী ছিল। তার মৃত্যুর সন ও স্থান সম্পর্কেও সঠিকভাবে জানা যায় না। ইতিহাসে তিনি শুকরান মাওলা রাসুলিল্লাহ- রাসূলুল্লাহর আযাদকৃত দাস শুকরান নামে প্রসিদ্ধ।

মিহরায ইবন নাদলা (রা)

উমাইর ইবন আবী ওয়াককাস (রা)

Leave a Reply