আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেন: “এই কুরআন সাতটি ভিন্ন হরফে নাযিল হয়েছে, সুতরাং কুরআন হতে যা তোমাদের জন্য সহজতর হয় তা পাঠ কর“। [মুত্তাফাকুন আলাইহি]
তিনি (সা) আরো বলেছেন: “জিবরাঈল আমাকে একটি পদ্ধতি শিখিয়েছে এবং আমি তা অনুশীলন করতে থাকা অবস্থায় সে আমাকে আরো (পদ্ধতি) শিখিয়েছে। আমি তার কাছে আরো প্রত্যাশা করতে থাকি এবং সেও বাড়াতে থাকে যতক্ষন না (সর্বমোট) সাতটি হরফ হয়“। [বুখারী]
সাত হরফ-এর অর্থের ব্যাপারে আলেমগণ মতবিভেদ করেছেন, তাদের মধ্যে কেউ উপনীত হয়েছেন, এটি মুতাওয়াতির পঠনে ভাষার প্রাঞ্জলতার মতভিন্নতা এবং সাতটি ভাষ্যে তা সংরক্ষিত হওয়া। (যেমন), ই’রাবের ভিন্নতা, (শব্দের) বেশি কিংবা কম হওয়া, কিংবা দ্রুততা কিংবা বিলম্ব হওয়া, পাক খাওয়া কিংবা পরিবর্তন হওয়া, শব্দের বিভিন্ন রূপ যেমন, সরু হওয়া কিংবা গুরুত্বারোপ করা, প্রবণ হওয়া কিংবা উন্মুক্ত হওয়া। তাদের মধ্যে কেউ কেউ উপনীত হয়েছেন যে এগুলো আরব ভাষ্য যা মুতাওয়াতির পঠন দ্বারা সাব্যস্ত নয়।
অনেক গভীর পর্যালোচনা করার পর, অধিকতর শক্তির বিবেচনায় আমার উপলব্ধি অনুযায়ী ‘সাত হরফ’ আরবদের বিভিন্ন গোত্রের উপভাষা (লাহাজাত) যা হতে মৌলিকভাবে আরবী ভাষাকে নেওয়া হয়েছে এবং যা কুরআন নাযিল হবার সময়ে আরবীর প্রাঞ্জলতার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এর কারণ হচ্ছে কুরআনের পঠন মুতাওয়াতির হওয়া আরবদের গোত্রসমূহ হতে পৃথক কোনো বাস্তবতা ছিল না (অর্থাৎ, বিভিন্ন গোত্রের উপভাষাতেই সেসব গোত্রের ব্যক্তিগণ কর্তৃক কুরআন মুতাওয়াতিরভাবে বর্ণিত হয়েছে)। কুরআন নাযিলের সময় সাতটি সুপরিচিত প্রাঞ্জল আরবী উপভাষা ছিল, যা হলো:
১) কুরাইশ
২) তামিম
৩) কায়েস
৪) আসাদ
৫) হুযাইল
৬) কিনানাহ
৭) তা’ঈ
সুতরাং, এ বিষয়ে এটিই সবচেয়ে শক্তিশালি বুঝ বলে আমি মনে করি অর্থাৎ, সাত হরফ হচ্ছে উপরিউক্ত সাতটি গোত্রের উপভাষা। তবে এক্ষেত্রে বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে কুরআন এ সাত গোত্রের ভাষার যেকোন শব্দ দ্বারা পড়া যাবে এমনটি নয়, কেবলমাত্র যেসব বর্ণনা নবী (সা)-এর নিকট হতে মুতাওয়াতিরভাবে আমাদের কাছে এসে পৌছেছে সেগুলোই পাঠ করা যাবে। কারণ মুতাওয়াতির বর্ণনার বাইরের কোনো বর্ণনার পঠন কুরআন বলে বিবেচিত হবে না।
[Taken from the Q&A of Sheikh ‘Ata ibn Khaleel al-Rashta]