সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়বস্তুর মধ্যে ভিন্নতার উদাহরণ হিসেবে যেমন আমরা বলতে পারি শারী’আহ্ স্থান-কালের মধ্যে পার্থক্য বিধান করেছে যদিও মুসলিমদের কাছে মর্যাদার দৃষ্টিকোনে সব স্থান-কাল একই। যেমন শারী’আহ্ লাইলাতুল ক্বদরের রাতকে অন্যান্য রাতের উপর মর্যাদা দিয়েছে, মক্কাকে মদীনার উপর এবং মদীনাকে অন্যান্য শহরসমূহের উপর প্রাধান্য দিয়েছে। কছর (সংক্ষিপ্ত) নামাযের ক্ষেত্রে পার্থক্য বিধান করেছে, যেমন: ৪ রাকাত নামায সংক্ষিপ্ত করা যায়, কিন্তু ৩ বা ২ রাকাতে যায় না। এটা মনি (বীর্য) এবং মাজিহ (প্রাকবীর্য তরল) এর মধ্যে পার্থক্য করেছে। একই স্থান হতে নির্গত হওয়া সত্ত্বেও মনি (বীর্য) পাক এবং মাজিহ (প্রাকবীর্য তরল) নাপাক। স্বেচ্ছায় মনি নির্গত হলে গোসলকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং রোজা ভঙ্গের কারণ বলা হয়েছে, কিন্তু একই স্থান থেকে নির্গত হওয়া সত্ত্বেও মাজিহ বের হবার ক্ষেত্রে এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। শারী’আহ্ মেয়ে বাচ্চার মুত্র দ্বারা পরিধেয় বস্ত্র নোংরা হলে তা পবিত্রকরণে ধোয়াকে বাধ্যতামূলক করেছে, কিন্তু ছেলে বাচ্চার মুত্র দ্বারা পরিধেয় বস্ত্র নোংরা হলে তা পবিত্রকরণে পানি ছিটানোকে যথেষ্ট করেছে। শারী’আহ্ ঋতুবতী (Menstruating) নারীর জন্য (বাদ যাওয়া) রোযা কাযা করাকে বাধ্যতামূলক করেছে কিন্তু (বাদ যাওয়া) সালাতকে নয়। ৩ দিরহাম চুরি করলে হাত কাটার বিধান দিলেও অবৈধ পন্থায় অর্জিত বিপুল সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির হাত কাটতে বলেনি। এটা তালাকপ্রাপ্ত নারীর জন্য ইদ্দতকালীন সময় ৩টি মাসিক (Menstrual) চক্র বেঁধে দিয়েছে অথচ বিধবা নারীর জন্য তা ৪ মাস ১০ দিন, যদিও উভয়ের রেহম (জরায়ু) এর অবস্থা একই। এরকম আরও অনেক উদাহরণ দেয়া যায়। যদি এ বিষয়গুলোর হুকুম অনুসন্ধানে মানব চিন্তার উপর ছেড়ে দেয়া হতো তাহলে আমরা তাদেরকে অনেক ভ্রান্ত সিদ্ধান্তে উপনিত হতে দেখতাম। এবং তারা এমন হুকুমসমূহ নিয়ে আসত যা শারী’আহ্’র সম্পূর্ণ বিপরীত এবং সাংঘর্ষিক। শারী’আহ্ কতৃর্ক প্রত্যেকটি বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন হুকুম প্রদান প্রমাণ করে যে তাদের সাদৃশ্যতা বিবেচনা করে হুকুম বের করার নব্য এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও ভ্রান্ত।
Recent Post
Visitor
Users Today : 87
Total Users : 36901
Total views : 195294