এবার আসা যাক পদ্ধতিগত নিয়মের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান প্রসঙ্গে আর তা হল নুসরাহ বা বস্তুগত সমর্থন। এটা নিয়ে সাবধানতার সাথে বিশেষণ করে দেখা যাক আমাদের কী অনুসরণ করা উচিত, বিশেষ করে আমরা যখন দেখতে পাই যে, ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যারা কাজ করেন তারা নুসরাহর বিষয়টি অত্যন্ত কম গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন। তারা মনে করে এটি একটি side বিষয় বা এর ইসনাদ (বর্ণণার সূত্র) ততটা শক্তিশালী নয় বিধায় এটি গ্রহণ করবার প্রয়োজন নেই। তারা কেবল এখানেই থেমে থাকে না। বরং রাসূলুল্লাহ (সা) এর সবগুলো সীরাতে সামান্য কিছু ব্যত্যয় ছাড়া সুস্পষ্ট বর্ণণা থাকা সত্তেও এ বিধান ও যারা এর অনুসরণ করে তাদের কটাক্ষ করা হয়। যদিও সীরাতের এসব লেখকগণের কারোরই বর্তমানে অস্তিত্বশীল দলগুলোর সাথে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক ছিল না।
পবিত্র কুরআন তাদের সম্পর্কে বলেছে,
‘সাহায্য সহায়তা দিয়েছে’
(সূরা আনফাল:৭২)
এবং তাদের আখ্যায়িত করেছে
‘আনসার (সাহায্যকারী)’
(সূরা তাওবাহ: ১০০)
এ বর্ণণা ছিল অত্যন্ত প্রশংসার ও উন্নত আঙ্কিকের, যার মাধ্যমে তাদের বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়। রাসূলুল্লাহ (সা) এর সীরাত বিশেষণ করলে দেখতে পাব যে, তিনি ক্ষমতাধর নেতৃস্থানীয় লোকদের কাছে নুসরাহ অনুসন্ধান করেছিলেন। একটির পর একটি গোত্রের কাছ থেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা পাওয়া সত্তেও তিনি এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে বারংবার নুসরাহ অনুসন্ধান করছিলেন এবং এ ব্যাপারে দমে যাননি। ইবনে সা’দ তাঁর তাবাকাত গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, যতগুলো গোত্রের কাছে তিনি (সা) গিয়েছিলেন তার সংখ্যা পনের এর কম নয়। রাসূলুল্লাহ (সা) এর এই অধ্যাবসায় থেকে আমরা যা পাই তা হল, নুসরাহ অনুসন্ধান করা ছিল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার পক্ষ থেকে নবী (সা) এর প্রতি একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা।
পবিত্র কোরআন এ সাহায্যকারীদের ‘আনসার’ বলে আখ্যা দিয়েছে, যা এর আরেকটি daleel। কোরআনে একাধিক জায়গায় তাদের প্রশংসা করা হয়েছে ও আল্লাহসুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদের ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। ‘মুহাজেরীন’ (অভিবাসী) দের পরেই তাদের অবস্থান।
নুসরাহ সম্পর্কিত বর্ণণা থেকে বুঝা যায় যে, এটি একটি শরীয়াগত বাধ্যবাধকতা। সে কারণে রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন,
‘হে অমুক ও অমুক গোত্র। আমি তোমাদের কাছে প্রেরিত আল্লাহর রাসূল (সা)। তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন ইবাদত করবার ও তার সাথে কাউকে শরীক না করবার…..আমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে ও আস্থা রাখবে এবং ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে সমর্থন প্রদান করবে যতক্ষণ না আমি আল্লাহ প্রদত্ত হুকুমসমূহ লোকদের কাছে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরছি।’
(সীরাত ইবনে হিশাম)
এটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ও রাসূলুল্লাহ (সা) পক্ষ থেকে প্রদত্ত একটি নির্দেশনা—যা শরীয় একটি হুকুম। আর এর বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ style অনুসরণ করতে হবে। এটা এমন কোন ঠুনকো বিষয় নয় যে, চাইলেই পরিবর্তন করা যাবে।
এছাড়াও রাসূলুল্লাহ (সা) ও যাদের কাছে নুসরাহ অনুসন্ধান করা হয়েছিল তাদের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছিল অথবা দ্বিতীয় আকাবার শপথে তার (সা) ও বাই’য়াত প্রদানকারীদের মধ্যকার যে সংলাপ হয়েছিল—তা থেকে বুঝা যায় নবী (সা) একটি লক্ষ্যে এ কাজে (নুসরাহ অনুসন্ধান) অগ্রসর হয়েছিলেন ও এ কাজের উপর দৃঢ় ছিলেন; অর্থাৎ দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও এমন এক entity প্রতিষ্ঠার জন্য যা দ্বীনকে বাস্তবায়ন, সুরক্ষা প্রদান ও বিস্তারের কাজ করবে। সুতরাং কীভাবে আমরা এটিকে অবজ্ঞা করি যখন এর মাধ্যমে দাওয়াত একটি পর্যায় থেকে আরেকটি পর্যায়ে উন্নীত হয় ও একটি ভূমিতে একটি ব্যবস্থাকে বাস্তবায়ন ও প্রসারের সুযোগ সৃষ্টি করে। তাহলে এ অবজ্ঞা কার স্বার্থে?
- কুফফারগণ বুঝতে পেরেছিল যে, এ কাজের পেছনে রয়েছে একটি অঙ্গীকার ও দ্বীন বিজয়ের বীজ। একারণে আমরা দেখতে পাই বানু আমীর গোত্র বুঝতে পেরেছিল এ বিষয়টি ক্ষমতার সাথে বিজড়িত। মক্কার কুফফারগণের কাছে যখন দ্বিতীয় আকাবার খবর পৌঁছায় তখন তারা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছিল। তারা বলেছিল, ’হে খাজরাজের লোকেরা! আমাদের কাছে খবর আছে যে, তোমরা আমাদের সাথীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেছ এবং তাকে আমাদের থেকে নিয়ে গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ করেছ।’ আমরা দেখতে পাই শয়তান সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বলেছিল, ‘হে আখাসীবের (কুরাইশ) লোকেরা, তোমরা কি মুহম্মদ ও তার সাহাবাগন (মুশরিকদের দৃষ্টিতে দ্বীনত্যাগী) কে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য একত্র হওয়া পছন্দ কর?’
দ্বিতীয় আকাবার শপথের সময় আল বারা বলেন, ‘হে রাসূলুল্লাহ, সুতরাং আমরা বাই’আত প্রদান করলাম। আল্লাহর কসম, আমরা বংশ পরষ্পরায় নেতা থেকে নেতাতে যোদ্ধা ও অস্ত্র চালনায় পারদর্শী ও সুসজ্জিত।’ আবুল হায়সামি ইবনুল তাইহান বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের অন্যদের লোকদেও (ইহুদী) সাথেও সম্পর্ক রয়েছে। যদি আমরা তাদের প্রতি কঠোর হই এবং সম্ভবত সে সময় আল্লাহ যদি আপনাকে বিজয়ী করেন তাহলে কি আপনি আমাদের প্রত্যাখান করে নিজের লোকদের কাছে ফিরে আসবেন?’ আসাদ বিন জুরারাহ বলেন, ‘আজ তাকে নেওয়া মানে সকল আরবের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করা, তোমাদের মধ্যকার সম্ভ্রান্তগন কতল হওয়া এবং তলওয়ারেরে তিক্ত স্বাদ নেওয়া।
এ বিষয়ে আল আব্বাস বিন উবাদা রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলেন, ‘সেই সত্তার কসম যিনি আপনাকে একজন সত্য নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন, যদি আপনার ইচ্ছা তাই হয় তাহলে আগামীকালই আমরা মীনাবাসীর বিরুদ্ধে অস্র ধারণ করতে প্রস্তত।’
আল হায়সামীর প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ (সা) উত্তর দিলেন,
‘না, রক্ত তো রক্তই; আর রক্তের বদলা রক্তই। আমি তোমাদের জন্য আর তোমরাও আমার জন্য। তোমরা যাদের সাথে যুদ্ধ করবে আমিও তাদের সাথে যুদ্ধ করব আর তোমরা যাদের সাথে সন্ধি চাইবে আমার সন্ধিও তাদের সাথেই।’
আয়েশা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) সম্পর্কে বলেন যে, তাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সাহায্য, ক্ষমতাশালী লোক, সমরাস্ত্র ও সমর্থন দিয়ে সন্তুষ্ট করেছিলেন।
ইবনে হিশাম রাসূলুল্লাহ (সা) এর নুসরাহ অনুসন্ধান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘আল্লাহ যখন তার নবী (সা) কে শক্তিশালী ও দ্বীনকে বুলন্দ করতে চাইলেন তখন আনসারদের মধ্য হতে এই লোকগুলোকে দিয়ে সহায়তা করলেন।’
এসব মন্তব্য থেকে এই হুকুমের ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাওয়া যায় এবং একজন ইসলামের দিকে আহ্বান করার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে সে দ্বীনকে সমর্থন করল এরূপ ব্যাখ্যা বা নির্দেশনার ভ্রান্তি থেকে মুক্ত রাখে। বাই’আত, ইজাহার উদ দীন (দ্বীনের বিজয় কবুল করা); নাসর (সমর্থন), যুদ্ধ; বিশিষ্টজনেরা হত্যার সম্মুখীন হবে; তলোয়ারের আঘাতে তারা ঘায়েল হবে; এটা সব আরবের বিরুদ্ধে যাবে; তাদের এমনভাবে সুরক্ষা দেয়া উচিত যেভাবে নারী ও শিশুদের দেয়া হয়, এসব অভিব্যক্তি থেকে বুঝা যায় কীভাবে রাসূলুল্লাহ (সা) নুসরাহ অনুসন্ধান করেছিলেন। তিনি তা করেছিলেন সুরক্ষার খাতিরে এবং এমনকি প্রয়োজনে দ্বীন বহনের জন্য শক্তি প্রয়োগের নিমিত্তে ও এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবার জন্য যা দ্বীন ও এর অনুসারীদের রক্ষা করবে। সাথে সাথে এর হুকুমসমূহ বাস্তবায়ন ও বিশ্বের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দেবার কাজ করবে।
এ বাস্তবতায় একজন বুঝতে পারবে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) নিম্নলিখিত কাজগুলো করেছিলেন:
- তিনি ব্যক্তির নিরাপত্তা ও দাওয়াতের সুরক্ষার জন্য সমর্থন অনুসন্ধান চেয়েছিলেন। এটা মুশরিকদের কাছ থেকে চাওয়া যায় যেমনিভাবে তার চাচা তাকে সুরক্ষা প্রদান করেছিলেন অর্থাৎ তার উপর আপতিত যে কোন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। এটা মু’তীম বিন আদি’র ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কেননা তিনি (সা) তায়েফ থেকে আদি’র সহায়তায় মক্কায় প্রত্যাবর্তন করেন। সুরক্ষার বিষয়টিকে মুসলিমদের দ্বীনের সাথে আপোষ করবার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। দাওয়াতের গতি কিছুটা শথ করতে অনুরোধ করায় রাসূলুল্লাহ (সা) তার চাচাকে বলেছিলেন,
‘আল্লাহর কসম, হে আমার চাচা! যদি তারা দাওয়াতকে পরিত্যাগ করবার জন্য আমার ডান হাতে সূর্য আর বাম হাতে চন্দ্র এনে দেয়, তারপরেও আমি দ্বীনকে পরিত্যাগ করব না যতক্ষণ না আল্লাহ এ দ্বীনকে বিজয়ী করে বা এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমি নিহত হই।’
(সীরাত ইবনে হিশাম)
- রাসূলুল্লাহ (সা) সাধারণত নেতাদের সাথে যোগাযোগ করতেন এই কামনায় যে, তারা ঈমান আনলে তাদের অনুসরণকারী সাধারণ লোকেরাও ঈমান আনবে। দাওয়াত প্রসারণকে সহজতর করা ও গ্রহযোগ্য করবার জন্য তিনি এটা করেছিলেন। এটা দাওয়াতের জনপ্রিয়তার ভিত্তি (কাই’দাহ শাবিয়্যাহ, popular base) তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছিল।
- রাসূলুল্লাহ (সা) ক্ষমতাধর লোকদের কাছে নুসরাহ অনুসন্ধান করেছিলেন এই শর্তে যে, তারা ইসলাম গ্রহণ করবে, যে রকমটি ঘটেছিল আল আকাবার দ্বিতীয় শপথের ক্ষেত্রে।
নুসরাহ অনুসন্ধান করা হয়েছিল ক্ষমতাধর লোকদের কাছ থেকে। রাসূলুল্লাহ (সা) এর সময় এমনসব ক্ষমতাবান লোকদের কাছে নুসরাহ সন্ধান করা হয়েছিল যাদের রয়েছে নেতৃত্ব ও জনপ্রিয়তা। সেসময় নেতারাই শাসক ছিল; তারা আবার সেনাবাহিনীর প্রধানও ছিল এবং তাদের মতামতের উপর জনগন আস্থাশীল ছিল।
আজকের দিনে শাসকেরা বলপ্রয়োগে ক্ষমতায় আসীন হয় এবং তারা অজনপ্রিয়। আবার অনেকসময় জনপ্রিয়তা যা দেখা যায় তা প্রকৃত চিত্র নয়। এক্ষেত্রে আমাদের তাই করতে হবে যা রাসূলুল্লাহ (সা) করেছিলেন। সুতরাং আমরা সমাজে প্রভাবশালী এমনসব লোকদের সাথে যোগাযোগ করব যাদের মাধ্যমে তাদের অনুগামী অন্য লোকদের কাছে পৌঁছানো সহজতর হয়, যাতে করে জনপ্রিয়তার ভিত্তিমূল অর্জিত হয়। আর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হবার লক্ষ্যে ক্ষমতাশালী লোকদের কাছে নুসরাহ অনুসন্ধান করব, যেমন: সামরিক বাহিনীর অফিসার। তাছাড়া যখন দলের সদস্যদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায় তখন তাদের বন্ধু ও আত্নীয়স্বজনদের কাছ থেকে সাহায্য প্রার্থনা করা দোষণীয় নয় এই শর্তে যে এর ফলে দাওয়াকারীর ঈমান কোনরূপ চাপ বা আপোষের সম্মুখীন হবে না। এভাবে বর্তমান বাস্তবতাকে বিবেচনায় এনে রাসূলুল্লাহ (সা) কে অনুসরণ করতে হবে।
আর এটাই হল রাসূলুল্লাহ (সা) এর পদ্ধতি এবং আমরা তাকে অনুসরণ করতে এই পদ্ধতি গ্রহণে বাধ্য। অর্থাৎ আমরা নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করব:
১. (দলের) শাবাবদের এমনভাবে প্রস্তত করা যাতে তাদের হাতে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়। ঠিক যেভাবে রাসূলুল্লাহ (সা) নিজের হাতে মোহাজেরীনদের গড়ে তুলেছিলেন, যারা মক্কায় দাওয়াতের কাজ করেছিলেন এবং নবী (সা) এর সাথে ইসলামি রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করেছিলেন এবং তারপরে উম্মাহকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
২. সাধারণ সচেতনতার ভিত্তিতে চিন্তার পক্ষে জনমত তৈরী করা অর্থাৎ এমন জনপ্রিয় ভিত্তি যা শাসনব্যবস্থা হিসেবে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন কিছুকে গ্রহণ করতে চায় না ও প্রতিষ্ঠিত হওয়ামাত্র একে বরণ করে নেবার ইতিবাচক প্রবণতা দেখায়। আর এ অবস্থা পুরোপুরি মদীনার জনগনের মতই যখন তারা ইসলাম দাবী করেছিল এবং এটাকে সুরক্ষা দেবার জন্য এগিয়ে এসেছিল।
৩.ক্ষমতাধর লোকদের কাছ থেকে নুসরাহ অনুসন্ধান, যার মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তগত করা যায়।
যখন উপরোক্ত বিষয়গুলো সুসম্পাদিত হবে তখন আমরাও সে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারব যেভাবে রাসূলুল্লাহ (সা) করেছিলেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি শরী’য়াহ আকড়ে ধরবার কারণে বিশ্বাসীদের বিজয় দান করবেন। তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) বলেন,
‘মুমিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।’
(সূরা রূম: ৪৭)
তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) আরও বলেন,
‘আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহ্র সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, শক্তিধর।’
(সূরা হজ্জ্ব: ৪০)
তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) আরও বলেন,
‘তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন। যেমন তিনি শাসনকতৃর্ত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের ধর্মকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়—ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না।’
(সূরা নূর: ৫৫)