খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা সরকারের কোন সাফল্য নয়

শীতকালে প্রচুর সবজি বাজারে দেখা যাওয়া কিংবা রাশিয়াতে উদ্ধৃত আলু রপ্তানি করা দেখে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় এর পেছনে সরকারের নীতিগত কোন অবদান রয়েছে। সরকারের দশ টাকায় কৃষকের ব্যাংক একাউন্ট খোলা বা সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তি কিংবা বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিকে এই উৎপাদনশীলতার কারন হিসেবে বিবেচনা করলে ভুল হবে। কারন যেখানে বাংলাদেশের প্রান্তিক কৃষকের নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে তাদের উপর “অনিশ্চিত মুনাফার” (যা কিনা নুন কিনতেই ফুরিয়ে যায়) বিনিময়ে ঋণের বোঝা চাপানো হচ্ছে। ২০১৪-২০১৫ সালে বাজেটের ২.১ % বরাদ্ধ রাখা হয়েছে কৃষিতে অপরদিকে জনপ্রশাসন ও জননিরাপওার জন্য বরাদ্ধ প্রায় ৩৫% । যেখানে দেশের ৮০% ভুমি কৃষিতে ব্যবহারযোগ্য সেখানে এইরূপ পরিকল্পনা মূলত কৃষিতে সরকারের উদাসীনতাই প্রমান করে ।২০০৫ সালের দিকেও এদেশের ৮০ভাগ শ্রমজীবী মানুষ কৃষির উপর নির্ভর ছিল অথচ ২০১০ সালে এসে তা দাড়িয়েছে ৪০ ভাগে (সূত্র: উইকিপিডিয়া)। ক্রমাগত প্রবাশীদের পাঠানো অর্থের উপর নির্ভরশীলতা এই হার আরো কমিয়ে আনছে। তারপরেও যথেষ্ট পরিমানে খাদ্যশস্যের যোগান পাওয়ার কারন এই কৃষকদের ঋণের টাকায় উৎপাদন।যেই ঋণের সিংহভাগ যোগানদাতা NGO গুলো। ঋনের সুদের টাকার যোগান দিতেই কৃষকদের পুনরায় ঋণ নিতে হয় ।মুনাফার টাকা ও তাদের সুদ প্রদানেই খরচ হয়ে যায় ।

কৃষিখাতের এই দুরাবস্তা দূর করার একমাত্র উপায় হচ্ছে কৃষকদের আবার কৃষিজমিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। তাদের জন্য অনুদান ও সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করা, খাস জমি ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বন্টন, অব্যবহত জমি পুর্নবন্টন, বীজ সার ও সেচের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরন, পেটেন্ট বা অধিসত্ব নামক পুজিবাদী ধারনা হতে কৃষি ও কৃষিজাত অন্যান্য পন্যদ্রব্যকে মুক্ত করা।

বিদেশী অধিক ফলনশীল বীজের নামে ব্যবহত হওয়া ক্ষতিকারক বীজের ব্যবহার বন্ধ করা। অধিক উৎপাদনক্ষমতা ও কৃষিজমির জন্য উপকারী বীজের ব্যবহার সুনিশ্চিত করা এবং এসবই সম্ভব এই পুঁজিবাদী অর্থনীতি সমুলে উৎপাটন করে ইসলামী অর্থনীতির প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন-

যে আমার বানী (কুরআন) প্রত্যাখ্যান করবে, তার জীবিকা সংর্কীন হবে এবং আমি তাকে পুনরুথান দিবসে অন্ধভাবে তুলব“। (সুরা : তোয়াহা – ১২৪)

অর্থাৎ আল্লাহ এর মনোনীত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে প্রতিষ্টা করার মাধ্যমে রিযিক সম্প্রসারনের ব্যবস্থা করা এই অব্যবস্থা হতে উত্তরণের একমাত্র উপায়। তাই মুসলিম হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত খিলাফত(ইসলামী রাষ্ট্র ) প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা যা আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনের সাফ্যলের নিশ্চয়তা বহন করে।

Leave a Reply