বাংলাদেশ কি অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল?

একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল। অনেকে মনে করেন যেহেতু তৈরী পোষাক খাত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত এবং যুক্তরাষ্ট্র এর অন্যতম ক্রেতা, তাই বর্তমান বিশ্বের পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা অসম্ভবতো বটেই; এক কথায় আত্মহননের শামিল। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশী রয়েছেন যারা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার একটি বড় উৎস। তাই ইসলামী রাষ্ট্র, খিলাফত প্রতিষ্ঠা মানেই হলো জাতিকে অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ঠেলে দেয়া; যেমন – যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করতে পারে ইত্যাদি। কিন্তু মুসলিম হিসেবে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা’র কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হবে, যদি আমরা এই ক্রুসেডারকে প্রতিহত না করি। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন,

… এবং কিছুতেই আল্লাহ্‌ কাফিরদেরকে মুসলিমদের ওপর বিজয় দান করবেন না।” [সূরা নিসা : ১৪১]

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্কের দু’টি প্রধান দিক হলো বাণিজ্য ও প্রবাসী আয় (remittance)। বাস্তবতা যাচাই করতে হলে দু’দেশের সম্পর্কের প্রকৃতি আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে, তবেই আমরা বুঝতে পারব সত্যিই বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল কি-না। আমাদের আরো সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে ইসলাম প্রদত্ত সমাধানের প্রতি তথা ইসলামী রাষ্ট্র বা খিলাফত এ সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির বাস্তবতা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বাংলাদেশ কতটুকু নির্ভরশীল তা যাচাই করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে মোট রপ্তানির তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। ১ নং সারণি থেকে এটা পরিষ্কার যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রপ্তানি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে (মূল তথ্য সারণির জন্য পরিশিষ্ট দেখুন)। আমাদের জাতীয় আয়ের (জিডিপি) প্রায় এক পঞ্চমাংশ আসে রপ্তানি থেকে।

কিন্তু বাস্তবতা হলো আমাদের এই রপ্তানি আয়ের মাত্র এক পঞ্চমাংশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। সার্বিকভাবে, আমাদের জাতীয় আয়ের মাত্র ৪% আসে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি থেকে। আমরা যদি তৈরী পোষাক শিল্পের মূল্য সংযোজন (value addition) ধরি ৫০% (সম্ভাব্য সর্বোচ্চ), তাহলে জিডিপিতে প্রকৃত অবদান হবে ২% মাত্র। সুতরাং সামষ্টিক অর্থনীতির দিক বিচারে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশের তৈরী পোষাক আমদানি বন্ধ করে দিয়ে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিতে পারে – এটা একটি নিছক গালগল্প।

বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বাস্তবতা যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রেও ঠিক একই চিত্র পরিদৃষ্ট হয়। প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রেরিত অর্থ হতে প্রাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ২ নং সারণিতে আমরা দেখি সাম্প্রতিককালে আমাদের জাতীয় আয়ে প্রবাসী প্রেরিত অর্থের অবদান ১০% এর সামান্য বেশি। যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্র হতে প্রাপ্ত প্রবাসী আয় হলো আমাদের মোট প্রাপ্ত প্রবাসী আয়ের ১৪%। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র হতে প্রাপ্ত প্রবাসী আয় আমাদের জাতীয় আয়ের মাত্র ১.৫%।

তাই একথা নির্দ্ধিধায় বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র হতে প্রাপ্ত প্রবাসী আয় আমাদের দেশের ক্ষেত্রে কোনভাবেই অপরিহার্য কোন বিষয় নয়। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র হতে আমরা যে অর্থ সাহায্য পাই, তাও কোন বিবেচ্য বিষয় নয়।

২০১০ সালে এ অর্থ সাহায্যের পরিমাণ ছিল আমাদের জাতীয় আয়ের মাত্র ০.১২%। প্রকৃত ইস্যু ও খিলাফতের অধীনে আমাদের বাস্তবতা এখন আমরা রপ্তানি ও প্রবাসী আয় নিয়ে বিতর্কের একটু গভীরে দৃষ্টিপাত করি। এ বিতর্কের মূল কারণগুলো হলো:

– আমাদের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন; 
– গার্মেন্টস খাতটি শ্রম নির্ভর; এই খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বহু লোক কর্মসংস্থান হারাবে;
– একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো সেখানে অবস্থানরত দশ লক্ষাধিক বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠাবে।

বাস্তব অর্থে বৈদেশিক মুদ্রা ও বেকার সমস্যাই হলো মূল আলোচ্য বিষয়। বৈদেশিক মুদ্রা ও বেকার সমস্যা সমাধানে খিলাফত রাষ্ট্রের নীতি সম্পর্কে পরবর্তী পর্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তার পূর্বে আমাদের বুঝতে হবে বাস্তব ক্ষেত্রে রাতারাতি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আমাদের সাথে সকল অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করাটা কোন সহজ ব্যাপার নয়। আমরা যদি নির্ভরশীলতার কথা বলি তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের কম মজুরীতে শ্রমিক প্রয়োজন: হয় আমাদের তৈরী পোষাক আমদানির মাধ্যমে অথবা লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের আদমশুমারী অনুযায়ী ২০০৭ সাল পর্যন্ত সেখানে ১৪৩,৬১৯ বাংলাদেশী বাস করে। এর পাশাপাশি অবৈধ অধিবাসীর সংখ্যাও কম নয়। রাতারাতি এত বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হবে দুঃস্বপ্নের মতো। শ্রমবাজারের অন্য কোন উৎস, বিকল্প তৈরী পোষাক আমদানি বাজার এবং ঐসব বিকল্প দেশের সক্ষমতা তৈরী – এসবের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কিছুটা হলেও সময়ের প্রয়োজন হবে। সে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশও খিলাফত সরকারের সহায়তায় রপ্তানির জন্য স্বল্প মেয়াদে বিকল্প বাজার খুঁজতে সক্ষম হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে খিলাফত রাষ্ট্রকে সমগ্র বিশ্বের মুসলিমরা সমর্থন দিবে এবং মুসলিম বিশ্ব ব্যতীত বহু রাষ্ট্রে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জনগণও এতে পূর্ণ সমর্থন যোগাবে। তাই খিলাফত রাষ্ট্র বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো রাষ্ট্র হবেনা; অথবা এই রাষ্ট্র একঘরে নীতিও অবলম্বন করবে না। পক্ষান্তরে খিলাফত রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিকসহ সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করবে, যেহেতু এটি সমগ্র বিশ্বের মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত। খিলাফত রাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের সমর্থনে বিশ্বব্যাপী বলিষ্ঠ জনমত থাকবে। একথা এখানে প্রণিধানযোগ্য যে খিলাফত রাষ্ট্র অবশ্যই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বনির্ভর নীতি অনুসরণ করবে। তাই অদূর ভবিষ্যতে কোন ক্ষেত্রেই খিলাফত রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা বরদাশত করবে না। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের দেশসহ মুসলিম জাতিকে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদ দান করেছেন। খিলাফত রাষ্ট্রের অধীনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে অবশ্যই এমন একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে, যা আঞ্চলিক শক্তি ও পরাশক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখবে।

বেকার সমস্যা

খিলাফত রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক লক্ষ্য জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি নয়; বরং প্রতিটি সাধারণ নাগরিকের মৌলিক চাহিদা পূরণ এর লক্ষ্য। তাই খিলাফত রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী পরিকল্পনায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব পাবে। খিলাফত রাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে যে সকল পদক্ষেপ গৃহীত হবে তার কিছু নিম্নে উল্লেখিত হলো,

– শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হবে উৎপাদনমুখিতা অর্থাৎ যে সকল ক্ষেত্রে জনশক্তি দরকার সে চাহিদা অনুযায়ী তাদেরকে প্রশিক্ষিত করা।
– খিলাফত রাষ্ট্র ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে সরকারের খাস জমি বন্টন করে দেবে, পাশাপাশি তাদের সেচ সুবিধা, সার ও বীজ সরবরাহ করবে। আধুনিক কৌশল ও যন্ত্রপাতি ও উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে তাদের জন্য। এর ফলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
– শক্তিশালী ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হলো তার শক্তিশালী শিল্প খাত। খিলাফত রাষ্ট্রের লক্ষ্য হবে বিশ্বে পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা। তাই এটি শিল্পায়ন বিশেষতঃ শ্রম নির্ভর শিল্প কারখানার প্রতি জোর দেবে যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
– দক্ষ শ্রমশক্তির সঠিক ব্যবহার এবং আমাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক জ্বালানী সম্পদসমূহকে (তেল, গ্যাস, কয়লা) ভিত্তি করে ব্যাপক শিল্পায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
– খিলাফত রাষ্ট্র অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন করবে। আমাদের রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করা হবে নিজস্ব সমরাস্ত্র কারখানা, জাহাজ ও উড়োজাহাজ নির্মাণ শিল্প এবং সাম্ভাব্য সকল ব্যক্তি খাতকে উৎসাহিত করা হবে।
– এছাড়াও নাগরিকগণ সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা পাবে যাতে তারা নিজস্ব উদ্যোগে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। যে কোন পর্যায়ে লুটতরাজ, দুর্নীতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ইত্যাদি খিলাফত রাষ্ট্র শক্ত হাতে দমন করবে।

ফলে শিল্প ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হবে যা জাতিকে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের দিক থেকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলবে।

বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা

বর্তমান বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারই প্রধান মুদ্রা। বস্তুত বিশ্বের বহু দেশ মার্কিন ডলারে বাণিজ্য করতে এবং এই ডলারকেই রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে রাখতে বাধ্য হয়; যাতে করে ডলারের চাহিদা সর্বদাই বিদ্যমান থাকে। ডলার হলো যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য ধরে রাখার একটি অস্ত্র। যুক্তরাষ্ট্র সরকার যখন ইচ্ছা তখনই ডলার ছাপতে পারে। খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। এই রাষ্ট্র বাণিজ্যের বিনিময় মাধ্যম ও রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে ডলারকে পরিত্যাগ করবে। খিলাফতের মুদ্রা হবে একই সাথে স্বর্ণ ও রুপা ভিত্তিক অর্থাৎ দ্বিধাতুভিত্তিক (bimetallic standard)। একবার এটি প্রতিষ্ঠিত হলে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো স্বভাবতই খিলাফত রাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যে উৎসাহী হবে। আর এটি পূর্বেও বলা হয়েছে যে খিলাফত রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য হলো আত্মনির্ভরশীল হওয়া।

আমাদের আমদানি খাতের গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান মূলধনী যন্ত্রাংশ (capital machinery) ও জ্বালানী বিষয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। মূলধনী যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে বলা যায় খিলাফত রাষ্ট্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠা করবে, যা মূলধনী যন্ত্রাংশ উৎপাদনকে বিশেষ গুরম্নত্ব দেবে, যাতে এই খাতে আমাদের অন্য কোনো রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে না হয়। তেল আমদানির ক্ষেত্রেও সেই স্বনির্ভর নীতিই প্রযোজ্য। খিলাফত রাষ্ট্র সকল উৎপাদন-অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) পুনর্বিবেচনা করবে এবং নিজস্ব কোম্পানীকে (বাপেক্স) শক্তিশালী করে অগ্রাধিকার দেবে যাতে এটি ভূ-গর্ভ ও সমুদ্র-গর্ভে সম্পদ অনুসন্ধান করতে পারে। খিলাফত রাষ্ট্র ইতিমধ্যে আবিষ্কৃত বিপুল পরিমাণ কয়লা সম্পদ কাজে লাগাবে।

উপসংহার

উপরের আলোচনায় এটা স্পষ্ট প্রমাণিত যে বাংলাদেশ কখনই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল নয়। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা হতে প্রাপ্ত অর্থ একত্রে আমাদের জাতীয় আয়ের মাত্র ৪%। তাই এটি পরিষ্কার যে, আমরা বৈদেশিক সাহায্য ছাড়া চলতে অক্ষম – এটা কাফির সাম্রাজ্যবাদী জাতি ও বিশ্বাসঘাতক শাসকগোষ্ঠীরই প্রচারকৃত ধারনা। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মত শাসক যেখানে একটি পরিবার ব্যবস্থাপনার যোগ্যতা রাখে না, সেখানে তারা এখন একটি দেশ পরিচালনা করছে। তারা শুধু একটা কাজই করতে পারে আর তা হল কে কত বেশি যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে পারে তার প্রতিযোগিতা করা। তাদের একমাত্র যোগ্যতা হলো ব্যক্তিগত স্বার্থ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় তার সাথে চুক্তি করা। আমাদের বুদ্ধিজীবি সমাজ, রাজনীতিবীদ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, সাংবাদিকবৃন্দ, আমলা ও সেনাবাহিনী কিভাবে দুর্নীতিবাজ, অশিক্ষিত ও অযোগ্য এই শাসকবর্গকে মেনে নিচ্ছেন?

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের যথেষ্ট সম্পদ দিয়েছেন, যা দ্বারা আমরা আত্মনির্ভরশীল হতে পারি। তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,

এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব…।” [সূরা ত্বা-হা : ১২৪]

তাই মুসলিম হিসেবে এসব শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা আমাদের কর্তব্য, যে রাষ্ট্র আমাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করবে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,

… আল্লাহ্‌ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।” [সূরা রাদ : ১১]

পরিশিষ্ট

মোট রপ্তানি ও মোট জাতীয় আয়ের তথ্য সূত্র: বিশ্ব ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি তথ্য সূত্র: 
http://www.census.gov/foreign-trade/balance/c5380.html

মোট তৈরী পোষাক রপ্তানি তথ্য (অর্থ বছর থেকে রুপান্তরিত) সূত্র: বিজিএমইএ, ইপিবি, 

http://bgmea.com.bd/home/pages/TradeInformation
 

প্রবাসী আয়ের তথ্য সূত্র:
http://www.bangladesh-bank.org/econdata/wagermidtl.php

২০১০ ও ২০০৯ সালে বাংলাদেশে মার্কিন সাহায্যের পরিমাণ যথাক্রমে ১২৪ ও ৬৩ মিলিয়ন ডলার; সূত্র: বিশ্ব ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী অধিবাসী তথ্য সূত্র:
http://factfinder.census.gov

Leave a Reply