মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ধ্বসের শুরু হয়েছে ২০০৭ সাল থেকে। এর পর ২০০৮ সালে এসে তা বিশ্ব মন্দায় রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ওবামা প্রশাসন বেইল আউট প্যকেজের মাধ্যেমে জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বড় বড় পুঁজিপতিদের কোম্পানিকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা চালায় এবং একে একে মার্কিন জনগণের উপর ট্যাক্সের মাত্রা বড়িয়ে তার তার বাজেট ঘাটতি পূরনের চেষ্টা চালায়। এতে করেও ওবামা প্রশাসন মার্কিন অর্থনীতিতে সচলতা ফেরাতে পারেনি।
বর্তমানে অর্থনৈতিক অচল অবস্থা রাজনৈতিক অচল অবস্থা তৈরি করেছে এবং এই অচলাবস্থার কারণে ৮ লাখেরও বেশি কর্মচারীকে বিনা বেতনে ছুটি দিতে হয়েছে এবং জাতীয় পার্ক, পর্যটন এলাকা, সরকারি ওয়েবসাইট, অফিস ভবন এবং নাসাসহ আরও অনেক কিছু বন্ধ করে দিতে হয়েছে – যেটাকে বলা হচ্ছে SHUT DOWN। কিন্তু অতীতে আমারা মার্কিনীদের জাতীয় স্বার্থের ব্যপারে সব সময় ঐক্যবদ্ধ দেখেছি কিন্তু এবার হচ্ছে তার ব্যতিক্রম। এবার তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেশের সমস্যা সমাধানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেটদের নিজেদের স্বার্থ এখন দেশের স্বার্থের চেয়ে গুরত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমারা জানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় নব্বই শতাংশ সম্পদ হল দুই শতাংশ লোকের হাতে আর এরাই হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত ক্ষমতার মালিক। আজ অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশের জনগণের হাতে টাকা নেই তাই মার্কিন অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্য ঋণসীমা বৃদ্ধির প্রয়োজন ও সেবা খাতে অর্থের বরাদ্দ প্রয়োজন যা কিনা আবার আগামী নির্বাচনে জেতার জন্য ডেমোক্রেটদের জন্য সহায়ক আবার যা কিনা অনেক পুঁজিপতি কংগ্রেস সদ্যসের আর্থিক ক্ষতিরও কারন। নিজের পকেটের টাকা দিয়ে পুঁজিপতিরা আজ দেশ চালাতে ইচ্ছুক নয় আজ তাই তাদের মধ্যে অনৈক্য স্পষ্ট এবং এই অনৈক্য হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতনের ঘণ্টা।
“এরা সে লোক, যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আর এরা যা কিছু মিথ্যা মা’বুদ সাব্যস্ত করেছিল, তা সবই তাদের থেকে হারিয়ে গেছে”। (সুরা হুদ: ২১)
আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ এবং সমগ্র বিশ্বে সে তার নিয়ন্ত্রন হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত মুসলিম প্রধান দেশ গুলোতে সে উম্মাহর তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে এবং তার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে আর মুসলিম উম্মাহ মাঝে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঐক্যের দাবী তীব্র হচ্ছে।
বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে আজ আমেরিকা নিজেদের তৈরি করা মরণফাঁদে আটকা – ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে তাদের যুদ্ধের খরচ প্রায় ৪ – ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার যার বোঝা তাদের জনগণদেরই নিতে হচ্ছে। এত খরচের পরও তারা কোথায় বিজয় এর মুখ দেখছেনা। আল্লাহ যথার্থই বলেন:
“যারা কাফের তারা তাদের সম্পদ ব্যয় করে মানুষদের আল্লাহর পথ হতে হটানোর জন্য, আর তারা তা খরচ করেই চলবে, অতঃপর, তাদের এই ব্যয় তাদের জন্য পরিতাপের কারণ হবে এবং অবশেষে তাদেরকেই পরাজয় বহন করতে হবে” (আনফাল: ৩৬)
আজ তাই আমেরিকার শেষ ভরসা হোল মুসলিম বিশ্বের তাঁবেদার শাসক গুলো। সিরিয়ার মুসলিম অভ্যুত্থান ঠেকানোর জন্য মার্কিনীদের হয়ে আজ লড়ছে তুরস্ক, সৌদি আরব ইত্যাদি। আমাদের দেশেও একই ধারাবাহিকতায় দালালি করে যাচ্ছে হাসিনা, খালেদার মতো নেতারা।
তাই মুসলিম বিশ্বের এইসব বিশ্বাসঘাতক শাসকদের মূলোৎপাটন করে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মুসলিম উম্মাহ আবারো ফিরে পেতে পারে তার হারানো গৌরব।
তাই আজ বাংলাদেশের মুসলিমদের উচিত খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং মার্কিনীদের হাত থেকে বিশ্বের নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে নিয়ে নেওয়া।
তোমাদের পরওয়ারদেগার শীঘ্রই তোমাদের শত্রুদের ধ্বংস করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দেশে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন। তারপর দেখবেন, তোমরা কেমন কাজ কর। (সুরা আরাফ: ১২৯)