(নিম্নোক্ত প্রবন্ধটি আদনান খান রচিত “Geopolitical Myths” বইটির বাংলা অনুবাদের একাংশ হতে গৃহীত)
পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল ব্যাপক সম্পদরাজি, ভূ-রাজনৈতিক গুরত্ব ও অপরিশোধিত তেলের সর্ববৃহৎ উৎসের কারণে গত একশত বছর ধরে বিভিন্ন শক্তির সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আর এখানে ইরান অবশ্যই একটি গুরত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে পরিগণিত। একারণে যে শক্তি ইরানকে নিয়ন্ত্রণ করবে এই অঞ্চলের আধিপত্য তারই।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরাক দখলের পর থেকেই বিভিন্ন উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের সমালোচনার শিকার হয়েছে ইরান এবং প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের যুদ্ধের হুমকির মুখে পড়েছে। ২০০২ সালে বুশের স্টেট অব ইউনিয়ন ভাষণে শয়তানের অক্ষশক্তি ঘোষণার পর থেকে জর্জ বুশ ইরানের সাথে যে কোন সম্পর্ক রাখার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। ইরাকে জঙ্গীবাদ উস্কে দেয়া, হিজবুল্লাহকে সমর্থন প্রদান ও পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টার জন্য ইরানকে দায়ী করা হচ্ছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে যে, ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। তাদের লক্ষ্য ভিন্ন হওয়ায় এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থের জন্য ইরান বড় হুমকি। সেকারণে ইরানকে নিরস্ত্র করা দরকার, বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ এবং এর ইসলামিক ভাবমূর্তিকে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন।
১৯৭৯ সালে তথাকথিত ‘ইসলামিক বিপ্লব’-এর পর আসা ধারাবাহিক সরকারগুলোর মধ্যে রাফসানজানি ও খাতামির শাসনামল থেকে ইউরোপ ও ইরানের সাথে সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে ইরানের কট্টর রক্ষণশীল ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে আসবার চেষ্টা করা হয়েছে। এ কারণে বেশ কিছু জায়গায় ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা সম্প্রসারিত হয়েছে। ১৯৮৬ সালে মার্কিনীদের কাছ থেকে অস্ত্র ক্রয়ের মাধ্যমে ইরানের আসল চেহারা বের হয়ে আসে। আমেরিকা তার স্বঘোষিত শত্রুদেরকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য অর্থায়ন করতে থাকে, যেমন: নিকারাগুয়ায় একটি কমিউনিষ্ট- বিরোধী দলকে তারা সহায়তা দেয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের মাধ্যমে ইরানের কাছে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মিসাইল ও ভূমি থেকে শূন্যে নিক্ষেপনযোগ্য মিসাইল বিক্রয় করে।
মার্কিন কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে ইরানের বিষোদগার করলেও ইরানী সরকারে অবস্থানরত সংস্কারপন্থীরা ইরান, আফগানিস্তান ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে সংরক্ষণ করে আসছে। ইরাকে এস সি আই আর নেতা আয়াতুল্লাহ হাকিম ও বদর ব্রিগেডের প্রতি তেহরান সমর্থন অব্যাহত রেখেছে-যারা দক্ষিণ ইরাকে মার্কিন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রধান সূত্র হিসেবে কাজ করছে। আফগানিস্তানে কাবুল, হেরাত ও কান্দাহারে ইরান ব্যাপকহারে পূনর্গঠন ও প্রশিক্ষণ কাজে অংশ নিচ্ছে। উত্তর আফগানিস্তানে পশতুন প্রতিরোধ ঠেকানোর জন্য ইরান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাকের-হ্যামিল্টনের রিপোর্টে এ ধরণের সম্পৃক্ততার কথা পাওয়া যায়, “…ইরাক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ইস্যুতে ইতিবাচক নীতির ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি গ্রহণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যক্ষভাবে ইরান ও সিরিয়ার সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে। ইরান ও সিরিয়ার সাথে সম্পৃক্ত হবার সময় ইতিবাচক ফলাফলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড় দেয়া ও ছাড় না দেয়ার বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে বিশেষ করে মাকির্ন-ইরান সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইরানকে সম্পৃক্ত করা সমস্যাপূর্ণ। এখন আফগানিস্তানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের সহযোগী এবং উভয় পক্ষকেই চিন্তা করে দেখতে হবে ইরাকেও একই ধরণের সহযোগিতার মডেল অনুসরণ করা যায় কিনা?“
অপরদিকে পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ার প্রচেষ্টাকে মার্কিনীরা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে সবসময়ই ইরানকে চাপের মধ্যে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে। ইসরাইল একমাত্র দেশ যারা মনে করে মাসখানেকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জন করতে যাচ্ছে। ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলভান সেলম নিউইয়র্কে ইহুদী নেতাদের এক বৈঠকে বলেন, “আমাদের জনবল, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে তারা পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর খুব, খুব কাছাকাছি চলে এসেছে- হয়ত বা মাত্র ছয় মাসের মধ্যে তারা এ ব্যাপারে পুরো জ্ঞান লাভ করবে।“
২০০৫ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিতব্য ইন্টারন্যাশনাল এটোমিক এনার্জি এজেন্সি (আই.এ.ই.এ) এর বৈঠকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনী নিউক্লিয়ার অস্ত্র সংরক্ষণ, উৎপাদন এবং ব্যবহারের বিরুদ্ধে একটি ফতোয়া জারি করেন। এই সর্বোচ্চ নেতা ২০০৩ সালে ইসরাইলের সাথে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেন।
অর্ধশতাব্দীরও বেশী সময়কাল ধরে বিভিন্নক্ষেত্রে ইরান ও মার্কিন সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমানে আমরা ওয়াশিংটনের কাছ থেকে একধরণের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। যখন কোথাও কোথাও আমরা দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সুসম্পর্ক দেখতে পাই। আবার অন্যদিকে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি ও ইসলামিক ভাবমূর্তির জন্য প্রকাশ্যে ইরানকে তারা তিরষ্কার করে থাকে।
ইসলামিক বিপ্লবের পেছনে মার্কিন সহযোগিতা ইরানকে আমেরিকার ক্রীড়ানক হিসেবে ব্যবহারের পথকে সুগম করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সচেতনভাবে উদ্দেশ্য হাসিল হবার পর ইসলামিক বিপ্লবকে থামিয়ে দেবার প্রচেষ্টা চালিয়েছে যেরকমভাবে পাকিস্তানে জিহাদীদেরকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত দখলদারিত্বের ব্যাপারে উস্কে দিয়ে পরে থামানোর চেষ্টা করেছে।
১৯৭৯ সালে বিপ্লবের উদ্দেশ্য ছিল মার্কিন প্রভাব বলয় থেকে বের হয়ে যাওয়া শাহকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা। সেক্ষেত্রে আমেরিকার কৌশলগত প্রাধান্য ছিল ইরানী জনগণের কাছে জনপ্রিয় বিকল্পকে দিয়ে শাহকে সরিয়ে দেয়া। সুদানি নেতা সাদেক আল মেহেদীর মধ্যস্ততায় বিপ্লবকে কার্যকরী করবার জন্য খোমেনী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও এখানে প্রাক্তন অ্যাটর্নী জেনারেল রামসে ক্লার্ক ১৯৭৯ সালে খোমেনীর সাথে এ ব্যাপারে সরাসরি কথা বলেন। খোমেনীর নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের মাধ্যমে রক্ষণশীলেরা কার্যকরভাবে সামরিকবাহিনী, বিচারব্যবস্থা, গোয়েন্দা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। মার্কিন বিরোধী সকল প্রচারণার পরও ইরান কখনওই আমেরিকাকে তেল সরবরাহ করা বন্ধ করেনি কিংবা এ সম্পর্কিত কোন চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। কট্টরপন্থীদের অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র বিপ্লবকে বিপরীত খাতে প্রবাহিত করতে সমর্থ্য হয়নি। এই কট্টরপন্থীরাই তাদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করবার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায় এবং স্পর্শকাতর অস্ত্র সংগ্রহ করতে চায়।
ইরানের জনগনের ৭০ ভাগেরই বয়স ৩০ এর নীচে। তার মানে সেদেশের জনগনের অধিকাংশই ইসলামী বিপ্লবের সময় জন্মই নেয়নি। এই তরুণ জনগনের বিপ্লব সম্পর্কে কোন স্বচ্ছ ধারণা নেই। আর তারা এমন একটি অংশ দ্বারা শাসিত হচ্ছে যারা বিপ্লবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ। মার্কিনীরা সরাসরি ইরানী সরকারের সংস্কারপন্থী অংশ এবং ছাত্রদের সাথে সম্পৃক্ত এবং তাদেরকে এই ধারণা প্রদান করে যে, আমেরিকার স্বার্থ সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনে তারা সামরিক শক্তি ব্যবহার করবে।
যুক্তরাষ্ট্র এব্যাপারে নিশ্চিত নয়, কিভাবে তারা ইরানের বিরুদ্ধে লক্ষ্য অর্জন করবে- কূটনৈতিকভাবে নাকি সামরিকভাবে? জর্জ বুশ দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে এ ব্যাপারটি বেশ তোলপাড় তুলে এবং ওয়াশিংটন মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে থাকে।
ইরানের ব্যাপারে সঠিক সমাধান কি হবে এ ব্যাপারে দ্বন্দ্বের মধ্যে আছে বাস্তববাদী (realists) এবং নব্য রক্ষণশীলদের (neoconservatives) মতবাদ। আমেরিকান সরকারের সকল অংশ এবং বিভিন্ন সংস্থা, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, পেন্টাগণ এবং সিআইএ যুদ্ধের ব্যাপারে একমত পোষণ করে। কিন্তু মতানৈক্য দেখা দেয় ২০০৪ সালে যখন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের জাতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ড জিবিংনিউ ব্রেজিনস্কির তত্ত্বাবধানে কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশন্স (সি.এফ.আর) সংস্থাটি ‘ইরানঃ টাইম ফর অ্যা নিউ এপ্রোচ’-নামক রিপোর্ট প্রকাশ করে। এ রিপোর্ট দাবী করে যে, ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে নব্য রক্ষণশীলদের বর্তমান ধারণা মোটেও সঠিক নয়। রিপোর্টের মতে, “রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি ও অসন্তোষ সত্ত্বেও ইরান আরেকটি বিপ্লবের সম্মুখীন নয়। যারা বর্তমান ব্যবস্থার পুরোধা তারা পুরো পরিস্থিতি এখনও ভালভাবেই নিয়ন্ত্রণ করছে।” রিপোর্টে জোর দিয়ে বলা হয় সকল সমস্যা সমাধানের জন্য তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার তুমুল বিতর্ক অবাস্তব; বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিউক্লিয়ার শক্তি হবার উচ্চাকাংখা থেকে ইরানকে বিরত রাখার জন্য প্রধান বিষয়গুলো নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফেল্ডের নিকটবর্তী নব্য রক্ষণশীলেরা এই রিপোর্টের মতামতকে মুহূর্তের মধ্যে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন। নব্য রক্ষণশীল মাইকেল লেডেন, ন্যাশনাল রিভিউ অনলাইন-এ লিখেন যে, তেহরান হল ইসলামিক সন্ত্রাসীদের রাজধানী এবং সি এফ আর সুপারিশকে অপমানজনক ও আপোষকামী বলে উল্লেখ করেন।
বুশের দ্বিতীয়বারের শাসনামলে নব্য রক্ষণশীলদের প্রভাব ব্যাপকভাবে কমতে থাকে। নব্য রক্ষণশীলদের মধ্যে পল উলফোভিচ, জন বোল্টন প্রমুখ ব্যক্তিদেরকে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিশ্ব ব্যাংক ও জাতিসংঘের নীতি বাস্তবায়নের কাজে নিযুক্ত করা হয়। অন্যদের মধ্যে ডগলাস ফেইথকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। নব্য রক্ষণশীলদের বিদায়ের মাধ্যমে বুশ প্রশাসনে বাস্তববাদীরা (realists) সুযোগ পায়। পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক ব্যাপারগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও পেন্টাগনের ভেতর সামঞ্জস্য বিধান করা হয়। অন্যান্য সহযোগী দেশকে সম্পৃক্ত করে পূর্ববতী মার্কিন প্রশাসন যৌথভাবে সুদান, লেবানন, উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের ব্যাপারে বিতর্কিত বিষয়গুলো সমাধানের প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে বাস্তবাদীদের উপস্থিতি ইরানের ব্যাপারে নব্য রক্ষণশীলদের ভূমিকাকে পুরোপুরি স্তদ্ধ করতে পারেনি। নব্য রক্ষণশীলতাবাদের কট্টর সমর্থক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি ইরানের তেল ও গ্যাসের উপর মার্কিন আধিপত্যকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য সেদেশের উপর প্রচন্ড চাপ প্রয়োগের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।
পরিশেষে এ কথা বলা যায় যে, ইরান এবং মার্কিনীদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব সত্যিকার অর্থেই রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেসব দ্বন্দ্বের উর্ধ্বে উঠে গিয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্রও প্রসারিত হয়। বুশ প্রশাসনের বাস্তবাদীরা এখন এগিয়ে আছে এবং তাদের নীতি হল একক প্রচেষ্টা বা সামরিক হস্তক্ষেপকে আপাত পরিহার করে বহুজাতিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইরানের সাথে বিতর্কিত নিউক্লিয়ার সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে এগিয়ে যাওয়া। তবে ইরানে সামরিক হামলা চালানোর ব্যাপারে যারা চাপ প্রয়োগ করছিল তাদের দমানোর ব্যাপারে বুশ প্রশাসনের ব্যর্থতা বিশ্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিবে।