অনেক অনেক দিন আগে,
এক বৃদ্ধ বাবা ও তার সন্তান উটের পিঠে চড়ে এক কাফেলার সাথে হাজ্জ পালনের উদ্দেশে রওনা দিলেন । মাঝ পথে হঠাৎ বাবা তার ছেলে কে বললেন”
”তুমি কাফেলার সাথে চলে যাও, আমি আমার প্রয়োজন সেরেই তোমাদের সাথে আবার যোগ দিব, আমাকে নিয়ে ভয় পেয়না”
এই বলে বাবা নেমে পরলেন উটেরর পিঠ থেকে, ছেলেও চলতে লাগল কাফেলার সাথে, কিছুক্ষন পর সন্ধ্যা হয়ে এল ,ছেলে আশে পাশে কোথাও বাবা কে খুজে পেলনা, সে ভয়ে উটের পিঠ থেকে নেমে উল্টা পথে হাটা শুরু করল, অনেক দূর যাওয়ার পর দেখল তার বৃদ্ধ বাবা অন্ধকারে পথ হারিয়ে বসে আছেন,
ছেলে দৌড়ে বাবার কাছে গিয়ে বাবাকে জরিয়ে ধরলেন, অনেক আদর করে বাবা কে নিজ কাঁধে চড়ালেন, তার পর আবার কাফেলার দিকে হাটা শুরু করলেন,
বাবা বললেন: আমাকে নামিয়ে দাও আমি হেটেই যেতে পারব,
ছেলে বললেন: বাবা আমার সমস্যা হচ্ছে না,
এমন সময় বাবা কেদে দিলেন ও ছেলের মুখে বাবার চোখের পানি গড়িয়ে পরল…
ছেলে বলল: বাবা কাদছ কেন?? বললাম না আমার কষ্ট হচ্ছে না,
বাবা বললেন: আমি সে জন্য কাদছি না, আজ থেকে ৫০ বছর আগে ঠিক এই ভাবে এই রাস্তা দিয়ে আমার বাবা কে আমি কাঁধে করে নিয়ে গিয়েছিলাম, আর বাবা আমার জন্য দোয়া করেছিলেন এই বলে যে, ”তোমার সন্তান ও তোমাকে এরকম করে ভালবাসবে। আজ বাবার দোয়ার বাস্তব রূপ দেখে চোখে পানি এসে গেল’
বৃদ্ধ মা বাবা কে আপনি যেমন করে ভালবাসবেন, ঠিক তেমনটাই আপনি ফেরত পাবেন আপনার সন্তানদের মাধ্যমে ! তাই বলছি , নিজের সুখের জন্য হলেও মা বাবার সেবা যত্ন করো !
এই ছিল ইসলামী খিলা-ফত ব্যবস্থার চিত্র। আজ থেকে শত বছর পূর্বে এমন এক সমাজে আমরা বসবাস করতাম যে সমাজ এ ধরনেরই বাবা ও সন্তান তৈরি করত। কারণ সে সমাজে ইসলাম বাস্তবায়ন ছিল। যদিও এখনও সমাজে কিছু সুন্দর মানুষ রয়েছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে আজ আমরা সেই ধরনের সমাজ থেকে অনেক দূরে সরে এসেছি। পুজিবাদী-ভোগবাদী স্বার্থপর সমাজের কষাঘাতে আমরা আজ অনেক নিচে নেমে যাচ্ছি। একমাত্র ইসলামী খিলা-ফত ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই আমরা সত্যিকার অর্থে আবার সমাজে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সেই চিন্তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবো আমাদের মাঝে যখন তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,
তোমার প্রতিপালক আদেশ করেছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সবচেয়ে সুন্দর ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উফ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং তাদের সাথে সম্মানজনকভাবে কথা বল। তাদের উপর রহমত (ভালবাসা/স্নেহ/দয়া/মমতা/করুনা) দিয়ে তোমার নতজানু হয়ে থাকা বিনয়ের ডানা মেলে দাও এবং বল: হে প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।” [বনী ইসরাঈল: ২৩-২৪]