প্রশ্ন-উত্তর
প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলোর সাথে লেনদেন
প্রাপক: আবু মুহাম্মদ সালিম
(অনুবাদিত)
প্রশ্ন:
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
আবু মুহাম্মদ সালিম
আমি মহান আল্লাহর কাছে দুআ করছি যে আপনি সুস্থ থাকুন, এবং আল্লাহ আপনাকে একটি মহান বিজয় দান করুন। আমি আল্লাহর কাছে দুআ করছি যে তিনি আপনার হাত দিয়ে কল্যাণের সকল দরজা খুলে দিন।
আমি এই প্রশ্নটি আমাদের শেখ এবং প্রিয়, হিযবুত তাহরীরের আমির, আতা বিন খলিল আবু আল-রাশতাহকে উদ্দেশ্য করে করছি:
এক ভাই আমাকে বারকান বসতিতে কন্টেইনার তৈরির একটি কারখানায় কাজ করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। সম্প্রতি, এই কারখানার একটি অংশ ‘ইসরায়েলি’ সেনাবাহিনীর সুবিধার জন্য রূপান্তরিত করা হয়েছে এবং এটি বৈদ্যুতিক জেনারেটর এবং অন্যান্য সামরিক-সম্পর্কিত জিনিসপত্র পরিবহনের জন্য ট্রেলার তৈরি করে। সেনাবাহিনীর জন্য ট্রেলার তৈরি করে এমন এই বিভাগে কাজ করা কি জায়েজ?
আল্লাহ আপনাকে বরকতময় করুন এবং আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দিন।
আল্লাহ আপনাকে আশ্রয় দিন, আপনাকে বিজয় দান করুন, আপনাকে রক্ষা করুন, আপনাকে ক্ষমতায়িত করুন এবং আপনার হাতে বিজয় এবং ক্ষমতায়ন আনুন।
যদি সম্ভব হয়, তাহলে একটি দ্রুত উত্তর পেলে খুশি হবো – আল্লাহ আপনাকে পুরস্কৃত করুন।
উত্তর:
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ,
উল্লেখিত কারখানার (যার একটি অংশ সম্প্রতি ‘ইসরায়েলি’ সেনাবাহিনীর সুবিধার জন্য রূপান্তরিত হয়েছে এবং বৈদ্যুতিক জেনারেটর এবং অন্যান্য সামরিক-সম্পর্কিত জিনিসপত্র পরিবহনের জন্য ট্রেলার তৈরি করে) ক্ষেত্রে, এটি ইহুদি সত্তার অন্তর্গত, যা আসলে যুদ্ধরত একটি রাষ্ট্র। উত্তর দুটি ক্ষেত্রে নির্ভর করে:
১. দখলদারিত্বের অধীনে বসবাসকারী মুসলমানরা।
২. দখলদারিত্বের বাইরের মুসলমানরা।
প্রথম ক্ষেত্রে:
ইহুদি দখলদারিত্বের অধীনে থাকা মুসলিমরা মদিনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর মক্কায় থাকা মুসলিমদের মতো। ইহুদি দখলদারিত্বের অধীনে থাকা ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য ক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদিতে জড়িত থাকা বৈধ, শত্রুকে শক্তিশালী করে এমন কাজ ছাড়া। একইভাবে, একজন মুসলিম, উদাহরণস্বরূপ, যার আমেরিকান নাগরিকত্ব রয়েছে, তার জন্য হুকম হচ্ছে মক্কার মুসলমানদের মতো যারা হিজরত করেনি, তাই তাদের জন্য দার আল-হারব (যুদ্ধরত দেশে) লেনদেন করা বৈধ, যেখানে তারা বাস করে। তবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদের শক্তিশালী করে এমন বিষয় যার (তাহকিক আল-মানাত) করে আইনগত প্রয়োগ নিরূপন করা যায়, তা ছাড়া।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে:
আমরা পূর্বে একাধিক জবাবে একই ধরণের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি, যার মধ্যে রয়েছে:
৩১/০৩/২০০৯ তারিখের একটি প্রশ্নের উত্তর:
১. যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলোর সাথে সরাসরি কাজ করা জায়েজ নয়, এবং সেই রাষ্ট্রগুলোর কোম্পানিগুলোর সাথে কাজ করাও জায়েজ নয়, কারণ প্রকৃত যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক একটি যুদ্ধ সম্পর্ক, শান্তিপূর্ণ ব্যবসায়িক সম্পর্ক নয়।
২. যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলোর সাথে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর বাস্তবতা নিম্নরূপে নিরূপন করা হয়:
ক. যদি প্রতিষ্ঠানটি যে প্রকল্পে কাজ করছে তা আসলে যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলির জন্য হয়, তাহলে সেই প্রকল্পে প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করা জায়েজ নয়।
খ. যদি প্রকল্পটি যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলোর জন্য না হয়, বরং স্থানীয় জনগণের জন্য হয়, যেমন স্কুল নির্মাণ বা রাস্তা নির্মাণ, তাহলে পাপ সেই প্রতিষ্ঠানের উপর বর্তাবে যারা যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলির সাথে কাজ করে, তবে কাজটি জায়েজ যতক্ষণ না প্রকল্পটি যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলির জন্য না হয়।
২৪/০৭/২০১১ তারিখের একটি প্রশ্নের উত্তর:
“… মুসলিম ভূখণ্ডের দখলদার রাষ্ট্রগুলোর (যারা আসলে যুদ্ধে লিপ্ত) কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সরাসরি চুক্তি করা অনুমোদিত নয়, কারণ এটি আসলে যুদ্ধে লিপ্ত রাষ্ট্রগুলির সাথে লেনদেনের একটি রূপ। স্থানীয় সরকার বা স্থানীয় সংস্থার সাথে চুক্তি করার ক্ষেত্রে যা দখলদার রাষ্ট্রের সাথে (সরাসরি) সম্পর্কিত নয় কিন্তু এর সাথে সম্পর্কযুক্ত, সেক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়:
১. যদি সম্পর্কটি দখলদার রাষ্ট্রের সাথে সামরিক প্রকল্পের সাথে জড়িত থাকে, তবে এটি অনুমোদিত নয়।
২. যদি সম্পর্কের মধ্যে এমন বাণিজ্যিক প্রকল্প জড়িত থাকে যা দেশের ক্ষতি করে না, তবে এটি অনুমোদিত, তবে ক্ষতি করার সন্দেহের কারণে এটি এড়ানো ভাল।
৩. যদি কর্মী স্থানীয় রাষ্ট্র দ্বারা নিযুক্ত হন, তবে তার চুক্তি সরাসরি দখলদার রাষ্ট্রের সাথে হয়, তবে এটি অনুমোদিত নয়।
৪. যদি কর্মী স্থানীয় রাষ্ট্র দ্বারা নিযুক্ত হন এবং তার চুক্তি স্থানীয় রাষ্ট্রের সাথে হয়, তবে এটি অনুমোদিত, এমনকি যদি স্থানীয় রাষ্ট্র দখলদার রাষ্ট্র থেকে আর্থিক সহায়তা পায়।
৫. যদি কর্মী স্থানীয় রাষ্ট্র দ্বারা নিযুক্ত হন, তবে তার চুক্তিটি স্থানীয় রাষ্ট্রের সাথে , কিন্তু সে সরাসরি দখলদার রাষ্ট্র থেকে তার বেতন পায়, তাহলে তা জায়েজ নয়।
এর প্রমাণ হল যুদ্ধরত রাষ্ট্রগুলোর সাথে লেনদেনের বিধান।”
আমি আশা করি এটি যথেষ্ট, এবং আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন এবং সর্বাধিক প্রজ্ঞাময়।
আপনার ভাই,
আতা বিন খলিল আবু আল-রাশতাহ
১২ মহররম ১৪৪৭ হিজরি
০৭/০৭/২০২৫ ইং