ইসরাইল ধ্বংস হবে এবং জেরুজালেম (বাইতুল মুকাদ্দাস) হবে খিলাফতের রাজধানী

এই কঠিন সময়ে আমাদের ভেঙে পড়া উচিত নয়; আমাদের দূরদর্শিতা থাকতে হবে এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে। ভবিষ্যতে ইসরায়েল পরাজিত হবে এবং জেরুজালেম ইসলামী খিলাফতের রাজধানীতে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। কুরআন ও হাদীস থেকে নিম্নলিখিত দলিলসমূহ এই বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়:

আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) ইরশাদ করেন:

“وَقَضَيْنَا إِلَىٰ بَنِيٓ إِسْرَٰٓءِيلَ فِي ٱلْكِتَٰبِ لَتُفْسِدُنَّ فِي ٱلْأَرْضِ مَرَّتَيْنِ وَلَتَعْلُنَّ عُلُوّٗا كَبِيرٗا ٤ فَإِذَا جَآءَ وَعْدُ أُولَىٰهُمَا بَعَثْنَا عَلَيْكُمْ عِبَادٗا لَّنَآ أُوْلِي بَأْسٖ شَدِيدٖ فَجَاسُواْ خِلَٰلَ ٱلدِّيَارِۚ وَكَانَ وَعْدٗا مَّفْعُولٗا ٥ ثُمَّ رَدَدْنَا لَكُمُ ٱلْكَرَّةَ عَلَيْهِمْ وَأَمْدَدْنَٰكُم بِأَمْوَٰلٖ وَبَنِينَ وَجَعَلْنَٰكُمْ أَكْثَرَ نَفِيرًا ٦ إِنْ أَحْسَنتُمْ أَحْسَنتُمْ لِأَنفُسِكُمْۖ وَإِنْ أَسَأْتُمْ فَلَهَاۚ فَإِذَا جَآءَ وَعْدُ ٱلْءَاخِرَةِ لِيَسُۥٓـُٔواْ وُجُوهَكُمْ وَلِيَدْخُلُواْ ٱلْمَسْجِدَ كَمَا دَخَلُوهُ أَوَّلَ مَرَّةٖ وَلِيُتَبِّرُواْ مَا عَلَوْاْ تَتْبِيرًا ٧ عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يَرْحَمَكُمْۚ وَإِنْ عُدتُّمْ عُدْنَاۘ وَجَعَلْنَا جَهَنَّمَ لِلْكَٰفِرِينَ حَصِيرًا ٨”

“আর আমরা বনী ইসরাঈলের প্রতি কিতাবে নির্দেশ দিয়েছিলাম: তোমরা অবশ্যই পৃথিবীতে দু’বার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং ঘোরতর অহংকারে বিভোর হবে। অতঃপর যখন প্রথম প্রতিশ্রুতির সময় আসবে, তখন আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে আমাদের কঠিন যুদ্ধে অভ্যস্ত বান্দাদের পাঠিয়ে দেব, তারা তোমাদের ঘরবাড়ির ভেতরে পর্যন্ত ঢুকে পড়বে। আর এটা ছিল একটি পূর্ণ হওয়া ওয়াদা। তারপর আমরা তোমাদেরকে আবার তাদের ওপর বিজয় দান করলাম, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির দ্বারা তোমাদেরকে সাহায্য করলাম এবং তোমাদের সংখ্যাবল বৃদ্ধি করলাম। (আর বললাম): ‘তোমরা সৎকর্ম করলে তা তোমাদের নিজেদেরই মঙ্গলের জন্য, আর মন্দ করলে তা নিজেদেরই অনিষ্টের জন্য।’ অতঃপর যখন দ্বিতীয় ওয়াদার সময় আসবে, তখন (আমরা শত্রুদেরকে অনুমতি দিব) যেন তারা তোমাদের চেহারা বিমর্ষ করে দেয় এবং মসজিদে (বাইতুল মুকাদ্দাসে) প্রবেশ করে যেমন তারা প্রথমবার প্রবেশ করেছিল এবং তারা যা কিছু পাবে, সবই ধ্বংস করে ফেলবে। (আর তাওরাতে আমরা বলেছিলাম): ‘সম্ভবত তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের প্রতি রহমত করবেন, কিন্তু যদি তোমরা আবার (পাপের পথে) ফিরে যাও, তাহলে আমরাও (শাস্তি দিয়ে) ফিরে আসব।’ আর আমরা জাহান্নামকে কাফিরদের জন্য কারাগার বানিয়েছি।” [সূরা আল-ইসরা, ১৭:৪-৮]

এই আয়াতে ইঙ্গিত রয়েছে যে, আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা)’র দ্বিতীয় ওয়াদা বাস্তবায়িত হবে এবং তা হবে ইসরাইলের ধ্বংস: এই আয়াতে আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা)’র দ্বিতীয় ওয়াদা বাস্তবায়িত হওয়ার যে ইঙ্গিত রয়েছে, তা হলো:

“لِيَسُۥٓـُٔواْ وُجُوهَكُمْ وَلِيَدْخُلُواْ ٱلْمَسْجِدَ كَمَا دَخَلُوهُ أَوَّلَ مَرَّةٖ”

অর্থাৎ: “যেন তারা তোমাদের মুখমণ্ডল বিমর্ষ করে দেয় এবং তারা মসজিদে (বাইতুল মুকাদ্দাসে) প্রবেশ করে যেমন তারা প্রথমবার প্রবেশ করেছিল।” [সূরা বনী ইসরাইল: ৭]

মুসলিমরা বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রথম প্রবেশ করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর খেলাফতের সময়। এরপর ইসলামী খেলাফত শত শত বছর ন্যায়বিচারের সাথে জেরুজালেম শাসন করে। যদিও কিছু বছর খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা এটি দখল করেছিল, কিন্তু ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের আগ পর্যন্ত কোনো সময়েই এটি ইহুদিদের দখলে যায়নি। সুতরাং, আল্লাহ্‌ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) ওয়াদা করেছেন যে, আমরা মসজিদুল আকসায় (বাইতুল মুকাদ্দাসে) পুনরায় প্রবেশ করব, যেমন আমরা পূর্বে বিজয়ের মাধ্যমে প্রবেশ করেছিলাম।

ইবন ‘আসাকির তাঁর সংকলনে মাসীরাহ ইবন জালিস (রহি.) থেকে বর্ণনা করেছেন, যিনি বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন:

“هَذَا الْأَمْرُ (أي الخلافة) كَائِنٌ بَعْدِي فِي الْمَدِينَةِ، ثُمَّ فِي الشَّامِ، ثُمَّ فِي الْجَزِيرَةِ، ثُمَّ فِي الْعِرَاقِ، ثُمَّ فِي الْمَدِينَةِ، ثُمَّ فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ، فَإِذَا كَانَ فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ فَهُنَاكَ مُقَرُّهَا، وَلَا يُخْرِجُهَا قَوْمٌ فَتَعُودُ إِلَيْهِمْ أَبَدًا”

অর্থ: “এই বিষয়টি (অর্থাৎ খেলাফত) আমার পর মদীনায় থাকবে, তারপর শামে, তারপর জাযিরায়, তারপর ইরাকে, তারপর শহরে, তারপর বাইতুল মাকদিসে। আর যখন এটা বাইতুল মাকদিসে পৌঁছাবে, তখন তা তার চূড়ান্ত আবাসস্থলে পৌঁছে যাবে; এবং আর যেসব জাতি এটিকে (অর্থাৎ খেলাফতের রাজধানী) তাদের ভূমি থেকে সরিয়ে দেয়, তারা আর কখনও তা পুনরায় ফিরে পাবে না (যাতে তা তাদের রাজধানী হয়)।” উলামাগণ বলেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, তিনি ﷺ যে ‘নগরী’-র কথা বলেছেন, তাতে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল হিরাক্লিয়াসের শহর (কনস্টান্টিনোপল)। এই হাদীসে বলা হয়েছে, কোন কোন শহরগুলো খেলাফতের রাজধানী হয়েছিল বা হবে। এখানে যে সব শহরের নাম এসেছে, তার সবই পূর্বে খেলাফতের রাজধানী ছিল—শুধু বাইতুল মাকদিস (জেরুজালেম) এখনো হয়নি। ইনশাআল্লাহ, ভবিষ্যতের কোনো এক সময়ে এটি আমাদের খেলাফতের রাজধানী হবে।

ইবন আসাকির থেকে আরও কিছু হাদীস এসেছে, যেমন: ইবন ‘আসাকির, আব্দুর রহমান ইবন আবি উমাইরাহ আল-মুযনী (রহি:.) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, তিনি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন:

“سَتَكُونُ بَيْعَةٌ فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ”

অর্থ: “নিঃসন্দেহে বাইতুল মাকদিসে একটি (সঠিকভাবে পরিচালিত) বায়আহ হবে।”

আল-হাকিম কর্তৃক বর্ণিত আরও কিছু হাদীস রয়েছে, যেগুলোকে সহীহ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে আবু শরীহ (রহি.) থেকে বর্ণিত একটি হাদীস রয়েছে:

“…سمعت من يقول: يكون تحت كل راية اثنا عشر ألفاً، فيجتمع المسلمون إلى صاحبهم ببيت المقدس.”

অর্থ: “আমি এমন লোকদের কথা শুনেছি যারা বলেন, প্রতিটি পতাকার নিচে থাকবে বারো হাজার (যোদ্ধা), এবং মুসলিমরা তাদের সাথী (বা ইমামের) নিকট একত্রিত হবে বাইতুল মাকদিসে (আল-কুদসে)।”

ইবন হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, শাম অঞ্চল (বর্তমান জর্ডান, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, লেবানন এবং ইরাকের একটি অংশ) কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে মু’মিনদের ভূমির কেন্দ্র হবে।

আল-নাওয়াস ইবন সামআন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন:

“…وَعُقْرُ دَارِ الْمُؤْمِنِينَ الشَّامُ

অর্থ: “…আর মু’মিনদের ভূমির মূল কেন্দ্র (উৎপত্তিস্থল) হবে শাম।”

একই হাদীস ইমাম আহমদ (রহি.)-ও সালামা ইবন নুফাইল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণনা করেছেন:

…إِنَّ عُقْرَ دَارِ الْمُؤْمِنِينَ الشَّامُ

অর্থ: “নিশ্চয়ই মু’মিনদের ভূমির কেন্দ্রস্থল হবে শাম।”

এছাড়াও, আল-তাবারানী তাঁর ‘আল-কবীর’ গ্রন্থে সালামা ইবন নুফাইল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণনা করেছেন:

عُقْرُ دَارِ الإِسْلَامِ بِالشَّامِ

অর্থ: “দারুল ইসলামের মূল কেন্দ্রস্থল হবে শাম।”

হাইছামী (রহি.) বলেন, এটি আল-তাবারানী বর্ণনা করেছেন এবং তাঁর রাবিগণ নির্ভরযোগ্য।

এই হাদীসটি পাঁচজন তাবে- তাবিঈন, দুইজন তাবিঈ এবং সাহাবাদের মধ্যে দুইজন থেকে বর্ণিত হয়েছে। কারণ এই হাদীসের বর্ণনাকারী হলেন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), যিনি সর্বাপেক্ষা সত্যবাদী, তাই এই হাদীস দ্বারা বোঝানো হচ্ছে দ্বিতীয় দারুল ইসলামের মূল কেন্দ্রস্থল (‘উকর), প্রথমটির নয়।

“উকর” অর্থ হলো: কেন্দ্র, মূল বা ভিত্তি। প্রথম ইসলামি রাষ্ট্রের উকর ছিল আল-মাদীনা আল-মুনাওয়ারা। সুতরাং, এই হাদীসে বোঝানো হয়েছে দ্বিতীয় ইসলামি রাষ্ট্রের উকর, অর্থাৎ এর কেন্দ্রস্থল হবে শাম অঞ্চল—যার অন্তর্গত বাইতুল মাকদিস ইনশাআল্লাহ এক সময় ইসলামি খেলাফতের রাজধানী হবে।

আবু দাউদ তাঁর ‘সুনান’ গ্রন্থে আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণনা করেন:

سَتَكُونُ هِجْرَةٌ بَعْدَ هِجْرَةٍ، فَخِيَارُ أَهْلِ الْأَرْضِ أَلْزَمُهُمْ مَهَاجِرَ إِبْرَاهِيمَ

অর্থ: “এক হিজরতের পর আরেক হিজরত হবে। অতএব, যেসব মানুষ হিজরতে ইবরাহিম (আলাইহিস সালাম)-এর ভূমিতে (অর্থাৎ শাম অঞ্চলে) অবস্থান করবে, তারাই হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ।”

এই হাদীসটি আল-হাকিম-ও বর্ণনা করেছেন, এবং তিনি বলেছেন এটি সহীহ এবং দুই শাইখ (ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম)-এর শর্ত অনুযায়ী সহীহ হলেও তাঁরা এটি বর্ণনা করেননি।

মূসা ইবন আলী ইবন রাবাহ বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি:

“…আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন, আমাকে আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর ইবন আল-আস (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেছিলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি…” তারপর তিনি ঐ হাদীসটি উল্লেখ করেন।

এই হাদীসটি আহমদ তাঁর মুসনাদ গ্রন্থেও আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেন: “আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি…” তারপর তিনি হাদীসটি উল্লেখ করেন।

এই হাদীসটি কমপক্ষে পাঁচজন তাবে-তাবিঈন, তিনজন তাবিঈ এবং দুইজন সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে। এটি নির্দেশ করে যে, আল-মদীনা-তে হিজরতের পর একটি নতুন হিজরত হবে আল-শাম অঞ্চলে।

হিজরতের উদ্দেশ্য হলো: দারুল কুফর (কুফর দ্বারা শাসিত ভূমি) ত্যাগ করে দারুল ইসলাম (ইসলাম দ্বারা শাসিত ভূমি)-এ গমন করা।

প্রথম হিজরত ছিল আল-মাদীনায়, আর দ্বিতীয় হিজরত হবে আল-শাম-এ। এই অর্থটি “দারুল ইসলামের উকর (মূল কেন্দ্রস্থল)” সম্পর্কিত পূর্ববর্তী হাদীসগুলোর সাথেও মিলে যায়।

আবু দাউদ ইবন জুগ্ব আল-আয়াদী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:

আলী আবদুল্লাহ ইবন হাওয়ালাহ আল-আযদী তাঁর কাছে এসে বলেন:

“আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে পদব্রজে (অস্ত্র সংগ্রহের জন্য) অভিযানে পাঠিয়েছিলেন। আমরা ফিরে এলাম কিন্তু কিছুই পেলাম না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ক্লান্ত চেহারা দেখে বুঝতে পারলেন। তখন তিনি দাঁড়িয়ে দুআ করলেন:

اللَّهُمَّ لَا تَكِلْهُمْ إِلَيَّ فَأَضْعَفَ عَنْهُمْ، وَلَا تَكِلْهُمْ إِلَى أَنْفُسِهِمْ فَيَعْجِزُوا عَنْهَا، وَلَا تَكِلْهُمْ إِلَى النَّاسِ فَيَسْتَأْثِرُوا عَلَيْهِمْ

অর্থ: “হে আল্লাহ! তুমি তাদের আমার উপর ছেড়ে দিয়ো না—যাতে আমি তাদের দায়িত্ব পালনে দুর্বল হয়ে পড়ি; এবং তুমি তাদের নিজেদের উপরেও ছেড়ে দিয়ো না—যাতে তারা নিজেরাই অক্ষম হয়ে পড়ে; এবং তুমি তাদের লোকজনের কাছেও ছেড়ে দিয়ো না—যাতে তারা (অন্যরা) সবকিছু নিজেদের জন্য রেখে দেয়।”

তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার মাথার উপর হাত রাখলেন (অথবা তিনি বলেন: কপালে হাত রাখলেন) এবং বললেন:

يَا ابْنَ حَوَالَةَ، إِذَا رَأَيْتَ الْخِلَافَةَ قَدْ نَزَلَتِ الْأَرْضَ الْمُقَدَّسَةَ، فَقَدْ دَنَتِ الزَّلَازِلُ، وَالْبَلَابِلُ، وَالْأُمُورُ الْعِظَامُ، وَالسَّاعَةُ يَوْمَئِذٍ أَقْرَبُ إِلَى النَّاسِ مِنْ يَدِي هَذِهِ مِنْ رَأْسِكَ

অর্থ: “হে ইবন হাওয়ালাহ! যখন তুমি দেখবে যে খেলাফত পবিত্র ভূমি (বাইতুল মাকদিস / আল-কুদস)-এ এসে পৌঁছেছে, তখন জানবে—ভূমিকম্প, ফিতনা ও মহাসংকট আসন্ন, এবং তখন কিয়ামতের সময় মানুষের নিকট এতটাই আসন্ন হবে, যেমন আমার এই হাত এখন তোমার মাথার উপর।”

আল-হাকিম এই হাদীসটি ইবনু-যুঘব আল-ইবাদী (رحمه الله)-এর সনদে রিওয়ায়াত করেছেন। তিনি এ হাদীসটির সনদকে সহীহ (বিশ্বস্ত বর্ণনাসূত্র) হিসেবে ঘোষণা করেছেন, যদিও এটি দুই শাইখ (ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম) রিওয়ায়াত করেননি। ইমাম আহমদও এটি আল-হাকিমের অনুরূপ সনদে রিওয়ায়াত করেছেন।

যদি ইবনু-যুঘব হন আব্দুল্লাহ, তাহলে তিনি সাহাবী ছিলেন; আর যদি তিনি আব্দুর রহমান হন, তাহলে তিনি তাবি‘ঈনদের অন্তর্ভুক্ত। অতএব, যদি তিনি প্রথমজন (আব্দুল্লাহ) হন, তাহলে এ হাদীসটি দুইজন সাহাবী রিওয়ায়াত করেছেন; আর যদি তিনি দ্বিতীয়জন (আব্দুর রহমান) হন, তাহলে এক সাহাবী এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন; এবং যদি প্রথমজন হন, তাহলে একজন তাবি‘ঈ এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন; আর যদি দ্বিতীয়জন হন, তাহলে দুইজন তাবি‘ঈ এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। আর উভয় ক্ষেত্রেই তিনজন তাবি‘-তাবি‘ঈ এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।

এই হাদীসটি প্রমাণ করে যে, খেলাফত আল-কুদস (বায়তুল মাকদিস)-এর ভূমিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। কেউ এটা বলতে পারে না যে, খেলাফত উমর (رضي الله عنه)-এর খেলাফতের সময় সেখানে এসেছিল, কারণ সে সময় ভূমিকম্প, ফিতনা এবং বিশৃঙ্খল ঘটনাবলি দেখা দেয়নি।

এর অর্থ হলো, খেলাফতের একটি দ্বিতীয় আগমন (পুনঃপ্রতিষ্ঠা) হবে, যার পর এইসব ঘটনাবলি সংঘটিত হবে।


আবু মুহাম্মদ দ্বারা অনুবাদকৃত

Leave a Reply