সংকোচন নীতির আওয়াজ ও হৈচৈ তুলে, বাজওয়া-ইমরান সরকার সৌদি শাসক বিন সালমান (‘এমবিএস’) -কে স্বাগত জানানোর জন্য কোন খরচ বাদ দিচ্ছে না, উম্মাহর সম্পত্তি মুক্তভাবে খরচ করছে। ওদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াচ্ছে, কিন্তু পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জেএফ-১৭ জেট এর মাধ্যমে এমবিএস এর জেট এর প্রোটোকল প্রদানের ক্ষেত্রে নির্বিচারে জ্বালানী খরচ করছে। অথচ দখলকৃত কাশ্মিরের মুসলিমদের সামরিক সাহায্য হতে বঞ্চিত করছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ব্যস্ত রাখছে এমবিএসকে নিরাপদ করার জন্য, যদিও তার শতাধিক সৌদি আরবীয় রয়েল গার্ড রয়েছে। অথচ গৃহায়নের জন্য জনগণের উপর অভিশপ্ত সুদ ভিত্তিক ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। সরকার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন সাজাচ্ছে, ওদিকে এমবিএস ১১০০ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী ব্যক্তি, পাঁচ ট্রাক ব্যক্তিগত মালপত্র, আশি কন্টেইনার লাগেজ এবং ডজনখানেক গাড়ি আনয়ন করেছে। পাশাপাশি সম্পূর্ণরূপে দুটি পাঁচ তারকা হোটেল এবং তিন শত ল্যান্ড ক্রুসার গাড়ি বুকিং করেছে। আর এগুলো আবার পাকিস্তানের এয়ারস্পেস, ট্র্যাফিক এবং ফোন যোগাযোগের ব্যাঘাতের অর্থনৈতিক খরচ ব্যতিত হিসাব।
কে এই এমবিএস যাকে এরকম ঢের খরচ ও বিঘ্ন ঘটিয়ে স্বাগত জানানোর জন্য উপযুক্ত মনে করে সরকার?! এমবিএস হচ্ছে জামাল খাশুগজির খুনী, যে পাকিস্তান সফর করছে তার আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা ভেঙ্গে দেয়ার উদ্দেশ্যে, যাতে তিনি ভালভাবে বাজওয়া-ইমরান এর প্রভু, আমেরিকার সেবা করতে পারেন। ইয়েমেনের নৃশংস সৌদি সামরিক হস্তক্ষেপের কারিগর এই এমবিএস, মুসলিমদের বিশুদ্ধ রক্ত ঝরিয়ে, পৃথিবীর চার প্রান্তে এর জনগণকে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছে এই এমবিএস। ‘ভিশন ২০৩০’ এর প্রকৌশলী এই এমবিএস, যা হারামাইনের বরকতময় জমির উপর ধ্বংসাত্মক পশ্চিমা অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কবজা তৈরির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এমবিএস সেই সৌদি শাসক পরিবারের অংশ যা উম্মাহর তেল সম্পদকে দখল করে আছে, যদিও ইসলাম একে উম্মাহর সুবিধার জন্য জনসাধারণের সম্পত্তি হিসাবে ধার্য করেছে। এমবিএস সেই সৌদি ‘রাজতন্ত্রের’ ভবিষ্যত যা আল্লাহ তা’আলা যা নাযিল করেছেন তা দ্বারা শাসন করে না, যে আলেমদের কারাবন্দী ও হত্যা করে এবং মসজিদ আল-আকসার দখলদারদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। আর এমবিএস হচ্ছে অর্থনৈতিক মাফিয়ার মুখ্য ব্যক্তি, যা এখন বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগের নামে পাকিস্তানে অবস্থিত উম্মাহর সম্পদকে কুক্ষিগত করতে চায়।
হে পাকিস্তানের মুসলিমগণ! আমাদের শাসকগণ সারা মুসলিম বিশ্ব জুড়ে আমাদের জন্য একটি বোঝা। তারা আমাদের সম্পদ থেকে খরচ করার ক্ষেত্রে একইরকম, যেমন এটি তাদের পিতৃপুরুষদের উত্তরাধিকারী সম্পদ। আমাদের দ্বীন, ভূমি ও সম্পদের লঙ্ঘন সত্ত্বেও ঔপনিবেশিক স্বার্থকে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তারা এক। আসুন আমরা আর আমাদের সম্পদ লুণ্ঠন ও আমাদের জনগণের হত্যার দর্শক না হই। নিপীড়নের মুখে ধৈর্য কোনো গুনাবলী না, এটি পাপ ও মূর্খতা। আসুন আমরা দৃঢ়তার সাথে নবুয়্যতের আদলের খিলাফত এর সমর্থকদের সাথে কাজ করি যাতে যুলুমের শাসনের চুড়ান্ত এক পতন ঘটে। আহমদ হুজাইফা বিন ইয়ামান এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সা) হতে বর্ণনা করেন,
«ثُمَّ تَكُونُ مُلْكًا جَبْرِيَّةً فَتَكُونُ مَاشَاءَ اللَّهُ أَنْ تَكُونَ ثُمَّ يَرْفَعُهَا إِذَا شَاءَ أَنْ يَرْفَعَهَا ثُمَّ تَكُونُ خِلَافَةً عَلَى مِنْهَاجِ النُّبُوَّةِ ثُمَّ سَكَتَ»
“এরপর আসবে জবরদস্তির শাসন, তা থাকবে যতক্ষন আল্লাহ চান তা থাকুক, এরপর আল্লাহ এর পতন ঘটাবেন যখন তিনি তা চান, এরপর আসবে নবুয়্যতের আদলের খিলাফত।” এরপর তিনি চুপ থাকলেন।”