ইহুদি সত্ত্বার দখলদার সৈন্যরা গত ৩০ জানুয়ারী ফিলিস্তিনের একটি মেয়েকে দখলকৃত আল-কুদস (জেরুজালেম)-এর আল-জাইম চেকপয়েন্টে গুলি দিয়ে ঝাঝরা করে হত্যা করেছে। এই শহীদ একজন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল, যে তার মৃত্যুদণ্ডের সময় তার স্কুল ব্যাগ বহন করছিল; কথিত ছুরিকাঘাত অপারেশন চালানোর চেষ্টার অভিযোগে তাকে হত্যা করা হয়। দখলদার সৈন্যরা তাকে বাঁচাতে অ্যাম্বুলেন্স কর্মীদের কাছে নিয়ে যেতে বাধা দেয়। তাকে রক্তঝরা অবস্থায় মৃত্যুর জন্য ফেলে রাখা হয়।
অপরাধ ও গণহত্যার ধারাবাহিকতায় আরেকটি অপরাধ যুক্ত হল, যা ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে, এর যুবক পুরুষ, নারী, বৃদ্ধ ও সন্তানদের বিরুদ্ধে ইহুদি সত্তা কর্তৃক সন্ত্রাসবাদ ও নিষ্ঠুরতাকে কেবল প্রতিফলিত করে, যা তারা তাদের মিথ্যা যুক্তি এবং তাদের তৈরি মিথ্যা প্রেক্ষাপট দিয়ে ন্যায্যতা দেয়। আমরা মানবাধিকার সমর্থক, শিশু ও নারী অধিকার কর্মী কিংবা ইসলামি দেশগুলোর লাঞ্চনার শাসন থেকেও কোন আপত্তি বা উত্থান শুনতে পাইনি। শহীদ, সামাহ মুবারক, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তার প্রতি রহম করুন, ১৬ বছরের কম বয়সী ছিল এবং শুধুমাত্র তার বই আর খাতা বহন করত এবং তার হৃদয় ও আচরণে তার বিশ্বাস ও ধর্মকে বহন করত। এর ফলে সে তার মুখ থেকে নিকাব উত্তোলন করতে অস্বীকার করেছিল, যা তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করেছিল, ফলে তারা তাকে হত্যা ও মৃত্যুর জন্য রক্তপাতের যোগ্য বলে মনে করেছিল! এমনকি তারা যে ভিডিওগুলি প্রকাশ করেছে সেগুলি কেবল একটি মেয়েকে চেকপয়েন্টে প্রবেশ করতে দেখায়, এবং তারপর তারা তার কাছ থেকে কোনও অপরাধ ছাড়াই গুলি করে তবে কেবল তার নিকাব (পর্দা) না খোলার কারণে। তারা তখন দাবি করা শুরু করল যে সে তাদের মধ্যে একজনকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করেছে! কিভাবে বর্তমান অতীতের সদৃশ্য হয়, যখন তারা শহীদ হাদীল আল-হাশলমনকে হত্যা করেছিল (আল্লাহ তার উপর রহম করুন), তখনও একই কারণ, একই অবস্থা এবং একই দৃশ্যের অবতারনা হয়েছিল।
এই অপরাধটি তথাকথিত আরব লীগ কর্তৃক একটি বিবৃতি প্রদানের সাথে সংঘটিত হয়েছিল, যার মাধ্যমে এটি ১৯৪৮ সালের ফিলিস্তিনের অধিকারগুলির পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার কাউন্সিল ডাকা হয়েছিল এবং তাদের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল!! আমরা লজ্জা ও অপমানের এসব কর্তৃত্ব থেকে নিন্দা, আপত্তি, এমনকি শোক প্রকাশও দেখিনি, কিন্তু যখন একজন বসতি স্থাপনকারী বা অধিষ্ঠিত ইহুদি সৈনিককে হত্যা করা হয়, তখন এটি ইহুদীদের কাছে কে এই কৃতকর্ম সম্পাদন করেছে তাকে সোপর্দ করার আগ পর্যন্ত তা বিশ্রাম নেয় না। কত জঘন্য তাদের এই আচরন!
হে বরকতময় অঞ্চল (ফিলিস্তিন)-এর অধীবাসীগণ
কতদিন এই কর্তৃপক্ষের ব্যাপারে নীরবতা ও হতাশা থাকবে, যারা ইহুদীকে তাদের সকল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক পরিকল্পনার ব্যাপারে সহায়তা করে!! কতক্ষণ আপনি এই কর্তৃপক্ষের উপর নীরব থাকবেন, যারা কর সংগ্রহ করে কিন্তু অভিভাবকত্ব নেয় না! এটি দালাল কর্তৃপক্ষ এবং ইহুদীদের নিরাপত্তা বাহিনী! আপনার জন্য কি সঠিক সমাধান খোঁজার সময় আসে নি, যা ইহুদীদের উচ্ছেদ করবে, দেশকে মুক্ত করবে এবং সম্মান দেবে? কোন সংগঠন, কোন সম্মেলন, কোন বিবৃতি, কোন পুতুল সরকার ও বিশ্বাসঘাতক শাসক, যারা সস্তাভাবে উম্মাহর ক্ষমতা এবং সম্পদ বিক্রি করে আপনাকে উপকৃত করবে। ইসলামের দ্বারা পরিচালিত শুধুমাত্র একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র তার মালিকদের অধিকার পুনরুদ্ধার করবে এবং নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও যুবককে রক্ষা করবে। তা হচ্ছে নবুয়্যতের আদলের দ্বিতীয় খিলাফত রাশিদা (সৎকর্মপরায়ন খিলাফত), যা প্রতিটি অন্যায়কারীকে লৌহ হস্ত দ্বারা আঘাত করবে, যারা আত্মীয়তা ও মুমিনদের সাথে অঙ্গীকারকে সম্মান করে না। আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) বলেছেন:
فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُهُمْ وَيُحِبُونَهُ أَذِلَةً عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَةٍ عَلَى الكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لائِمٍ ذلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
“হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী”। (আল-মায়েদা: ৫৪)