সকল প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং হিদায়াত দিয়েছেন। দরুদ এবং সালাম পেশ করছি রাসূলুল্লাহ (সা) এর প্রতি, যাকে মহান আল্লাহ পুরো বিশ্ববাসীর নিকট রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। আরো সালাম প্রেরণ করছি তাঁর পবিত্র পরিবারের উপর, সাহাবাগণ (রা)-এর উপর এবং পরবর্তীতে যারা তাঁদের অনুসরণ করেছেন।
আজ আমরা আলোচনা করবো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে, যে বিষয়টি নিয়ে বেশিরভাগ সাধারণ মুসলিম অজ্ঞতার মধ্যে রয়েছেন। সে বিষয়টি হচ্ছে “খিলাফাহ একটি স্বতন্ত্র (Unique) শাসনব্যবস্থা”। এবং আলোচনা শেষে “গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা একটী কুফরী শাসনব্যবস্থা” নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। চেষ্টা করবো যতটুকু সহজ, সংক্ষিপ্তভাবে ও দলীল সহকারে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা যায়।
এই আলোচনার উদ্দেশ্য:
বর্তমান মুসলিম উম্মাহ ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। ধীরে ধীরে তারা ইসলাম ও রাজনৈতিক সচেতন হয়ে উঠছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকার কারণে ইসলামী শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকার কারণে এবং ইসলামী শাসনব্যবস্থা ও মানবরিচত কুফরী ব্যবস্থার মৌলিক কারণগুলো সঠিক চিহ্নিত না করার ফলে তাদের ইসলাম সম্পর্কে আন্তরিক চেষ্টা বিফলে যাচ্ছে। আমার এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, পৃথিবীতে বর্তমানে যত মানবরচিত কুফরী শাসনব্যবস্থা আছে তাঁর সাথে ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফাহ’র মৌলিক যেসব পার্থক্য আছে তা তুলে ধরে যাতে এই উম্মাহ অন্যান্য শাসনব্যবস্থা দ্বারা বিভ্রান্ত হতে না পারে।
ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফাহ’র সংজ্ঞা:
শুরুতেই আসা যাক, খিলাফাহ কাকে বলে?
“ইসলামী শাসনব্যবস্থা বলতে খিলাফাহ রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বোঝায়। যা এ মহাবিশ্বের প্রতিপালক মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কর্তৃক নির্ধারিত এবং রাষ্ট্রের প্রধান খলীফা; যিনি মুসলিমদের বায়াতের মাধ্যমে নিযুক্ত হয়ে থাকেন। এই বিষয়ে অকাট্য দলিল হচ্ছে আল্লাহ’র কিতাব, রাসূল (সা) এর সুন্নাহ এবং সাহাবাদের (রা) ইজমা (ঐক্যমত)”।
তাহলে উপরোক্ত এই সংজ্ঞা থেকে আমরা পাচ্ছি,
- এটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কর্তৃক একমাত্র নির্ধারিত শাসনব্যবস্থা।
- রাষ্ট্রের প্রধান হচ্ছে “খলীফা”
- খলীফা মুসলিমদের বাইয়াতের মাধ্যমে নিযুক্ত হয়ে থাকেন।
- খিলাফত থাকার বাধ্যবাধকতা আল্লাহ’র কিতাব, রাসূল (সা) এর সুন্নাহ ও ইজমা আস-সাহাবা (রা) দ্বারা প্রমাণিত।
সংক্ষেপে বলা যায়, খিলাফাহ শাসনব্যবস্থায় একজন খলীফা শুধুমাত্র ইসলামী শরীয়াহ(কুর’আন, সুন্নাহ, ইজমা আস-সাহাবা, ক্বিয়াস) দিয়েই শাসন করতে পারবেন। মূলতঃ এই কারণেই পৃথিবীতে যত মানবরচিত কুফরী শাসনব্যবস্থা আছে তার থেকে খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা স্বতন্ত্র। যেসব মানবরচিত ব্যবস্থার সাথে আমরা খিলাফাহ ব্যবস্থাকে গুলিয়ে ফেলি তা নিম্নে দেওয়া হল এবং তাঁদের সাথে খিলাফাহ ব্যবস্থার মৌলিক যে পার্থক্য তা আলোচনা করা হল।
- খিলাফাহ শাসন কাঠামো রাজতান্ত্রিক নয়।
- খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার অনুরূপ নয়।
- খিলাফাহ ফেডারেল রাষ্ট্রও নয়।
- খিলাফাহ প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থাও নয়।
- খিলাফাহ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও নয়।
- খিলাফাহ কোন ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়।
- খিলাফাহ কোন সর্বব্যাপারে নিয়ন্ত্রণকারী রাষ্ট্র নয়।
- খিলাফাহ মন্ত্রী-পরিষদ দ্বারা শাসিত কোন ব্যবস্থা নয়।
আসুন, সংক্ষেপে এগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।
- খিলাফাহ শাসন কাঠামো রাজতান্ত্রিক নয়:
রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় রাজা হচ্ছে সকল সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। রাজা যে সিদ্ধান্ত নিবে, সেটাই জনগণের জন্য প্রযোজ্য হয়। রাজার ছেলে রাজার মৃত্যুর পর পরবর্তী রাজা হিসেবে ক্ষমতা ভোগ করে। রাজা যেহেতু নিজেকে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে তার দরুন সে নিজে আইন প্রণেতা হিসেবে বিবেচিত হয়। এর ফলে সে নিজেকে সকল আইনের উর্ধে রাখে। এইভাবে তিনি সকল প্রকার জবাবদিহিতা থেকেও মুক্ত থাকেন, যদিও তিনি জনগণের অধিকারসমূহ প্রদান করেন না।
এখন আসা যাক, খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা এবং রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কোথায়…
খিলাফাহ | রাজতন্ত্র |
এই ব্যবস্থায় সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক থাকেন একমাত্র আল্লাহ। | এই ব্যবস্থায় সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হিসেবে রাজা বা বাদশা নিজেকে দাবি করে। |
এই শাসন ব্যবস্থায় কুর’আন, সুন্নাহ, ইজমা আস-সাহাবা এবং ক্বিয়াস দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করা হয়। | এই শাসনব্যবস্থায় বাদশা যেহেতু সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক বলে দাবি করে সেহেতু তাঁর বানানো আইন দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হয়। |
খলীফা জবাবদিহিতার উর্ধে নন। | বাদশাহ জবাবদিহিতার উর্ধে থাকেন। |
এই ব্যবস্থায় খলীফা নিয়োগের পদ্ধতি হলো জনগণের বাইয়াত। | এই ব্যবস্থায় রাজপুত্র উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতা পেয়ে থাকেন। |
খলীফা রাষ্ট্রের কোন প্রতীক নন। | এই ব্যবস্থায় বাদশাহকে জাতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। |
আশা করা যায়, এই বিষয়টি পরিষ্কার হবে যে, খিলাফাহ শাসন ব্যবস্থা আর রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা আলাদা। সুতরাং, খিলাফাহ ব্যবস্থা রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুরূপ নয়।
- খিলাফাহ ব্যবস্থা সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার অনুরূপ নয়:
সাধারণ অর্থে সাম্রাজ্যবাদ হলো সাম্রাজ্য বিস্তারের আকাঙ্খা। অপর রাজ্য গ্রাস করে রাজ্য জয় করে, সেই অঞ্চলের মানুষকে জোর করে বিদেশি শাসনাধীনে আনা এবং তাদের অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করা। যেসব রাষ্ট্র তাদের শাসন ব্যবস্থাতে সাম্রাজ্যবাদকে প্রতিস্থাপন করে, তারাই সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র।
ইতিহাসের পাতায় আলেকজান্ডার, চেংগিস খাঁ বা নেপোলিয়ান ছিল অতীতের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি শাসকের উদাহরণ। আর বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানী হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। অতীতে উক্ত ব্যক্তিদের সাম্রাজ্য বিস্তারের পিছনে ছিল বংশগত বা ব্যক্তিগত আকাঙ্খা ও উচ্চাভিলাষ। আর বর্তমানে রাষ্ট্রগুলো কর্পোরেট স্বার্থ টিকিয়ে রাখার জন্য সাম্রাজ্যবাদী হয়ে উঠে।
১৯১৮ সালে ফ্রান্সে লেনিন সাম্রাজ্যবাদকে খুব ছোট একটি সংজ্ঞায় এনেছেন,
“সাম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদের একচেটিয়া স্তর”। অর্থ্যাৎ এরা সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের মাধ্যমে পুঁজির একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এইসব রাষ্ট্রগুলো তাদের ক্ষমতাকে সুসংহত করতে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ঔপনিবেশ স্থাপন করে ক্রমাগত শোষণের মাধ্যমে কেন্দ্রকে শক্তিশালী করে। যা আমরা বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানী ইত্যাদি দেশগুলোর প্রকৃতিতে দেখতে পাই।
খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। খিলাফাহ ব্যবস্থা বিশ্বের স্থানে, বিভিন্ন বর্ণের মানুষদের শাসন করা সত্ত্বেও ইতিহাস থেকে আমরা কখনোই পাই না যে, খিলাফাহ সবসময় কেন্দ্রকে সমৃদ্ধ করেছে। যদিও পুরো রাষ্ট্রই একটি কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
খিলাফাহ রাষ্ট্রের লক্ষ্যই হচ্ছে অধীনস্থ অঞ্চলের জনগণের মাঝে সমতা তৈরি করা। রাষ্ট্রের প্রতিটি জনগণের (মুসলিম ও অমুসলিম) পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার দিয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের নাগরিক কর্তব্যও নির্ধারণ করেছে। খিলাফাহ রাষ্ট্র কখনোই তাঁর অধীনস্থ এলাকাগুলোকে ঔপনিবেশ হিসেবে দেখে না এবং এলাকাগুলো থেকে এবং এলাকাগুলো থেকে লুটপাট করে কেন্দ্রকে সমৃদ্ধ করে না। সেই অধীনস্ত এলাকাগুলো কেন্দ্র থেকে এলাকাগুলো থেকে যত দূরেই থাকুক না কেন, তারা যে বর্ণেরও থাকুক না কেন, তাদের কখনোই বিভিন্ন হিসেবে মনে করেনা। খিলাফাহ রাষ্ট্র তাঁর প্রতিটি অঞ্চলের নাগরিককে সমান গুরুত্ব এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মনে করে। খিলাফাহ’র কেন্দ্রে যে নাগরিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করে একইভাবে প্রান্তিক নাগরিকও একই সুবিধা ভোগ করে। ইতিহাস থেকে এরকম অসংখ্য উদাহরণ পেশ করা যায়।
- খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা ফেডারেল রাষ্ট্রের অনুরূপ নয়:
ফেডারেল বা প্রাদেশিক রাষ্ট্র বলতে এমন কিছু রাষ্ট্রকে বুঝায় যেখানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলসমূহ স্বায়ত্বশাসন যোগ করে এবং সাধারণ কিছু নিয়মকানুনের দিকে ঐক্যবদ্ধ থাকে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ইত্যাদি। এই সব প্রদেশ থেকে যে পরিমাণ ট্যাক্স সংগ্রহ করা হয়, যা ঐ সব প্রদেশেই উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হয়।
খিলাফাহ রাষ্ট্রে বিভিন্ন প্রদেশ থাকলেও এটা মূলতঃ প্রচলিত ফেডারেল রাষ্ট্র নয়। এটা প্রকৃতপক্ষে ঐক্যবদ্ধ একটি ব্যবস্থা। এই রাষ্ট্রে সব অঞ্চলে প্রয়োজনে তদানুসারে অর্থায়ন করা হয় এবং সে হিসেবে বার্ষিক বাজেট নির্ধারণ করা হয়। সুতরাং, এ ক্ষেত্রেও বলা যায়, খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা ফেডারেল ব্যবস্থা থেকে স্বতন্ত্র।
- খিলাফাহ কোন প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা নয়:
মূলতঃ প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা (Republican State) এর উদ্ভব হয়েছে রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ব্যর্থতা যখন জনগণের কাছে প্রকাশ হয়ে গিয়েছিল, তখন জনগণের সংগ্রাম এর মাধ্যমে বাদশাহ’র নিকট যে সার্বভৌম ক্ষমতা ছিল তা তারা নিজেরা নিয়ে নিলো। তারপর থেকেই প্রজারাই দেশের সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হলো এবং তাঁদের প্রতিনিধিরা আইন প্রণয়ন করতে লাগলো।
এখানে প্রজা বা জনগণ রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করলেও প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র তারা গঠন করে তা মৌলিকগতভাবে রাজতন্ত্রের সাথে পার্থক্য নেই। সেখানে বাদশাহ ছিল আইন প্রণেতা আর এখানে প্রজারা আইনপ্রণেতা এবং দুটো ব্যবস্থাতেই আইনের উৎস মানুষ।
খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা যে প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে স্বতন্ত্র তা নিম্নের পার্থক্য এর মাধ্যমে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলোঃ
খিলাফাহ ব্যবস্থা | প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা |
এটি আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক একমাত্র বৈধ ব্যবস্থা | এটি মানবরচিত শাসনব্যবস্থা। |
রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা তথা আইন প্রনয়ণের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা’আলার। খলীফা শুধুমাত্র একজন আল্লাহ’র প্রতিনিধি। | প্রজারাই এখানে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। তারা তাঁদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করে থাকে। |
খলীফা শুধুমাত্র আল্লাহ’র প্রতিনিধি এবিং তিনি জাতির বিশেষ কোন প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হন না। | প্রজাদের প্রতিনিধি থাকে প্রধানমন্ত্রী বা কেবিনেট সদস্য বা মন্ত্রী-উপদেষ্টা পরিষদ এবং এখানে পুর্বের রাজা বা রাণীকে নেহায়েত প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ বৃটেন। |
সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি, খিলাফাহ ব্যবস্থা একটি Unique ব্যবস্থা যার সাথে প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে কোন সাদৃশ্য নেই।
- খিলাফাহ কোন যাজকতান্ত্রিক বা মোল্লাতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়:
যাজকতান্ত্রিক বা মোল্লাতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বলতে যে শাসনব্যবস্থায় একজন ধর্মীয় গুরু থাকেন এবং তিনি তাদের ধর্মীয় কিতাব বলে রাষ্ট্রের সার্বিক ক্ষমতা ভোগ করেন। তাদের পাদ্রী বা বিশপ বলা হয়। তারা রাষ্ট্রের শাসক নির্ধারণ করতেন জনগণের মতামত ছাড়াই। তাছাড়া তারা রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণী ঠিক করতেন এবং প্রয়োজনে তাদের ধর্মীয় কিতাবকে সংশোধনী করতেন। এই ধরণের শাসনব্যবস্থা আমরা ফরাসী বিপ্লবের পূর্বে দেখতে পাই।
খিলাফাহ ব্যবস্থা কখনো যাজক বা মোল্লাতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুরূপ নয়। খিলাফাহ আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক একমাত্র বৈধ ব্যবস্থা। একজন খলীফা শুধুমাত্র আল্লাহ তা’আলার প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর কিতাব ও রাসূল (সা)-এর সুন্নাহ দিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। খলীফা কখনোই আল্লাহ’র কিতাবের বাইরে কাজ করবেন না। কিতাব সংশোধন তো প্রশ্নই আসেনা। তাছাড়া, খিলাফাহ ব্যবস্থায় এমন কোন নির্দিষ্ট আলেম বা ধর্মীয় গুরু বা আধ্যাত্মিক গুরু থাকবে না, যে শাসক নির্বাচনে বা নির্ধারণের প্যাটেন্ট পেয়ে থাকে। খলীফা নির্বাচনে পূর্ণ এখতিয়ার থাকবে জনগণের কাছে।
তাছাড়া, যাজক বা মোল্লাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ধর্মীয় গুরু বা নেতা নিজেকে সকল ভুল ও জবাবদিহিতার উপরে রাখতে চান। কারণ, তিনি ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলেই পরিচিত। কিন্তু খিলাফাহ ব্যবস্থাইয় খলীফা আল্লাহ’র প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও “আল্লাহ’র প্রতিনিধি” বা এর বিকৃত ব্যাখ্যা দান করার কোন সুযোগ থাকবে না। এইসব বিকৃত যাজক বা মোল্লাদের আল্লাহ পাক “ইলাহ” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। পবিত্র কুর’আনে আল্লাহ বলেন,
“তারা আল্লাহ’র পরিবর্তে তাদের ধর্মযাজক ও সাধুদেরকে নিজেদের ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে”। (সূরা আত-তওবা: ৩১)
কারণ এইসব ধর্মযাজকরা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করার মাধ্যমে আইন প্রণয়ন এর ক্ষমতা প্রয়োগ করতো আল্লাহ’র আইনের বিপরীতে। কিন্তু একজন খলীফা এরূপ করার কোন সুযোগই পাবেনা। কারণ,
“বস্তুত সার্বভৌমত্ব ও শাসন কর্তৃত্ব আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য নয়”। (সূরা ইউসুফ: ৪০)
“তাদের মধ্যে ফয়সালা করুন যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন তা দিয়ে”। (সূরা মায়েদা: ৪৯)
আরো এমন অসংখ্য আয়াত আছে। উপরোক্ত আয়াত থেকে স্পষ্ট রাসূল (সা)-কে আল্লাহ দুটো পদে অধিকারী করেছিলেন:
১. নবুয়্যত ও রিসালাতের পদ
২. মুমিনদের নেতার পদ
যেহেতু রাসূল (সা) এর মাধ্যমে নবুয়্যত ও রিসালাত সমাপ্ত হয়েছে, তাই এখন শুধু অবশিষ্ট আছে মুমিনদের নেতার পদ বা খলীফার পদ। যেটা সুস্পষ্ট একটী মানবীয় পদ। আর এই এই মানবীয় পদ মানুষই বহন করবে। আমাদের মনে রাখা উচিৎ, মানুষ ভুল-ভ্রান্তি বা গুনাহের উর্ধে নয়; যা আমরা খলীফাদের ইতিহাসে দেখতে পাই। সুতরাং, খিলাফাহ একটি মানবীয় রাষ্ট্র এবং খলীফাদেরকে ভুল বা জবাবদিহিতার উর্ধে রাখা যাবে না; যেভাবে যাজকতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমরা দেখেছি। সুতরাং, খিলাফাহ কিছুতেই যাজকতান্ত্রিক বা মোল্লাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অনুরূপ নয়।
- খিলাফাহ মন্ত্রী পরিষদ দ্বারা পরিচালিত কোন ব্যবস্থা নয়:
এই ধরণের শাসনব্যবস্থা মূলতঃ প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বেশি লক্ষণীয়। প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শাসঙ্কার্যে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন দায়িত্বে বিভিন্ন মন্ত্রীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। সব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মিলে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেন। কিন্তু এই ধরণের ব্যবস্থার আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অনেক বেশি পাওয়া যায়। যার ফলে জনগণের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অএঙ্ক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। যা আমরা আমাদের দেশসহ আরো অন্যান্য দেশে দেখতে পাচ্ছি।
কিন্তু খিলাফাহ ব্যবস্থা মন্ত্রী পরিষদভিত্তিক ব্যবস্থা না করে সম্মিলিতভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করবে। জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে একটী একক প্রশাসনিক কাঠামোর আওতায় নিয়ে এসে খুব সহজেই সমস্যার সমাধান করা হবে। তাছাড়া খলীফা তাঁর কাজ সহজ করার জন্য প্রতিনিধিত্বকারী সহকারী নিয়োগ দিতে পারেন।
সুতরাং, এক্ষেত্রে এটাও নিশ্চিত হওয়া গেল, খিলাফাহ ব্যবস্থা মন্ত্রী পরিষদ দ্বারা পরিচালিত কোন ব্যবস্থা নয়।
- খিলাফাহ কোন Totalitarian রাষ্ট্র নয়:
Totalitarian রাষ্ট্র বলতে এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে রাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ তার অধীনস্থ প্রতিটি ব্যক্তি, প্রতিষ্টান, দল (রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক)-কে নিজের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে চায়। তাদের উপর গোয়েন্দাবৃত্তির মাধ্যমে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বর্তমানে আমরা প্রতিটি রাষ্ট্রেই এই ব্যবস্থাকে গ্রহণ করতে দেখছি; বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ইত্যাদি দেশে Totalitarian তত্ত্ব প্রয়োগ হচ্ছে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, তারাই বরং খিলাফাহকে রাষ্ট্র বলে উম্মাহকে বিভ্রান্ত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করছে। খিলাফাহ যে আসলেই এরুপ কিনা তা আমাদের জানা দরকার। আমি সংক্ষেপে বিষয়গুলো তুলে ধরবো।
১৯৫৬ সালে দুই মার্কিন ঐতিহাসিক Carl Friedrich এবং Zbigniew Brzezinski তাদের বিখ্যাত বই Totalitarian Dictatorship and Autocracy-তে কমিউনিস্ট নাজিদের রাষ্ট্র যে Totalitarian রাষ্ট্র ছিল তাঁর কিছু ফিচার তুলে ধরেছে। যথাক্রমে,
- রাষ্ট্রের আদর্শকে সবার মাঝে চাপিয়ে দেওয়া।
- একতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল থাকতে বাধ্য করা।
- সামরিক বাহিনীতে রাষ্ট্রের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা।
- গণমাধ্যমগুলোতে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা।
- পুলিশি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। রাষ্ট্র প্রতিটি বিষয়ে তার অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রতিষ্ঠা।
সংক্ষেপে আলোচনা করলে, খিলাফাহ ব্যবস্থা কখনো তাঁর আদর্শ বা ইসলামকে অন্যদের উপর চাপিয়ে দিবেনা, অতীতেও দেয়নি। খিলাফাহ’র অভ্যন্তরে শুধু যে মুসলিম বসবাস করবে এমন কোন কথা নেই। ইসলামী শারী’আহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের আমানত হিসেবে বিবেচনা করেছে। এবং সাবধান করা হয়েছে তার খিয়ানতে না করার জন্য।
খিলাফাহ কখনো একতান্ত্রিক দল প্রতিষ্ঠা করবে না। খিলাফাহ রাষ্ট্রে অবশ্যই একাধিক ইসলামী রাজনৈতিক দল থাকতে পারবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকবে যারা মানুষকে কল্যানের দিকে (ইসলামের দিকে) আহ্বান করবে, সৎ কাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে এবং (যারা এ কাজ করবে) তারা হবে সফলকাম”। (সূরা আল ইমরানঃ ১০৪)
খিলাফাহ সেই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও করবে না। কারণ ইসলামী ব্যবস্থায় কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ থাকবে না। দলগুলো শুধু আল্লাহ সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে।
খিলাফাহ ব্যবস্থায় রাষ্ট্রে সেনাবাহিনী থাকবে এবং সেখানে আমীর-উল জিহাদ থাকবে। কিন্তু খলীফা তাঁর শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সেনাবাহিনীর ব্যবহার করতে পারবেন না।
খিলাফাহ ব্যবস্থা তার রাষ্ট্রের media বা গণব্যবস্থার প্রতি একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে না। রাষ্ট্রে সরকারি বা বেসরকারি গণমাধ্যম থাকতে পারে। বেসরকারি গণমাধ্যমকে অবশ্যই ইসলামী আক্বীদার মৌলিক নীতিমালা পূরণের শর্তে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এতে রাষ্ট্রের অনুমতির প্রয়োজন নেই, শুধু রাষ্ট্রকে অবহিত করলেই চলবে।
খিলাফাহ কখনো পুলিশি রাষ্ট্র হবে না, অতীতেও ছিল না। খিলাফাহ মূলতঃ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে সমাজে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। খলীফাহ নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য বর্তমান সরকারগুলোর মতো পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করবে না। তাছাড়া বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে যেভাবে নির্যাতন করা হয়, ইসলাম কখনোই তা অনুমোদন দেয় না। এছাড়াও বর্তমানে যেভাবে নাগরিকদের উপর গোয়েন্দাগিরি করা হয়, তা খিলাফাহ কখনোই করবে না; কারণ ইসলামে তা হারাম।
খিলাফাহ কখনোই রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপ করবে না। রাষ্ট্র শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে তাঁর অধিকার খাটাবে। তাছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যদি ইসলামী আক্বীদাহ’র সাথে সাংঘর্ষিক কিছু না করে, তাহলে রাষ্ট্র সেখানে হাত দিবে না।
সুতরাং, উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে, মার্কিন নীতিনির্ধারকদের দেওয়া Totalitarian রাষ্টের বৈশিষ্ট্য দিয়েও যদি আমরা খিলাফাহ ব্যবস্থাকে মিলিয়ে দেখি তাহলে দেখবো, খিলাফাহ অত্যন্ত স্বতন্ত্র একটি শাসনব্যবস্থা যা অন্যান্য মানবরচিত ব্যবস্থার সাথে তুলনা করা অমূলক।
- খিলাফাহ ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুরূপ নয়:
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনগণ সকল সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। এর মাধ্যমে সেই প্রতিনিধিরা সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হয়ে যায়। এরপর তারা সংসদে গিয়ে আইন প্রণয়ন করে।
সুতরাং, মৌলিকগত দিক থেকে খিলাফাহ শাসনব্যবস্থা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে থাকে। খিলাফাহ শাসন ব্যবস্থায় সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা। তাই, শরীয়ার বাইরে গিয়ে খলীফা একটি আইনও প্রণয়ন করতে পারেনা। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শাসকরা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল হিসেবে সাব্যস্ত করতে চায়, যা আমরা বর্তমানে অহরহ দেখতে পাই। সুতরাং, এই প্রেক্ষিতে বলতে গেলে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা একটি কুফরী ব্যবস্থা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,
“এবং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তদানুযায়ী যারা বিচার ফয়সালা করে না, তারাই কাফের” (সূরা আল মায়েদা: ৪৪)
“বস্তুত সার্বভৌম ও শাসন কর্তৃত্ব আল্লাহ ছাড়া আর কারো নয়”। (সূরা ইউসুফ: ৪০)
“কিন্তু না, তোমার রবের শপথ! তারা কিছুতেই মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা তাদের পারস্পরিক বিচার বিসম্বাদের ভার তোমার(হে মুহাম্মদ) উপর ন্যস্ত করে। আর তুমি যা-ই ফয়সালা করবে, সে সম্পর্কে তারা নিজেদের মনে কিছুমাত্র কুন্ঠাবোধও করবে না। বরং এর সামনে নিজদেরকে পূর্ণরূপে সোর্পদ করে দেবে”। (আন-নিসা: ৬৫)
এইরকম আরো বহু দলিল আছে যা নিশ্চিত করে যে, আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আল্লাহ তা’আলার।
এছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যক্তি স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয়, যেখানে কোন নারী বা পুরুষ হালাল হারামের প্রতি লক্ষ্য না করেই যা খুশি তাই করতে পারে। গণতন্ত্র ধর্মীয় স্বাধীনতার নামে ধর্ম ত্যাগের অধিকার প্রদান করে এবং ধর্ম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাঁধা আরোপ করে না। এছাড়া মালিকানার স্বাধীনতা মূলত ধনীকে অসৎ ও প্রতারণাপূর্ণ উপায়র দূর্বলকে শোষণ করার অধিকার দেয়। ফলে, ধণীর সম্পদ আরো বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং দরিদ্র আরো বেশি দরিদ্র হতে থাকে। গণতন্ত্র যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয় তা মূলতঃ সত্য বলাকে উৎসাহিত করেনা, বরং উম্মাহ’র পবিত্র আবেগ-অনুভূতিকে নির্মম আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করতেই ব্যবহার হয়ে থাকে।
পরিশেষে একথা বলা যায় যে, গণতন্ত্র একটি কুফরী শাসনব্যবস্থা। এটি এ কারণে নয় যে, এটি মানুষকে শাসক নির্বাচনের ক্ষমতা দেয়। কারণ এটি প্রকৃত অর্থে মূল আলোচ্য বিষয়ও নয়। বরং, এটি এ কারণে যে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তিই হলো মানুষের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা এবং স্বাধীনতা (Freedom)।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফাহ রাজতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, সাম্রাজ্যবাদী, ফেডারেল, প্রজাতান্ত্রিক, মন্ত্রী পরিষদভিত্তিক, Totalitarian রাষ্ট্র কিংবা গণতান্ত্রিক বা যাজকতান্ত্রিক কোনটিই নয়। খিলাফাহ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র একটি শাসনব্যবস্থা যা মহান আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক নির্ধারিত। সুতরাং, আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন যেন আমরা তাঁর দ্বীন ইসলামকে খিলাফাহ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জমীনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, আমীন।