খবর: গত ১৪/০৯/১৪ তারিখে রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ মিলিটারি এবং যুক্তরাষ্ট্র আর্মির প্যাসিফিক কমান্ড যৌথভাবে ৩৮তম প্যাসিফি আর্মি ম্যানেজমেন্ট সেমিনার (PAMS) এ আয়োজন করে। ৩২টি দেশের বিভিন্ন সমকালীন বিষয়ে মতবিনিময় এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে “আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ” মোকাবেলায় দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলমান কুখ্যাত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সকল দেশকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি’র প্যাসিফিক কমান্ডার জেনারেল ভিনসেন্ট ব্রুকস, যাতে সকল দেশ একমত হয়েছে।
মন্তব্য:
দক্ষিণে বিশাল বঙ্গোপসাগর থাকার ফলে অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে ধরা হয়। আন্দামান নিকোবার দ্বীপপুঞ্জে যদিওবা মার্কিনীদের বৃহৎ নৌবহরের উপস্থিতি রয়েছেম তারপরও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নিজেদের ভূ-কৌশলগত অবস্থানকে আরও সুসংহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়েছে। বিশেষ করে ২০১১ সালে ওবামা যখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকে তার পররাষ্ট্রনীতি ফোকাসের ঘোষণা দিল সেই সময় থেকেই বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত গুরুত্বও আরো বেড়ে গেছে। তখন থেকেই আমরা দেখেছি বাংলাদেশে বিভিন্ন মার্কিন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের আনাগোনা এবং যৌথ সামরিক মহড়ার আয়োজন। এছাড়াও এই অঞ্চলে মার্কিনীদের উপস্থিতিকে বৈধতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে আমেরিকার কুখ্যাত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে টেনে নেয়া হচ্ছে এবং বাংলাদেশী আইন প্রয়োগকারী ও সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরে আমেরিকার প্রভাবকে শক্তিশালী করার জন্য গত সপ্তাহে আমেরিকান নৌ-বাহিনীর দ্বারা বঙ্গোপসাগরে “ক্যারাট” (Cooperation Afloat Readiness and Training) নামক নৌমহড়া আয়োজন করা হয়েছে যাতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীও অংশগ্রহণ করেছে।
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকেই এসব যৌথ মহড়া, প্রশিক্ষণ এবং “প্যামস” এর মতো সামরিক ফোরাম সমূহের কার্যক্রমকে মূল্যায়ন করতে হবে। একমাত্র রাজনৈতিক ভাবে অজ্ঞ এবং পশ্চিমাদের দালাল ছাড়া এটা আর কারো কাছে অজানা নয় যে বিভিন্ন অনুন্নত দেশে এসব মার্কিন সহায়তা কার্যক্রমের মূল কারণ কি। এটা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয় আমেরিকা এবং তার অন্যান্য মিত্রশক্তিগুলো নিঃস্বার্থভাবে অন্যদের জন্য কল্যাণময়ী কোন কাজ করতে পারে। এসব রক্তচোষা সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহের মূল উদ্দেশ্যই হয়ে থাকে মুসলিম ভূমিগুলোকে তাদের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে খিলাফতের পুনরাবির্ভাব ঘটানো।
আমরা তাই বাংলাদেশের জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের সময় থেকে এও একইভাবে পাকিস্তানও আজ পর্যন্ত আমেরিকার সকল ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ বাস্তবায়ন করে আসছে। কিন্তু আজকে এটা পরিস্ফুটিত যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডায় শামিল হতে গিয়ে পাকিস্তান শাসকদের এই মার্কিন তাঁবেদারির খেসারত সেই দেশের সাধারণ জনগণদেরই দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশের তাঁবেদার শাসকরাও বিশ্বাসঘাতকতার সেই একই পথে হাঁটছে যার পরিণতি দেশ এবং দেশের জনগণের ধ্বংস বৈ অন্য কিছু হবে না।
এছাড়া এসব যৌথ মহড়া এবং প্রশিক্ষণের আরেকটি উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশের সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর তাদের কুফরি নেতৃত্ব কায়েম করা। তাদের কৌশল হল এসব অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে মুসলিম সেনাবাহিনীর ভেতর “ধর্মনিরপেক্ষতা” ও “পাশ্চাত্য সংস্কৃতি” নিয়ে মোহ তৈরি করা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে এসব থেকে রক্ষা করেন এবং তারা যেন পুতুল হাসিনার শৃঙ্খল ভেঙ্গে খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য নুসরাহ দান করতে পারে। একমাত্র খিলাফতই পারবে এই অঞ্চল থেকে কুফর সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে বিতাড়িত করতে।
ইমদাদুল আমিন