সালাফিবাদ ও সুফিবাদের মাঝে..

দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান সময়ে উম্মাহর মধ্যে এমন কিছু দল আছে যারা উম্মাহর মধ্যে অতীতকাল থেকে আক্বীদার শাখা, উসুল আল ফিক্বহ কিংবা ফিক্বহ নিয়ে বিদ্যমান বিভেদগুলোকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। প্রতিটি দলই বাকি দলগুলোকে বর্জন করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচারণা চালায় এবং একে অপরকে ভীষণ শত্রু মনে করে অথচ তারা ভুলে যায় আমাদের মুসলিম ভুমিগুলো শত্রুদের দখলে, উদাহরণস্বরূপ – ইসরা এবং মিরাজের ভুমি প্যালেস্টাইন। তারা ভুলে যায় মুসলিম ভূমিগুলোত প্রতিদিন রক্তে রঞ্জিত হয় সাম্রাজ্যবাদী কিংবা এদের দালাল দ্বারা কিংবা তারা ভুলে যায় ইসলামের শত্রুরা ধ্বংস করতে ব্যস্ত আমাদের দ্বীনের মূল শিক্ষা, শরীয়াহ আইন এমন কি আক্বীদার অনেক বিষয় পর্যন্তও।

সালাফি কিংবা সুফি দুই পক্ষেরই চরম্পন্থীদের কথা আমরা বাদ দিচ্ছি যারা সম্পূর্ণ ভুল পথে চলে গেছে। এ সব চরমপন্থীদের মধ্যে রয়েছে সে সব সূফি যারা ওয়াহদাতুল উজুদ অর্থাৎ আল্লাহ নিজেও সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত এ ধরনের ভ্রান্ত মতবাদে বিশ্বাসী কিংবা সে সব অতি জাহেরী (কেবল কুরআন ও হাদিসের বাহ্যিক অর্থ গ্রহণকারী) সালাফি যারা নিজেরা ছাড়া সবাইকে কাফির বলে আখ্যা দেয়। আমরা যদি আজকে শুধু মূলধারার সালাফি কিংবা সূফিদের দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখতে পাবো উভয় দলই তাদের মতের প্রতিষ্ঠাতা এবং তাদের ক্লাসিকাল স্কলারদের দেখানো পথ থেকে দূরে চলে গেছে।

আশ’আরি মতবাদ ও সূফিবাদের উল্লেখযোগ্য কিছু স্কলাররা তারা জাহেরীদের সাথে অনেক বিষয় নিয়ে মতবিরোধ করেছে কিন্তু কখনই তাদেরকে শত্রু মনে করে নি। তারা কখনই ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কাইয়্যিম কিংবা ইবনে কাছির কে ভ্রান্ত মনে করেন নি যদিও তারা ঈমানের সংজ্ঞা থেকে শুরু করে আল্লাহর সিফাত বোঝা, তাক্বলিদ করা যাবে কিনা, ক্বিয়াসের ব্যবহার এর মত বিষয়গুলোতে দ্বিমত পোষন করেছে। এমনকি তারা একে অপরকে মুতাজিলা কিংবা আল খারেজিদের মত ভ্রান্তও মনে করে নি। উল্টো বিভিন্ন বইএ তারা জাহেরি স্কলারদের যথেষ্ট সম্মান এবং তাদের রেফারেন্স ব্যবহার করেছে। এটা সত্য তারা একে অপরের সমলোচনা করেছে কিন্তু এটা আমাদের মনে রাখতে হবে সমালোচনাগুলো ছিলো জ্ঞান এবং বিচক্ষণতার দিক দিয়ে অতি উচ্চ পর্যায়ের। আমাদের সালাফে সালেহীনদের মধ্যেও এই বৈশিষ্ট পরিলক্ষিত হয়েছিলো, যেমন ইমাম শাফেঈ (রহ) ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর ইহতিহসান (আইনগত অগ্রাধিকার যা হানাফি মাজহাবে আইনগ্রহণের গৌণ মাধ্যম ধরা হয়েছে) এর নীতিমালা এর সমালোচনা করেছিলেন এবং তার মতে যারা ইহতিহসান করে তারা নিজের মনকে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মনে করে (অধ্যায়: ইবতাল উল ইসতিহসান, গ্রন্থ: কিতাবুল উম্ম)। কিন্তু তিনি কখনই ইমাম আবু হানিফাকে ভ্রান্ত মনে করেন নি, উপরন্তু তিনি তার শিক্ষক মুহাম্মদ ইবনে আল হাসান আল শায়বানি (রহ) যিনি আবু হানিফার ছাত্র ছিলেন তাকে খুব সম্মান করতেন।

একি ভাবে সালাফি স্কলাররাও আশআরি স্কলারদের অনেক সমালোচনা করেছেন বিশেষত আল্লাহর গুণ, কুরআনের সংজ্ঞা, তাকলিদ এর গ্রহণযোগ্যতা, ইমানের সংজ্ঞা এই বিষয়গুলোতে। তদুপরি তাদেরকে ভ্রান্ত কিংবা মুরতাদ মনে না করে যথাযথ সম্মান করেছেন। ইবনে তাইমিয়্যাহ বলেছেন,

“এটা ভাবার কোন অবকাশ নেই আক্বীদার বিষয়গুলোত যারা ভুল করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা জাহিল। সম্ভবত যে মুজতাহিদ ভুল করেছেন তাকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন। বিষয়টা এমনও হতে পারে তার কাছে হয়ত পর্যাপ্ত তথ্য পোছায়নি যা দ্বারা বোঝা যাবে সে ভুল।” [ইবনে তাইয়্যিমিয়াহ, মাজমু আল ফাতোয়াহ, ভলিউম ৩, পৃষ্ঠা ২৩৯-২৪০]

তিনি এটাও বলেছেন সালাফ এ সালেহরাও আক্বীদার বিষয়গুলো নিয়ে মতবিরোধ করেছেন। তিনি বলেন,

“সালাফরা আক্বীদার বেশ কিছু বিষয় নিয়ে মতবিরোধ করেছেন, কিন্তু কেউই কাউকে কাফির, ফাসেক কিংবা শয়তান নামে আখ্যায়িত করেন নি। শুরাইহ (রহ) এই আয়াত পাঠ করতে অস্বীকৃতি জানান, “আমি অবাক হই, যখন তারা বিদ্রুপ করে”, তার মতে আল্লাহ অবাক হন না। এ খবর যখন ইব্রাহিম আল নাখাই এর কাছে পৌছালো তিনি বললেন, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ শুরাইহ এর চেয়ে জ্ঞানী লোক ছিলো এবং তাকে আমরা “আমি অবাক হই” পাঠ করতে দেখেছি। আবার আয়েশা (রা) অন্যান্য সাহাবিদের সাথে রাসুলুল্লাহ (সা) এর আল্লাহকে দেখা নিয়ে মতবিরোধ হয়েছিলো। আয়েশা (রা) এর মতে যে বলবে রাসুলুল্লাহ (সা) আল্লাহ কে দেখেছিলেন বলবে সে আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা বলবে, যদিও বাকি সাহাবিরা এর সাত্থে এক মত ছিলেননা, কিন্তু কেউ কাউকে ভ্রান্ত বলে নি। আবার মৃত জীবিতদের কথা শুনতে পায় কিনা, স্বজনদের কান্নার জন্য মৃতকে শাস্তি দেয়া হয় কিনা বিষয়গুলো নিয়ে মতবিরোধ হয়েছিলো।” [ইবনে তাইমিয়্যাহ, মাজমু আল ফাতাওয়াহ, ভলিউম ৩, পৃষ্ঠা ২৩৯-২৪০]

তারা মনে মনে এ ধারণা রাখতেন যে আল্লাহ তার অনুগত বান্দাদের ক্ষমা করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, “আল্লাহ আমার উম্মাহকে সে সব অপরাধ ক্ষমা করেছেন, যা ভুলে হয়, ভুলে যাওয়ার দরুন কিংবা জবরদস্তির কারণে হয়”

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে আবুল হাসান আল-আশআরি (রহ) (মৃত্যু- ৯৩৬ খ্রীষ্টাব্দ) কিংবা জাহেরি স্কলার যেমন ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহ) (মৃত্যু- ১৩২৮ খ্রীষ্টাব্দ) যখনই আক্বীদার শাখা সম্পর্কিত কোন বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছেন তারা তা শুধুমাত্র করেছিলেন মহৎ উদ্দ্যেশে। যেমন আবুল হাসান আল-আশআরি (রহ) সচেষ্ট ছিলেন মুতাজিলা নামক ভ্রান্ত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে যারা ইসলামে অনেক বিভ্রান্তি তৈরি করছিলো। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহ) মোকাবেলা করেছেন তদানিন্তন সময়ের কিছু চরম্পন্থি সূফিদের।

সুতরাং বর্তমান সময়ে একে অপরকে শত্রু ভাবা সালাফি এবং সূফিদের উচিত হবে তাদের বিখ্যাত আলেমদের পথ অনুসরণ করা। তাদের উচিত “সৎ কাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ” এর আলোকে বর্তমান সময়ে কুফফার দ্বারা আমাদের দ্বীন, তার মূল শিক্ষা, আইন এমনকি আক্বীদার উপর বুদ্ধিবৃত্তিক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে তার দিকে অধিক মনোযোগী হওয়া। আজকে কুফফারদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মুসলিমরা আধুনিকতার নামে আল্লাহ নির্ধারিত হুদুদকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, আজকে তারা কুফফারদের সাথে মিলিত হয়ে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের ধারণাকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছে, তারা আজকে মহিলাদের খিমার (headscarf) এবং জিলবাবকে জনজীবন থেকে বিলুপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে, আজকে তারা মানবরচিত আইন সমাজে প্রণয়ন করে “আল্লাহ সার্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী” এ আক্বীদাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত সেকুলার লিবারেলিজম মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি, কখনই আক্বীদার শাখা (ফুরু আল আক্বীদা) কিংবা উসুল আল ফিক্বহের মতবিরোধগুলো নয়। সুফি এবং সালাফিদের কেউ কেউ একে অপরের সাথে নেহাৎ বিতর্কের উদ্দেশে নিজেদের মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইসলামের অনেক মূল বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে কথা বলে।

এখানে একটি বিষয় সম্পুর্ণ পরিস্কার যে, এ উভয় পক্ষের কিছু কিছু লোকদিগকে মুসলিমদের মূল বিষয়গুলোতে বিভ্রান্তি তৈরি করার উদ্দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু লোক আছেন যারা নিজেদেরকে আবুল হাসান আল-আশআরির অনুসরণকারি বলে দাবি করেন কিন্তু শরীয়ার অনেক ক্বাতঈ (নিশ্চিত) বিষয় গুলো অস্বীকার করে, ক্বাতাঈ দলিল তাদেরকেই বলা হয় যেগুলো অর্থ এবং দলিল বিশুদ্ধ। তারা চার ইমাম সহ অনেক আশআরি স্কলার যেমন কাযি ইয়াদ, আল গাজালি, ইমাম আল হারামাইন আল জুয়াইনি, আল সুয়ূতি, আন নববি, আল রাজি, ইবন হাজর আল আসকালানি যেসব বিষয়ে একমত সেসব বিষয়গুলোকে পরিত্যাগ করে।

তাদের মতে হুদুদ কায়েম যেমন চোরের হাত কাটা কিংবা অবিবাহিত জিনাকারীকে চাবুক মারা এ বিষয়গুলো সময় কিংবা স্থানভেদে পরিবর্তন হতে পারে। এ ধরনের ব্যক্তিবর্গ মাসালিহ আল মুরসালা (Public Interest), জরুরাত, দুটি মন্দের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ভালো এ ধারণাগুলোর অপব্যবহার করেন। তারা সুদ গ্রহণ কিংবা ইসলাম ছাড়া অন্য পদ্ধতিতে শাসক নির্বাচনকে বৈধ মনে করেন। অথচ আশআরি ক্লাসিকাল স্কলাররা এগুলোকে কখনো অনুমোদন দেয় নি, এ ধরনের দাবি তাদের প্রতি অপবাদ ছাড়া আর কিছুই নয়।

প্রকৃতপক্ষে মডার্নিস্ট স্কলারদের ভুল মূলত আশআরি হবার জন্য নয় বরং হালাল কে হারাম কিংবা হারামকে হালাল করার প্রবণতা। তাদের এ ধরনের হীনমন্যতা আশআরি এবং ভিন্নমত পোষণকারী সকল আলোচনাকারীর সামনে তুলে ধরা উচিত।

অনুরূপভাবে বর্তমান সালাফি আলেমরা অনৈতিকভাবে সৌদি আরবের অনৈসলামিক সরকারকে বৈধতা দিয়েছে এমনকি তাদের অনেক অনৈসলামিক কার্যক্রম যেমন আমেরিকার সাথে মৈত্রীকেও তারা জায়েজ করে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যারা এমনটি করে তারা সালাফদের অনুসরন করে না বরং সালাফের পথ থেকে সরে আসে। তাদের এ ধরনের মনোভাব সালাফি স্কলার যেমন ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইবনুল কাইয়্যিম, ইবনে কাছির, এর মতবাদের সাথে চরম বিরোধী। জাহেরি স্কলাররা শরীয়াহ আইন ছাড়া অন্য আইন দ্বারা শাসনকে কেবল নিষেধই বলেন নি বরং কুফর বলে দাবি করেছেন, ইবনে তাইমিয়্যাহর মতে,

“যে ব্যক্তি মনে করে না যে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা দ্বারা শাসন করা ফরয সে ব্যক্তি কাফের। আর যে ব্যক্তি মনে করে যে, তার নিজের মতামত দিয়ে শাসন করা বৈধ এবং আল্লাহর আইন থেকে সরে যায় এবং অনুসরণ করে না, সে ব্যক্তিও কাফের। সুতরাং সমগ্র উম্মাহর জন্য সাধারণ নিয়ম হলো, কুরআন-সুন্নাহ ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে শাসন করা বা রায় দেয়া বৈধ নয়। কোনো জ্ঞানী বা নেতার আবার শায়খ বা রাজার আদেশ মানতে জনগনকে বাধ্য করানোর অধিকার কোনো ব্যক্তিরই নেই। যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, সে ওইরূপ কোন কিছু দিয়ে বিচার করতে পারবে এবং কুরআন সুন্নাহ দিয়ে বিচার করবে না সেও কাফের।” [মিনহাজুস সুন্নাহ, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৩০-১৩২]

তাই সালাফি মডার্নিস্টদের হীনমন্যতা সালাফি এবং অন্যান্য স্কলার দ্বারা সকলের সামনে তুলে ধরা উচিত।

শুধু তাই নয় সালাফি এবং সূফি স্কলারদের উচিত তাদের সকল আইনের মূল উৎস কুরআন অনুসরণ করে তাদের কিছু পরস্পরবিরোধী কিছু বিষয় পরিবর্তন করা যেগুলো ভুল কিংবা দূর্বল হিসেবে গণ্য। তাদের উচিত তাদের মূল মতবাদে উল্লেখিত উসুল গ্রহণ করা। যেমন কিছু আশআরিদের মতে ইজতিহাদের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইজতিহাদ করা ফরজে কিফায়া। ঠিক তেমনি সালাফি মতাবলম্বিরা তাকলিদ বিষয়ে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা উচিত কারণ তাকলিদ না করাতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, যেখানে কুরআনে বলা হয়েছে, “যদি না জানো তবে জ্ঞানী লোকদের জিজ্ঞেস কর” (২১:৭)। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, “অজ্ঞানতার প্রতিকার হচ্ছে জিজ্ঞেস করা” এ ছাড়াও আরো অনেক দলীল রয়েছে। আমরা যদি নিরপেক্ষ ভাবে আমাদের মূল উৎসসমুহ যাচাই করি তাহলে আমরা দেখতে পাবো, সালাফিবাদ কিংবা সূফিবাদ, আশআরি কিংবা জাহেরি কোন মতবাদই প্রকৃত পথ নয় বরং এ দুই এর মধ্যে।

বর্তমানে আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য, ফিক্বহী কিংবা স্কলারদের ভেদাভেদ দূরে ঠেলে সেকুলার লিবারেলিজমের কুফর এর বিরুদ্ধে উম্মাহর এক হওয়া এবং আল্লাহর নির্দেশের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা, আল্লাহ বলছেন,

আর কাফেররা একে অপরের বন্ধু, তোমরাও যদি অনুরূপ না কর তাহলে জমিনে ফিতনা এবং জুলুম ছড়িয়ে পরবে” [আনফাল: ৭৩]

আমরা এমন এক সময়ে বাস করি যখন ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রবল, তাই আমাদের পুরাতন মতবিরোধ নিয়ে পরে থাকাটা আমাদের বোকামি হবে, এর থেকে কোন সমাধান আসবে না। সুনিশ্চিতভাবে ঈমানের সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্কের থেকে জীবন থেকে রাজনীতিকে আলাদা করে ফেলায় উম্মাহ যে ক্ষতির সম্মুক্ষীন হচ্ছে তা সমাধান করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। স্কলারদের আল্লাহর গুণ আক্ষরিক না রূপক এ নিয়ে হাজার হাজার ঘন্টা গবেষণায় অতিবাহিত না করে তাগুতি আইন বর্জন করে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকা উচিত। আমাদের মতবিরোধ থাকা স্বত্ত্বেও ইসলামের মূল বিশ্বাসের ভিত্তেতে এক হতে হবে যাতে কালিমা সর্বোচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারে।

আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার। [সুরা আল ইমরান: ১০৩]

আবু ইসমাঈল

Leave a Reply