বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাস

বাংলাদেশের এই ভূখন্ডে রাজনৈতিক সংগ্রাম ও আন্দোলনের এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাসকে সামনে রেখে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি ও তার সম্ভাব্য বাধাসমূহ আলোচনা করাই এই প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বিচারে এই প্রবন্ধে চারটি সময়কালকে (Period) আলাদা আলাদা ভাবে ভাগ করা হয়েছে।

১.    প্রাগৈতিহাসিক সময় থেকে ব্রিটিশদের আসার আগপর্যন্ত সময় কাল। (?….১৭৫৭)
২.    ব্রিটিশ শাসনামলে রাজনৈতিক আন্দোলন (১৭৫৭-১৯৪৭)
৩.    পাকিস্তান আমলে রাজনৈতিক সংগ্রাম। (১৯৪৮-১৯৭১)
৪.    বাংলাদেশ আমল ( ১৯৭১-২০০৭)

Pre-historical period এর আলোচনায় যাওয়ার আগে এই অঞ্চলের ভৌগলিক ও সাধারণ মানুষের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ঠ্যর একটি পর্যালোচনা প্রয়োজন। যে ভূখন্ডটাকে আজকে আমরা বাংলাদেশ বলি, গত ২ হাজার বছর বা তার অধিক কাল সময় ধরে এই অঞ্চলটি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত হয়েছে। এই অংশের আদি নাম ছিলো রাঢ় বা বঙ্গ। বঙ্গের মানুষের নৃতাত্বিক পরিচয় হলো জাতিগতভাবে এর দ্রাবিড় বা অনার্য। এই অনার্যরা হাজার হাজার বছর ধরে এই ভূখন্ডে বাস করে আসছে এবং এরাই এখানকার আদিবাসী। পরবর্তীতে ভারতীয় উপমাহাদেশে আর্যদের আগমনের (মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়া থেকে) ফলে বৃহত্তর ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ধরণ দ্রুত পাল্টাতে শুরু করে। আর্যরাই প্রথম এসে প্রতিষ্ঠানিক অর্থে হিন্দু ধর্মের প্রবর্তন ঘটায় ও জাতিভেদ প্রথার (Caste) প্রচলন করে। ভারতীয় উপমহাদেশে সেই থেকে ব্রা‏হ্মন্যবাদের শুরু। ব্রা‏হ্মনরা ধর্মীয়ভাবে ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান হয়ে ওঠার সাথে সাথে তারা উপমহাদেশের অনার্যদের উপর অত্যাচার ও শোষণ শুরু করে। দক্ষিণ ভারত ও বঙ্গে যেহেতু অধিক সংখ্যক দ্রাবিড় বা অনার্য জনগোষ্ঠীর বাস ছিলো- সেকারণে এই দুই অঞ্চলের মানুষের সাথে আর্যদের দীর্ঘ মেয়াদী লড়াই ও সংগ্রাম শুরু হয়। বঙ্গের দ্রাবিড় বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠী শুরু থেকেই লড়াকু ও সংগ্রামী জাতি হিসাবে পরিচিত ছিলো। আর্যদের এই জাতিভেদ প্রথা ও অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই বঙ্গের এই অংশের মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার চেষ্টা করেছে এবং রাজনৈতিকভাবে তাদেরকে ঠেকিয়ে রেখেছে। যে কারণে উত্তর ও পশ্চিম ভারতে ব্রা‏হ্মন্যবাদের প্রসার ঘটানো সম্ভব হলেও বঙ্গে আর্যরা কখনোই তাদের ঘাঁটি স্থাপন করতে পারেনি। এরই ধারাবাহিকতায় এক পর্যায়ে যখন এই অঞ্চলে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে তখন দলে দলে মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে ছিলো এই কারনে যে, ইসলাম এই সকল মানুষদেরকে আর্যদের আধিপত্য ও শোষণ থেকে মুক্ত করে (emancipation from all kinds of oppression) এক নতুন জীবনের সন্ধান দিয়েছিলো। যে হারে ও গতিতে এই অঞ্চলের মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে ঐতিহাসিকদের কাছে তা এক বিস্ময়কর ব্যাপার। বলা হয়ে থাকে আরব পেনুনসুল্যার (উপদ্বীপ) বাইরে পৃথিবীর আর কোথাও এত বেশী সংখ্যক মানুষ এত অল্প সময়ের মধ্যে ইসলাম গ্রহণ করেনি। বঙ্গের এই অংশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ ইসলামের পতাকা তলে সমবেত হয়েছিলো।

ইসলামকে তারা দেখেছে জাতিভেদ প্রথা ও শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার সহায়ক এক শক্তিশালী মতাদর্শ হিসাবে। যেই মতাদর্শ তাদেরকে মুক্ত করেছে অসাম্য ও ভেদাভেদ থেকে এবং পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এক পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার সাথে। এর পরবর্তী ১১শ বছরে যতবারই বিদেশী শাসন ও দেশী শোষণের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলের মুসলমান বা অমুসলিমরা লড়াই করেছে, তার বেশীভাগ সময়েই তাদেরকে সাহস ও শক্তি যুগিয়েছে ইসলামের রাজনৈতিক আদর্শ। বখতিয়ার খিলজীর বাংলা বিজয়ের মধ্য দিয়েই অত্যাচারী ব্রা‏হ্মন্যবাদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলের মানুষের রাজনৈতিক সংগ্রামের বিজয়ের শুভ সূচনা হয়েছিলো। ১৭ জন অশ্বারোহী নিয়ে রক্তপাতহীনভাবে বাংলা দখল করা ও লক্ষণ সেনের পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ব্যাপক রাজনৈতিক অর্থ বহন করে। অল্প কিছু সাহসী মানুষের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর সংগ্রামী চেতনা যে অত্যাচারী শাসকদের মসনদ তছনছ করে দিতে পারে তা পরবর্তীতে বাংলার ইতিহাসে বহুবার প্রমানিত হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনের আমল পর্যন্ত এমনকি দীর্ঘ ৮০০ বছরের মুসলিম শাসন আমলেও বহুবার এখানকার জনগণ অত্যাচারী মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে। দুঃখ জনক হলেও সত্যি মুসলমানদের এই রাজনৈতিক ইতিহাস চেপে রাখা হয়েছে প্রচলিত ইতিহাসের বই সমুহে। এমন কি অনেক সূফী সাধকের রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাসকেও ইচ্ছাকৃত ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। তার অন্যতম প্রধান উদাহরণ হলো হযরত শাহ জালাল (রহ.), যিনি কিনা মূলত এক অত্যাচারী হিন্দু রাজার বিরুদ্ধে জিহাদের কাফেলায় শরীক হয়েই এই অঞ্চলে প্রবেশ করেছিলেন। সূফীদের রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র তাদের আধ্যাত্মবাদের বিষয়টিকে পরবর্তীতে আমলে নিয়ে আসা হয়েছে মূলত ইসলামের রাজনৈতিক সংগ্রামের শক্তিকে দুর্বল করার জন্য।

ব্রিটিশদের হাতে ক্ষমতা হারানোর পর, বাংলা সহ সারা ভারতের মুসলমানদের মধ্যে এক তীব্র প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে উঠেছিলো। একটি সংখ্যালঘিষ্ট জাতি হিসাবে মুসলমানরা প্রায় ৮০০ বছর ভারত শাসন করেছে এবং ভারতের ইতিহাসের অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় এই সময়কালে ভারতীয় উপমহাদেশের অবস্থা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে অনেক বেশী উন্নত ছিলো। যে কারণে সূদুর ইউরোপ থেকে পুর্তুগীজ, ফরাসী ও ইংরেজরা একের পর এক ভারতে এসেছে সম্পদ লুন্ঠন ও দেশ দখলের উদ্দেশ্য নিয়ে। মুসলমানদের শাসনের সময়েই ভারত সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ হিসাবে অবস্থান করেছে।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকেই মুসলমানেরা এই রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ফকির বিদ্রোহ, হাজী শরীয়তুল্লাহ ও তিতুমীরের আন্দোলন সব পর্যায়েই এই অঞ্চলে মানুষ ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম করেছে এবং বহু অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ১৯২০-২১ এর খিলাফত আন্দোলন এর ইতিহাসও অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। মহাত্মা গান্ধীও এক পর্যায়ে খিলাফত আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। একদিকে মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন ও মুসলমানদের খিলাফত আন্দোলন যুগপৎভাবে বৃটিশ বিরোধী সংগ্রামের দুটি প্রধান স্তম্ভ হয়ে উঠেছিলো। হাজার হাজার বাংলাদেশের আলেম সেই সময় জেল খেটেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ও অনাহারে অর্ধাহারে মৃত্যুবরণ করেছেন। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের একটা বিশেষ পর্যায়ে এসে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব সাধারণ মানুষের হাত থেকে চলে গিয়ে আবার ব্রা‏হ্মন্যবাদী হিন্দু নেতৃবৃন্দ ও কিছু ব্রিটিশভক্ত এলিট মুসলমানদের হাতে চলে যায়। যার ধারাবাহিকতায় মুসলমাদের অন্যান্য অঞ্চলের মতোই ভারতও বিভক্ত হয়ে যায় পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি আলাদা রাষ্ট্রে।

পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরীতে সেই অঞ্চলের মানুষের ব্যাপক অবদান ছিলো, ১৯৪৭ এ এখানকার ৯৫ শতাংশ মানুষই আন্তরিকভাবে পাকিস্তান চেয়েছিলো একটি সত্যিকার অর্থে ইসলামিক ব্যবস্থার মধ্যে বসবাসের আকাঙ্খা থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এলিট শ্রেণীর পাকিস্তানী শাসকরা যেহেতু ইসলামের নাম ব্যবহার করে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের উপর ব্রিটিশদের মতো একই ধরণের ঔপনিবেশিক শাসন চাপিয়ে দিয়েছিলো, সে কারণে এই অঞ্চলের মানুষ তার প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়েছিলো এবং দুর্ভাগ্য হলো ৮০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম আন্দোলন আর সংগ্রামের নেতৃত্ব মুসলমানদের হাত থেকে সরে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষদের হাতে চলে যেতে শুরু করলো। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংগ্রামে মাওলানা ভাসানীর এর বিশাল অবদান থাকা সত্ত্বেও ধীরে ধীরে আন্দোলনের মূল নেতৃত্ব চলে গেলো ধর্মনিরপেক্ষদের হাতে। ধর্মীয় রাজনীতির বলয় থেকে বেরিয়ে মুসলিম লীগ ভেঙ্গে প্রথম তৈরী হলো আওয়ামী মুসলিম লীগ ও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ। পরবর্তী ১৫ বছরের (১৯৬০-১৯৭৫) এই অঞ্চলের আন্দোলন সংগ্রামের মূল নেতৃত্ব দান করেছে এই ধর্মনিরপেক্ষ অংশই। বাংলাদেশ রাষ্ট্র তৈরীতে আওয়ামী লীগের ও অন্যান্য বামপন্থী সংগঠনের আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাস আমাদের মোটামুটি জানা, বিশেষ করে এই আন্দোলন পর্যায়ে আদর্শবাদী বামপন্থী সংগঠন সমূহ ব্যাপকভাবে জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬ এর ৬ দফা দাবী, ৬৯ এর গণভ্যুত্থান ও ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই আন্দোলনের মূল বুদ্ধি কৌশল ও শক্তি যোগান দিয়েছে বামপন্থীরা, কিন্তু এর সুফল পুরোটাই ভোগ করেছে আওয়ামী লীগাররা।

স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস মূলতঃ আওয়ামী লীগ বিরোধিতার ইতিহাস, ১৯৭২-৭৭ সালে পর্যন্ত জাসদের অভ্যুদয় মূলতঃ বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলন ইতিহাসে এক চমকপ্রদ অধ্যায়। সবচেয়ে নূণ্যতম সময়ে একটি একক শক্তিশালী বিরোধী দলের হিসাবে জাসদের আবির্ভাব আওয়ামী বিরোধী আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এর জন্য মূল্যও দিতে হয়েছে অনেক। এই সময়কালে রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের এক ভয়াবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে ছিলো। জাসদের প্রায় ৩০,০০০ কর্মী রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়। আওয়ামী লীগের প্রায় মারা যায় ১০,০০০ কর্মী। এছাড়া সর্বহারা পার্টিরও অসংখ্য কর্মী সরকারি পুলিশ ও রক্ষী বাহিনীর হাতে নিহত হয়।

৭৫ পরবর্তী রাজনৈতিক আন্দোলনে, ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তির পাশা পাশি জাতিয়তাবাদী শক্তির আবির্ভাব ঘটে। ৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় যুগপৎ ভাবে এই দুই শক্তির অবস্থান আমরা লক্ষ্য করি। এর পাশাপাশি জামায়াতও কিছুটা আন্দোলনের দলে পরিনিত হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো এই যে, ১৯৭১ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে ধর্ম নিরপেক্ষ ও জাতিয়তাবাদী শক্তির তুলনায় ইসলামি দলগুলির উপস্থিতি একবারেই সামান্য। শুধুমাত্র কয়েকটি ইসলামি ইস্যুতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদেরকে রাজপথের আন্দোলনে দেখা গেছে। যেমন তাসলিমা নাসরীন ইস্যু, বাবরী মসজিদ ইস্যু, আওয়ামী লীগের আমলে ব্রাহ্মন বাড়িয়া ইস্যু ইত্যাদি। ২০০০ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা আশা কারি এ অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। গত ৪ বছরে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, এই অঞ্চলের আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব আবার নতুন করে ধর্ম নিরপেক্ষদের হাত থেকে সরে গিয়ে ইসলামিকদের হাতে চলে আসার পক্রিয়া শুরু হয়েছে ইনশাআল্লাহ। 

আন্দোলনের সম্ভাব্য পরিনতি হিসাবে জেল জুলুমের পর্যায় এখন আমরা অতিক্রম করছি। এই পর্যায় কত দীর্ঘস্থায়ী হবে তা হিসাব করে বলা মুশকিল। এর ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ পর্যায়ে আল্লাহ্‌’কে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে জীবন উৎসর্গের জন্যও আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ধারাবাহিকভাবে জেল-জুলুম হত্যার মধ্য দিয়ে খিলাফতের সংগ্রাম জনগেণের সংগ্রামে পরিনত হবে ইনশাআল্লাহ্‌। শুধু তত্ত্বীয় কারণে নয়, আত্মত্যাগের মাধ্যমে আন্দোলনের কর্মীরা সমাজের মধ্যে তাদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে। আন্দোলন গড়ে তোলা ও আন্দোলনের নেতৃত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার এটাই একমাত্র পরীক্ষিত রাস্তা।

সর্বশেষে একথা মনে রাখা দরকার ঐতিহাসিকভাবে এ কথা প্রমাণিত যে, এই অঞ্চলের মানুষের ইতিহাস আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস, এবং আন্দোলন সংগ্রামের জন্য সাধারন মানুষ সবসময়ই প্রস্তুত। আপোষকামী মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অরাজনৈতিক মানসিকতা যেনো আমাদের বিভ্রান্ত না করে। সমাজে পরগাছা মধ্যবিত্ত মানসিকতার অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের গুরুত্ব না দিয়ে সাধারন জনগণের রাজনৈতিক চাহিদা বা Pulse বোঝা ও সেই অনুযায়ী অন্দোলনকে চালিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। আর তা করতে পারলে ইনশাআল্লাহ ৮০০ বছর ধরে যেভাবে আমরা আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছি সেভাবে আবারও এই দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব আমাদের হাতে নিয়ে এসে এই জমিনে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে পারব ইনশাআল্লাহ্‌। আমিন

ড. শেখ তৌফিক

নভেম্বর, ২০০৭

Leave a Reply