দামেস্কের বিভিন্ন এলাকায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে নৃশংস হত্যাকান্ড বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
উম্মাহ্’র সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক আশ-শামের জনগণের সাহায্যে এগিয়ে আসার এটাই যথোপযুক্ত সময়!
এই নরঘাতক [বাশার] এবং তার চক্রান্তের সহযোগী এবং যারা উম্মাহ্’র শত্রু পূর্ব-পশ্চিমা রাষ্ট্রসমূহ কর্তৃক সরবরাহকৃত রাসায়নিক অস্ত্রের মতো বিভিন্ন মারণাস্ত্র দ্বারা আমাদেরকে হত্যা করেছে, তাদের পরাজিত করার এটাই যথোপযুক্ত সময়!
শোকার্ত মা আর শ্বাসকষ্টে কাঁতর শিশুদের কান্নার রোল এতটাই প্রবল ছিল যে, ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র ও পশ্চিমা মারণাস্ত্রের শিকার নারী-পুরুষ-শিশুর মরদেহের স্তুপে দাঁড়ানো স্বাধীনতাকামী বীর যোদ্ধাগণ এবং এক আল্লাহ্’তে বিশ্বাসী উন্নত শিরে শোক প্রকাশকারীগণের গর্জনেও তা শোনা যাচ্ছিল। বাশার এবং মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি শাসককে লানত বর্ষণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে তারা আল্লাহ্’র নিকট ফরিয়াদ জানাচ্ছে জাহান্নামের আগুনই যেন এদের শেষ ঠিকানা হয়। গওতা আশ-শামের এমনই কোন এক বীরের গর্জনে তাদের জীবন-মরণ দশার চিত্র এভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে : “আল্লাহু আকবার তোমাদের উপর হে মুসলিমদের অত্যাচারী শাসকগণ, এগুলো নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মতের লাশ – এরা ইসলামের শহীদ! আল্লাহু আকবার তোমাদের নীরবতার উপর… কোথায় মুসলিম সেনাবাহিনী?” আশ-শামের বিপ্লবে উম্মাহ্ ও তার সমর্থন কোথায়? হে মুসলিমগণ, জল্লাদদের ক্ষমতার মসনদকে কাঁপিয়ে তুলতে কখন তোমরা জেগে উঠবে, কখন সেনাবাহিনী প্রেরণ করবে?
হে ইসলামী উম্মাহ্, হে বীর ও সাহসী জনগণ, হে দ্বীন ও দ্বীনের সম্মান রক্ষাকারীগণ:
একজন কাপুরুষ তার কর্ম দ্বারা পরিচিত যা তারই মতো নীচ ও জঘন্য। সীমালঙ্ঘনকারী এই সরকার ও তার প্রধানের অবস্থা হচ্ছে ঠিক তাই, আর যে কারণে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা’র বক্তব্য অনুযায়ী শ্বিরচ্ছেদ ও অঙ্গচ্ছেদ ছাড়া তাদের প্রতি আর কোন আচরণ নাই :
((إنَّمَا جَزَاء الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُواْ أَوْ يُصَلَّبُواْ أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلافٍ أَوْ يُنفَوْا مِنَ الأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ))
“নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধ লিপ্ত হয়েছে এবং দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করেছে, তাদের শাস্তি হচ্ছে যে তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলা হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটা হচ্ছে তাদের জন্যে পার্থিব জীবনের লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে অপেক্ষা করছে কঠোর শাস্তি।” [আল-মা’য়িদা : ৩৩]
এই অহংকারী কাপুরুষ বাশার, যে তার পিতার যোগ্য উত্তরসূরী (আল্লাহ্’র লানত বর্ষিত হোক তার উপর), এবং তার পিতা রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার পর্যবেক্ষনের নামে একটি ষড়যন্ত্রমূলক আন্তর্জাতিক কমিশন গঠন করেছিল। এ কমিশনটি যেন ছিল দক্ষ পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ নয় বরং তার সবচেয়ে কার্যকরী ব্যবহার তদারকি করার একটি কমিটি! দামেস্কের বিভিন্ন এলাকাজুড়ে পরিচালিত এই হামলা নিঃসন্দেহে একজন দক্ষ ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, নজীরবিহীন নিষ্ঠুর ও ব্যাপক এই ধ্বংসযজ্ঞই তার প্রমাণ। কাফিরদের সর্দার, ভন্ড ও নিয়মতান্ত্রিক খুনি আমেরিকার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক নীতিভ্রষ্টতা ইতিমধ্যে এমনই এক পর্যায়ে পৌঁছেছে? আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ এসব অস্ত্রের আঘাতে শত শত শহীদ হয়েছে, যার অধিকাংশই শিশু যারা প্রচন্ড ব্যাথা আর যন্ত্রনায় গলাকাটা মুরগীর মতো ছটফট করছে। ইয়া আল্লাহ্, ইয়া আল্লাহ্, হে ইসলামী উম্মাহ্, আর কতকাল আপনারা এসব দেখবেন? যতক্ষন আশ-শামের বাকি জনগণকে হত্যা করা হয়? নাকি পশ্চিমা রাসায়নিক অস্ত্রের দূর্বিপাক আরব উপকূল, মিশর এবং আফ্রিকায় গিয়ে পৌঁছায়? “নিরাপদে” থাকা উম্মাহ্’র বাকি অংশের কী শুধু তখনই বোধদয় হবে যে নেঁকড়ে ইতিমধ্যে তার বিভিন্ন অংশ খেয়ে ফেলেছে? আফসোস করে তখন তারা বলবে, “হায় আমরা যদি অত্যাচারী শাসক জোটের মোকাবেলার আহ্বান শুধুমাত্র শুনতাম, অনুসরণ করতাম এবং একত্রে অবস্থান গ্রহণ করতাম!”
হে ব্যারাকে অবস্থানরত মুসলিম সেনাবাহিনী:
আল্লাহ্’র গজব নাযিল হবে যদি আপনারা আশ-শামের জনগণের জন্য এগিয়ে না আসেন এবং তাদের সমর্থন না দেন। হে ক্ষমতা ও সামর্থ্যের অধিকারী মুসলিম উম্মাহ্’র সন্তানেরা, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা’র ভয়ানক ক্রোধ ধেয়ে আসছে। যদি আপনাদের ভেতর বিন্দু পরিমাণ দায়িত্ববোধ থাকে এবং পরকালের অস্তিত্বের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস থাকে এবং এরপরও যদি আমাদের মর্যাদার উৎস এবং নিরাপত্তা দানকারী খিলাফত প্রতিষ্ঠায় আমাদের সহায়তা না করেন তাহলে দুনিয়াতে আপনারা যেমন হেয় প্রতিপন্ন হবেন এবং ঠিক তেমনি আখিরাতে পতিত হবেন ভয়াবহ আযাবে! সুতরাং এমনভাবে এগিয়ে আসুন যা আপনাদেরকে আপনাদের রবের কঠিন শাস্তি হতে রক্ষা করবে এবং যাতে আপনারা সম্মান লাভ করতে পারেন…নতুবা আপনারা আল্লাহ্, তাঁর রাসূল, তাঁর ফেরেশতা এবং জনগণের ক্রোধে নিমজ্জিত হবেন।
((وَإِنِ اسْتَنْصَرُوكُمْ فِي الدِّينِ فَعَلَيْكُمُ النَّصْر))
“এবং যদি তারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাহায্য কামনা করে, তবে অবশ্যই তোমরা সাহায্য করবে।” [আল-আনফাল : ৭২]
হিসাম আল-বাবা
১৪ শাওয়াল, ১৪৩৪ হিজরী
২১/০৮/২০১৩